অবৈধ ডেলিভারি রাইডার ধরতে রেইড, আতঙ্কে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
যুক্তরাজ্যে সপ্তাহ জুড়ে হোম অফিস বর্ডার ফোর্সের রেইডে অভিবাসন আইন অমান্য করে কাজ করায় ৬০জন ডেলিভারি রাইডারদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডেলিভারু, জাস্ট ইট এবং উবারইটসে কাজ করে এমন ডেলিভার রাইডার ১৬ থেকে ২২ এপ্রিলের অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা, ব্রাজিল, ইন্ডিয়া ও আলজেরিয়ান নাগরিক। এদিকে এমন অভিযানে বাংলাদেশি স্টুডেন্টদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশি স্টুডেন্টদের বড় একটি অংশ ডেলিভারি পেশায় কর্মরত আছেন যুক্তরাজ্যে।
বৃট্রিশ সংবাদপত্র গুলো জানায়, টার্গেট করে এই রেইড পরিচালনা করা হয়েছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের অপরাধের মধ্যে রয়েছে মিথ্যা ডকুমেন্টেশন দাখিল করা এবং যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে কাজ করা। রেইডে তাদের সঙ্গে থাকা অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়, ধারণা করা হচ্ছে তারা আরও অন্য কোনো অপরাধের সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৪৪ জনকে ইউকে হতে ডিপোর্টেশন এবং বাকি ১৬ জনকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হবে বলে হোম অফিস জানায়।
হোম অফিস জানিয়েছে, তারা আশা করে এইভাবে ক্র্যাক ডাউন চালালে অবৈধভাবে যারা ইউকেতে অবস্থান করছে তারা হয়তো স্বেচ্ছায় দেশত্যাগ করবে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রসচিব সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান দাবি করেন, অবৈধভাবে আসা লোকেরা এইদেশে বৈধ উপায়ে আয় রোজগার করছে না তাতে আমাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইউকেতে থাকা স্থায়ী বাসিন্দারা কাজ পাচ্ছেন না। যা আমাদের সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং স্থানীয় লোকেরা কাজের অভাববোধ করছে। অনেকে কাজ পাচ্ছে না। ক্যাশ ইন হ্যান্ড কাজ করার সুবিধা নিয়ে সস্তায় অবৈধ ইমিগ্র্যান্টরা কাজ করে যাচ্ছে। আমরা এটা বরদাস্ত করব না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী চান, আইন মেনে এই ধরনের অপব্যবহার যাতে দ্রুত রোধ করা যায়।
লন্ডনে কর্মরত এক ডেলিভারি ড্রাইভার বলেন, বাংলাদেশসহ ভারত, পাকিস্থান, আফ্রিকান স্টুডেন্টদের বড় একটি অংশ অ্যাপস ভাড়া নিয়ে ডেলিভারি পেশায় জড়িত। যার কারণে প্রকৃত ডেলিভারি পেশায় যারা আছেন, তাদের আয় রোজগার কমে গেছে। বিষয়টি নজরে আসায় রেইড শুরু করেছে হোম অফিস। এ ছাড়া, স্টুডেন্টরা জাস্ট ইট'এ ঘণ্টা হিসেবে কাজ করতে পারলেও ডেলিভারু এবং উবার ইটসে কাজ করার সুযোগ নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্টুডেন্ট জানান, স্টুডেন্টদের সর্বোচ্ছ ২০ ঘণ্টার কাজের সুযোগ থাকে। এত অল্প কাজ করে পড়ালেখার খরচ চালানো কষ্টকর। ফলে অনেকে বাধ্য হয়ে অ্যাপস ভাড়া নিয়ে ডেলিভারি রাইডারের কাজ করে। চলতি সপ্তাহে হোম অফিসের অভিযানের খবরে আমরা কিছুটা হলেও ভয়ে আছি।
লন্ডনের ব্যারিস্টার এমকিউ হাসান জানান, অবৈধ বসবাসকারীদের ধরতে রেইড শুরু করেছে হোস অফিস। এ ছাড়া যাদের কাজ করার অনুমতি নেই তারা গ্রেপ্তার হলে বিপুল অঙ্করে জরিমানার পাশাপাশি দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।
এমএমএ/