নিরাপদ প্রত্যাবর্তনই রোহিঙ্গাদের স্থায়ী সমাধান: রাবাব ফাতিমা
নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের মধ্যেই রোহিঙ্গাদের স্থায়ী সমাধান উল্লেখ করে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহায়তার জন্য রাখাইন রাজ্যে কর্মসূচি বাড়াতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৩ জুন) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এ আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, জীবন বাঁচাতে নিজভূমি থেকে রোহিঙ্গাদের পলায়নের পর পাঁচ বছর কেটে গেছে, যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বৃহৎ জোরপূর্বক নির্বাসনের ঘটনা। কিন্তু, তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের প্রতিশ্রুতি অপূর্ণই রয়ে গেছে। এ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত যায়নি। বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয়ে থাকা ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গা গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। যে সব রোহিঙ্গা মিয়ানমার ছেড়ে যেতে পারেনি তারা হয় আইডিপি ক্যাম্পে আশ্রয় পেয়েছেন অথবা জোরপূর্বক বাস্ত্তচ্যুত ও নিরাপত্তাহীনতার অব্যাহত হুমকির মধ্যে রয়েছেন।
সংকটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের মাধ্যমে এর পুনরাবৃত্তি রোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। রোহিঙ্গাদের খাদ্য, আশ্রয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা প্রদানে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে তিনি প্রত্যাবাসন উপযোগী সঠিক পরিস্থিতি সৃষ্টিতে আরও এগিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, শুধু আমাদের একক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। জোরপূর্বক বাস্ত্তচ্যুত এই জনগোষ্ঠীকে মর্যাদাপূর্ণভাবে নিজ ভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে প্রয়োজন যথোপযুক্ত পদক্ষেপ ও কর্মসূচি। আর এটাই সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত টেকসই সমাধান, যা রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিনের লালিত আকাঙ্ক্ষা।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা রোহিঙ্গা মুসলমানদের ন্যয়বিচার নিশ্চিত এবং এই ঘটনার ভবিষ্যৎ পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সব দেশকে, বিশেষ করে আঞ্চলিক দেশগুলোকে এ সংক্রান্ত চলমান জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থায় সহযোগিতা প্রদান ও তাদের প্রবেশাধিকার প্রদানে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূতের ব্রিফিংয়ের পরে সদস্য রাষ্ট্রগুলো প্রদত্ত বক্তব্যে বিশেষ দূতের প্রচেষ্টার পাশাপাশি আসিয়ানের পরিপূরক ভূমিকার প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশ সরকারের অনুকরণীয় মানবিক নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
আরএ/