বিমান টিকেটের বাড়তি দামে বিপাকে প্রবাসীরা
বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য রুটে চলাচলকারী এয়ারলাইন্সগুলোর বাড়তি ভাড়ায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। দুই-তিনগুণ দাম দিয়ে টিকেট কিনতে হচ্ছে এই রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের। বারবার যাত্রীদের পক্ষ থেকে টিকেটের দাম কমানোর আহ্বান জানানো হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
জানা যায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সিলেট-হিথ্রো ও ঢাকা-সিলেট-ম্যানচেস্টার রুটে সরাসরি চলাচল করে। হিথ্রো ও ম্যানচেস্টার রোডে সপ্তাহে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করে বাংলাদেশ বিমান। ফ্লাইটগুলো ফেরার সময় যুক্তরাজ্য থেকে দেশে যাত্রী নিয়ে যায়। বাংলাদেশ বিমান ছাড়াও কাতার, তুর্কি, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্স টানজিট দিয়ে যুক্তরাজ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে। যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী প্রবাসীদের অধিকাংশ মানুষ সিলেট বিভাগের হওয়ায় তারা বিমানের সরাসরি ফ্লাইটে যাতায়াত করতে পছন্দ করেন। তবে, প্রবাসীদের কাছে বিমান ভাড়া এখন আতঙ্ক হয়ে দাড়িয়েছে। করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর বাড়তি বিমান ভাড়ার কারণে পরিবার নিয়ে দেশে যাওয়ার কমে গেছে প্রবাসীদের।
এদিকে যুক্তরাজ্যে স্টুডেন্ট ভিসায় পাওয়া শিক্ষার্থীরা হিমশিম খাচ্ছেন টিকেট সংগ্রহ করতে গিয়ে।
১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে আসা তানভীর আলম পিয়াস বলেন, সব এয়ারলাইন্সের ভাড়া লাগাম ছাড়া, যে যেমন পারছে টিকেটের দাম নিচ্ছে। আমি এক টিকেট নিয়েছি ১ লাখ ৩১ হাজার টাকায়। এই টাকা আমার সেমিস্টার ফি'র অর্ধেক।
পোস্টমাউথ ভার্সিটির ছাত্রী তানজিনা জাহান নিশাত বলেন, হয়রানির আরেক বিমানের টিকেট সংগ্রহ করা। দাম করে এখন বিমানের টিকেটও কিনতে হয়। মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসে টানজিট দিয়েও টিকেটের দাম পড়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আবার অনেক সময় একই টাকায় সিলেট থেকে সরাসরি হিথ্রো আসা যায়। টিকেটের এমন বিশৃঙ্খলায় কারও নিয়ন্ত্রণ নেই।
নিরানন্দ পাল নামের এক যাত্রী বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকেট কিনতে গেলে পাওয়া যায় না, আবার আমি ম্যানচেস্টার আসার সময় দেখি আমার পাশে সিট দুইটি খালি, কোনো যাত্রী নেই। তাহলে টিকেট সংকট কেন বুঝলাম না?
রাবিহা সুলতানা নামের এক প্রবাসী বলেন, বাংলাদেশে যাবার পরিকল্পনা বাদ দিয়েছি টিকেটের দামের কারণে। আমাদের ৬ সদস্যের পরিবারের যাওয়া আসায় শুধু খরচ পড়বে ১০ লাখ টাকার উপরে। এত টাকা খরচ করে দেশে যাওয়া সম্ভব না।
লন্ডনের ট্রাভেল লিংকের সত্বাধিকারী সামী সানাউল্লাহ বলেন, গত দুই বছর কোভিডের কারণে অনেকে দেশে যেতে পারেননি, রমজানকে সামনে রেখে একই সঙ্গে যাওয়া এবং আসতে চাচ্ছেন তারা, ফলে টিকেটের সংকট ও দামটা একটু বেড়ে গেছে। বিমানের ইকোনমিক ক্লাসে টিকেট বিক্রি হয়েছে ৯০০\১২০০পাউন্ডে। যাওয়া আসার জন্য মার্চ পর্যন্ত প্রায় সব টিকেট শেষ। হয়তো ফাঁকে ফাঁকে কিছু বিজনেস ক্লাসের টিকেট বের হতে পারে। বিমান বাংলাদেশ ছাড়াও অন্য সংস্থারগুলোরও টিকেটের দাম চড়া।
জেডএকে/