নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি নারী কাউন্সিল মেম্বারের শপথ
নিউ ইয়র্ক সিটিতে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিল মেম্বার শাহানা হানিফ। এ সিটিতে কাউন্সিলের ইতিহাসে তিনিই প্রথমবারের মতো নির্বাচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী।
গত ২৮ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) পবিত্র কুরআন হাতে নিয়ে এ শপথ গ্রহণ করেছেন তিনি। গত ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ডিস্ট্রিক্ট ২৪ থেকে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন।
১৬২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের ইতিহাসে তিনিই প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুসলিম কাউন্সিলওইম্যান। আর মাত্র একদিন পর ১ জানুয়ারি থেকে তার কার্যকাল শুরু হবে। শপথ নেওয়ার সময় তার পিতা চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ, মা রেহানা বেগম, তার ক্যাম্পেইন অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। মহামারির কারণে অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল সীমিত। কর্মদিবসের প্রতি ঘণ্টায় একজন করে কাউন্সিল মেম্বার শপথ নিয়েছেন।
শপথের পর সিটি হলের কর্মকর্তারা সিটি কাউন্সিলের অধিবেশন কক্ষে তার নির্ধারিত আসন দেখিয়ে দেন। এর আগে তাকে প্রয়োজনীয় বেশকিছু কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে হয়। উল্লেখ্য সিটি কাউন্সিল মেম্বার হিসেবে শাহানা হানিফ বার্ষিক ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ ডলার সম্মানীসহ আনুষঙ্গিক সুবিধাদি লাভ করবেন।
উল্লেখ্য গত জুন মাসে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে নির্বাচিত হওয়ার পরই সিটি কাউন্সিলে তার ইতিহাস সৃষ্টির সূচনা ঘটে, যা গত ২ নভেম্বর মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয়। নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের তিন প্রজন্মের অভিবাসনে মূলধারার রাজনীতিতে প্রথম সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে শাহানা হানিফের বিজয়। শাহানা হানিফ সিটি কাউন্সিলে ব্রুকলিনের ৩৯ ডিস্ট্রিক্টের প্রতিনিধিত্ব করবেন সিটি কাউন্সিলে।
ডেমোক্র্যাট দলের প্রাইমারিতে সাতজন প্রার্থীকে মোকাবেলা করে শাহানা হানিফ বিজয়ী হলে সাধারণ নির্বাচনে তার বিজয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রথম মুসলমান এবং প্রথম বাংলাদেশি আমেরিকান হিসেবে তার বিজয়কে সমর্থকদের বিজয় হিসেবে তিনি দেখেছেন। সমর্থন দিয়ে পাশে থাকার জন্য তিনি বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।
নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীদের বিভিন্ন কাজে আরও বেশি করে এগিয়ে যাওয়াকে বেগবান করতে চান শাহানা হানিফ। ব্রুকলিনের মিশ্র জনগোষ্ঠীর এলাকায় শাহানা হানিফ কর্মজীবীসহ সর্বস্তরের লোকজনের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন। তরুণ বয়স থেকেই একজন নাগরিক সংগঠক হিসেবে শাহানা হানিফ পরিচিত হয়ে উঠেন নিজের নির্বাচনি এলাকায়। বিভিন্ন নাগরিক দাবি দাওয়া নিয়ে নিয়ে আন্দোলনের মাঠে তাকে দেখা গেছে সব সময়। একজন অভিবাসী পরিবারের নারী হিসেবে লক্ষ্য স্থির করে শাহানা হানিফ তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন।
শাহানার বিজয়ের মাধ্যমে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশীদের নতুন যাত্রা সূচিত হয়েছে। শাহানা হানিফের বিজয় নিয়ে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস সংবাদ পরিবেশন করে। টাইমসের প্রতিবেদনে প্রথম একজন মুসলমান নারীর নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে নির্বাচিত হওয়া নিউ ইয়র্ক সিটির ইমিগ্রান্ট কমিউনিটির ক্ষমতায়নে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করা হয়।
টিটি/