বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

‘মানুষের ভেতরের শক্তিকে কখনো দুর্বলভাবে দেখবেন না’

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষ্যে ব্রিটেনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল পাঁচ বিশিষ্ট অভিবাসী বাংলাদেশীর নামে সেখানে পাঁচটি ভবনের নামকরণ করেছে। তাদের অন্যতম সমাজসেবক তাসাদ্দুক আহমেদ এমবিই। এই মানুষটি কে ছিলেন? কেমন ছিলেন?

১৯৬০ সালে, জার্মান স্ত্রী রোজমেরিকে নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মী তাসাদ্দুক আহমেদ প্রতিষ্ঠা করলেন ‘দেশের ডাক’। এটিই বাঙালিদের জন্য ব্রিটেনে প্রথম প্রকাশনা। চার বছর পর আয়-রোজগারের প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়ে এই দম্পতি প্রতিষ্ঠা করলেন ‘দি গাঙ্গেজ’। সোহোর জোরার্ড স্ট্রিটের রেস্তোরাটি তার সময়ে লন্ডনের সবচেয়ে ভালো ও নামকরা রেস্তোরাগুলোর অন্যতম ছিল। তারা তৈরি করেছিলেন ‘দি গুড ফুড গাইড’। ব্রিটিশ-বাঙালি রেস্তোরা ব্যবসায়ীদের বিশ্বখ্যাত ‘তন্দুরি ওভেন’র ভবিষ্যত গড়ে দেওয়া প্রথম দিকের ভালো রেস্তোরাগুলোর অন্যতম এটি।

‘দি গাঙ্গেজ’ পরে চলে গিয়েছিল পেডিংটনে। সেখানে এটি ছিল ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে আসা মানুষদের আলোচনার আশ্রয়স্থল। রাজনীতিবিদ, কবি ও ব্রিটিশ রাজনীতির মৌলিক পরিবর্তনের কমীরা সাম্প্রতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতেন। আর তারা বাংলাদেশের জন্য নানা পরিকল্পনা করতেন। যে দেশটির জন্ম হয়েছিল অনেক পরে-১৯৭১ সালে। তারা রেস্তোরাটিতে, ব্রিটেনের রাজধানীর সবচেয়ে ভালো এশিয়ান খাবারগুলোর কিছু খেতেন। এভাবে তাদের আলোচনাগুলো উন্নতিও লাভ করতো। এই খাবারগুলোর মেন্যু তৈরি করেছিলেন ও রেস্তোরাটি চালাতেন সমাজের ভালো করতে চাওয়া একজন মানুষ; তিনি ও তার স্ত্রী একটি পত্রিকার প্রকাশক। আকর্ষণীয়ভাবে সেসব ভাবনা, অঙ্গীকার ও আলোচনাগুলো তারা তাতে ছাপতেন। তাদের সংগঠনের অভ্যন্তরীন বুলেটিনেও তেমন আকর্ষণীয়ভাবে ছাপানো হতো।

এই সব কাজের প্রাণ যে মানুষ, তিনি ১৩ জন ভাইবোনের সবার বড়। বিরাট সেই পরিবারের বড় ছেলেটির জন্ম হয়েছিল ভারতবর্ষের আসামে; তারা মধ্যবিত্ত ছিলেন। এই ছেলেটির ভেতরে রাজনীতির প্রতি তুমুল আগ্রহের জন্ম হলো ধাপে, ধাপে, বিশ্রামহীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে। এরপর সিলেটে কলেজে পড়ার সময় তিনি ‘অল আসাম মুসলিম লীগ স্টুডেন্টস ফেডারেশন’র মহাসচিব হলেন। তাসাদ্দুক আহমেদ গণভোটে সিলেট পূর্ব পাকিস্তানে যোগ দেবার জন্য প্রচারাভিযান করেছেন। সেটিই হয়েছে। এরপর তো বাংলাদেশ নামে একটি নতুন দেশ হয়ে গেল পূর্ব পাকিস্তান।

তবে কেবল রাজনীতি নিয়ে পড়ে থাকেননি তিনি, লেখাপড়া করেছেন ভালোভাবে। গ্রাজুয়েশনের পর তাসাদ্দুক চলে এলেন রাজধানী ঢাকায়। এখানেই কর্মজীবনের শুরু হলো তার। ইংরেজি ও বাংলা সংবাদপত্রগুলোতে সাংবাদিক হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন তিনি। তবে তখন পূর্ব-পাকিস্তানের প্রধানত সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলা ভাষার মানুষরা পশ্চিম অংশের ব্যাপকভাবে উর্দু ভাষাভাষীদের কাছ থেকে নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। তাদের অধিকারগুলো উপেক্ষিত হচ্ছিল। পশ্চিম-পাকিস্তানভিত্তিক সরকার নানাভাবে তাদের বঞ্চিত করছিল। এরপর তাসাদ্দুক কমিউনিজমের দিকে চলে গেলেন। তবে তার নামে একটি গ্রেফতারি পরোয়ারা হচ্ছে জানতে পেরে ১৯৫২ সালে পালিয়ে চলে গেলেন লন্ডনে।

প্রথমে লন্ডন কাউন্টি কাউন্সিলে একজন ল্যাবরেটরি টেকনেশিয়ান হিসেবে কাজ করেছেন। তবে তার মৌলিক আগ্রহ পড়েছিল রাজনীতিতে। তাসাদ্দুক আহমেদ ‘দি পাকিস্তান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠা করেছেন সেখানে। নতুন ও কেবল শুরু হওয়া বাংলা ভাষার আন্দোলনের একজন প্রধান সংগঠক হয়ে গেলেন। জাতীয় পরিচয়ের ভিত্তি হিসেবে তিনি বিশ্বাস করতেন, ভাষা সঠিকভাবে নির্ধারণ করে দিচ্ছে এমন একটি সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ও অনুশীলন; ধর্ম নয়। বাংলা ভাষার জন্য ১৯৫২ সালের আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানের সমাপ্তি টানার পূর্ব লক্ষণ ও বাংলাদেশের উত্থানের কারণ-তার মনে হতো।

বিভিন্ন পরিকল্পনার অগ্রদূত ছিলেন তিনি। পাকিস্তান সরকার সেই দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রা এনে দেবার বিনিময়ে রপ্তানিকারকদের কমিশন দিয়েছিল। আহমেদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘অ্যাংলো-পাক এন্টারপ্রাইজেস’। যেটি লন্ডনের রান্নাঘরগুলোতে কাজ করা অভিবাসী শ্রমিকদের ও নামমাত্র মজুরিতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে বাধ্য হওয়া শ্রমিকদের অতিরিক্ত ও দীর্ঘস্থায়ী লাভ প্রদান করেছিল। পরিপূরক হিসেবে তারা যেন তাদের পরিবারগুলোর কাছে বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারেন সে ব্যবস্থাটি করেছে।

১৯৮২ সালে তার প্রিয়তমা স্ত্রী রোজমেরি মারা যান। ফলে গাঙ্গেজ বিক্রি করে দেন হতাশ ও বিষন্নতায় আক্রান্ত তাসাদ্দুক। চলে গেলেন ইস্ট এন্ডে; এটিই লন্ডনের বাংলাদেশীদের হৃদপিন্ড। এখানে তিনি বিপুল পরিমাণ সংগঠনে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন। তবে তার সবই স্বেচ্ছাসেবায়। ব্রাডে সেন্টার থেকে শুরু করে কাজ করেছেন স্পিটালফিল্ডস স্মল বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনে (এসএসবিএ)। ব্রাডে সেন্টার সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো পরিচালনা করতো আর এসএসবিএ স্থানীয় নামমাত্র শ্রমের মজুরদের কম ভাড়ায় আধুনিক বাসা-বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দিত।

এসএসবিএ’র মাধ্যমে তাসাদ্দুক আহমেদ ব্রিটেনের যুবরাজ প্রিন্স চার্লসের একজন বন্ধু হয়ে গেলেন। তারা দুজনেই ইস্ট এন্ডের উন্নয়নের বিষয়ে একই ধরণের পরিকল্পনা করেছিলেন। সেগুলো বিনিময় করেছেন তারা। বিদ্যালয়গুলো থেকে ঝড়ে পড়াদের জন্য সেখানে একটি নৈশ বিদ্যালয় ছিল। নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অল্প বয়সের প্রজন্মটির জন্য ছিল ভাষা শেখার ক্লাসগুলো আর নারীদের জন্য ছিল একটি সামাজিক শিক্ষা কেন্দ্র।

বহু শিক্ষাক্রম এবং শিক্ষায় জোর দিয়ে তাসাদ্দুক আহমেদ বাঙালিদের যেমন বাংলাদেশী সমাজ থেকে বের করে আনতে পেরেছিলেন, তেমনি বাইরের মানুষদের এই সমাজের ভেতরে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। ১৯৯৮ সালে একটি স্ট্রোক হলো তার। মস্তিস্কের এই রোগে হঠাৎ তার চৈতন্য ও চলাফেরার শক্তি লোপ পেয়েছিল। তার আগ পযন্ত তিনি তার প্রতিদিন স্পিটালফিল্ডস ঘুরে বেড়ানোর কাজটি করে গিয়েছেন। এখানে কাজ করেছেন নিজের ভেতরের অসীম অনুপ্রেরণা, আশাবাদ, মানবতা ও ভালোবাসায়।

বলেছিলেন-‘একজন মানুষের ভেতরের শক্তিকে কখনো দুর্বলভাবে দেখবেন না।’ আরেকবার বলেছেন, ‘একজন দুজনে পরিণত হন ও আপনি বেশিদিন একা থাকেন না। দুজন সাতজনে পরিণত হন ও এটি একটি দলে পরিণত হয়। সাতজন ৭০ জনে রূপ লাভ করে ও এটি একটি আন্দোলনে পরিণত হয়। ফলে আপনি যা করতে চান, তার যেকোনোকিছুই করতে পারেন।’

এত গুণের তাসাদ্দুক আহমেদ একজন রেস্তোরা ব্যবসায়ী হিসেবেও খ্যাতিমান ব্রিটেনে। তবে প্রধান পরিচয় তিনি সে দেশে বাঙালি কমিউনিটির জন্য কাজ করেছেন।

তাকে ১৯৮৯ সালে একজন এমবিই (অর্ডার অব দি ব্রিটিশ এম্পায়ার) পদকে ভূষিত করা হয়। ২০০০ সালে দি ফ্রিডম অব টাওয়ার হ্যামলেটস সম্মাননা গ্রহণ করেন।

২০০১ সালের ২ এপ্রিল মারা গিয়েছেন হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে, ৭৮ বছর বয়সে।

গার্ডিয়ান অবলম্বনে ২৫-১-২০২১।

Header Ad
Header Ad

খুলনায় ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস, বুলডোজারের আঘাতে মাটিতে মিশে গেল ‘শেখ বাড়ি’

ছবি: সংগৃহীত

খুলনার ময়লাপোতা এলাকায় ‘শেখ বাড়ি’ নামে পরিচিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র আজ (বুধবার) রাতে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের আহ্বানে বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা সেখানে জড়ো হয়ে বাড়িটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং সিটি করপোরেশনের দুটি বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এর আগে গত ৪ আগস্ট ‘শেখ বাড়ি’তে প্রথম দফায় আগুন লাগানো হয়। সেদিন বাড়িটি খালি থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর আবারও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়। একসময় যেখান থেকে খুলনা অঞ্চলের আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হতো, আজ সেটির অস্তিত্ব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো।

প্রসঙ্গত, ‘শেখ বাড়ি’ ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচার মালিকানাধীন। এ বাড়িতে তাঁর চাচাতো ভাই, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সোহেল উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন পরিবারের সদস্য বসবাস করতেন। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে এ বাড়ি দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা ছিল।

বুলডোজার চালানোর সময় ছাত্র-জনতার বিপুল উচ্ছ্বাস লক্ষ করা যায়। তাঁদের দাবি, বৈষম্যমূলক রাজনৈতিক শাসনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল এই বাড়ি, তাই এটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য।

Header Ad
Header Ad

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল নেমেছে। আজ বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে, সন্ধ্যা ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হয়। তারা স্লোগান দিতে দিতে জাদুঘরের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাঙচুর শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ জাদুঘরের বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করে।

নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার ঘোষণার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভকারীরা শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল ভাষণের বিরোধিতা করে এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

বিক্ষোভের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'লং মার্চ টু ধানমন্ডি-৩২' নামে একটি কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়, যেখানে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। তবে, বুলডোজার ছাড়াই তারা নিজ হাতে ভাঙচুর চালায়।

এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও বিক্ষোভকারীদের থামাতে ব্যর্থ হয়। বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত, যেখানে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হওয়ার আগে বসবাস করতেন।

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খুলনায় ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস, বুলডোজারের আঘাতে মাটিতে মিশে গেল ‘শেখ বাড়ি’
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ঢল, বুলডোজার ছাড়াই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা
আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব