নাইজেরিয়ায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত
নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও গুরুত্বসহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৫২তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।
রবিবার (২৬ মার্চ) দিবসের প্রথমভাগে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন নাইজেরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদুর রহমান।
এরপরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে নিহত শহীদদের ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত ও দেশের অগ্রগতি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
মোনাজাত শেষে রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণীগুলো পাঠ করা হয়। বাণী পাঠের পর হাইকমিশনের অডিটোরিয়ামে দিবসের উপর একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন সন্ধ্যায় আবুজার কন্টিনেন্টাল হোটেলে নাইজেরিয়ায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধি, মন্ত্রী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাবিদ, সরকারি-বেসরকারি উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রবাসীদের জন্য স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে নাইজেরিয়ান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রাচার প্রধান কাজাউইয়েও রোগান চিরোমান। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন নাইজেরিয়া জাতীয় চেম্বার অব কর্মাসের (নাসিমা) জাতীয় প্রেসিডেন্ট, আবুজা চেম্বারের প্রেসিডেন্টসহ আবুজাস্থ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সম্প্রদায়ের নেতারা।
স্বাধীনতা দিবস অনুষ্ঠানে নাইজেরিয়ার সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ প্রধানদের পক্ষে উপ-প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ফেডারেল ক্যাপিটাল টেরিটোরির পারমানেন্ট সেক্রেটারি ও সর্বোপরি নাইজেরিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহধর্মিণী উপস্থিত ছিলেন।
হাইকমিশনার মাসুদুর রহমান তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি উল্লেখ করেন, নাইজেরিয়া ও বাংলাদেশের জনমিতি, ঐতিহ্য, উপনিবেশবাদী ইতিহাস, গণতন্ত্র, অসম্প্রদায়িকতা ও জাতীয়তাবোধভিত্তিক অনেক মিল রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ-নাইজেরিয়ার বিদ্যমান পারস্পরিক দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ডিজিটাল, নারীর ক্ষমতায়ন ও বাংলাদেশের চলমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।
গেস্ট অব অনার নাইজেরিয়ান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রচার প্রধান। লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করা হয় এবং বাংলাদেশ ও নাইজেরিয়ার সুদীর্ঘ ঐতিহাসিক কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর উল্লেখ করা হয়। তার বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, এ দুই দেশের বিদ্যমান দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর করতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিতে হবে। একইসঙ্গে তিনি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও সরকারি উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সফর ও সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং আন্তরিক পরিবেশে একযোগে দুই দেশকে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি নাইজেরিয়ার জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে ৫২তম স্বাধীনতা দিবসের অভিনন্দন জানান।
উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে হাইকমিশনার ৫২তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কেক কাটেন। অনুষ্ঠানে দেশ ও জনগণের অব্যাহত অগ্রগতি ও শান্তি কামনা করা হয়।
এসজি