যে কারণে নামাজে কাতার সোজা করতে হয়
নামাজের শাব্দিক অর্থ দোয়া, ক্ষমা প্রার্থনা, রহমত ইত্যাদি। নামাজের আরবি সালাত। পারিভাষিক ভাবে ইসলামি শরীয়ত নির্দেশিত নামাজ হলো নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে একান্ত বিশ্বাসের সঙ্গে বিশেষ প্রার্থনা বা ইবাদত। নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ।
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ। ‘বিশেষ কারণ’ ছাড়া নামাজ পড়তে হয় জামাতের সঙ্গে। জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়া উত্তম। জামাতবদ্ধভাবে এবং কাতার সোজা করে নামাজ পড়ার নির্দেশ দেওয়ার কারণ হলো, যাতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে একতা তৈরি হয়।
এ একতা বাস্তব জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই কাতার সোজা করে সম্মিলিতভাবে নামাজ পড়ার নির্দেশ বাস্তবায়ন করার জন্য ইসলামে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বলা হয়েছে, পায়ের সঙ্গে পা এবং কাঁধের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে কাতার সোজা করে নামাজ পড়তে হবে। এ ক্ষেত্রে একে অন্যের সঙ্গে মিলেমিশে দাঁড়াবে, যেন পরস্পর একই ব্যক্তি ও একই দেহে পরিণত হয়। এবং একজনের চলাচল যেন অন্য জনের ওপর প্রভাব ফেলে আর পরস্পরের মধ্যে অহংকার ও বিদ্বেষ না থাকে।
কাতার সোজা করে নামাজে দাঁড়ানো মুস্তাহাব, সুন্নাত বা ওয়াজিব; যাই হোক না কেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাতার আঁকা-বাকা করে দাঁড়ানোর ব্যাপারে বিশেষ সতর্ক করে দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত নোমান ইবনে বশির রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সারিসমূহ সোজা করতেন এমনভাবে যেন তার সাথে তিনি তীর সোজা করছেন। তিনি এরূপ করতেন যতক্ষণ না তিনি বুঝতে পারতেন যে, আমরা বিষয়টি তার নিকট হতে পুরোপুরি বুঝতে পেরেছি।
একদিন তিনি ঘর হতে বের হয়ে আসলেন এবং নামাজে দাঁড়ালেন, এমনকি তাকবিরে তাহরিমা বলতে উদ্যত হলেন, এমন সময় দেখলেন এক ব্যক্তি সারি হতে সম্মুখে সিনা বাড়িয়ে দাঁড়িয়েছে; তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহর বান্দাগণ! হয় তোমরা তোমাদের সারি সোজা করে দাঁড়াবে; নতুব আল্লাহ তাআলা তোমাদের মুখমণ্ডলসমূহে পার্থক্য সৃষ্টি করে দিবেন। (মুসলিম)
অন্য হাদিসে এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুই জনের মাঝের ফাঁক বন্ধ করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করবেন এবং এর দ্বারা তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।
সত্যিই ইসলামের প্রতিটি বিধান মানুষের কল্যাণের জন্য—আলহামদুলিল্লাহ।
আরএ/