যুক্তরাষ্ট্রে ফের শ্বেতাঙ্গ পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্রে আবারও শ্বেতাঙ্গ পুলিশের গুলিতে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দ্রুত সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (১৩ এপ্রিল) মিশিগান অঙ্গরাজ্যের পুলিশ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, প্যাট্রিক লিওয়া নামে এক কৃষ্ণাঙ্গের মাথায় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার গুলি করছে। তবে সেই পুলিশের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
গত ৪ এপ্রিল এই ঘটনা ঘটে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ অফিসার প্যাট্রিকের উপর চেপে বসে আছেন। দুজনের ধ্বস্তাধস্তি হচ্ছে। তারপর পুলিশ অফিসার ২৬ বছর বয়সি প্যাট্রিকের মাথায় গুলি চালান। এতে তার মৃত্যু হয়।
এর প্রতিবাদে শত শত মানুষ রাস্তায় নামেন। আবার শোনা যায় সেই ধ্বনি, ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’। পুলিশ বিভাগের বাইরে তারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাদের দাবি, ওই শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
জানা যায়, প্যাট্রিক গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন পুলিশ তাকে থামায়। পুলিশের দাবি, প্যাট্রিকের গাড়ির লাইসেন্স প্লেটে গোলমাল ছিল। তার কাছে থাকা লাইসেন্স প্লেটটি ওই গাড়ির নয়।
একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্যাট্রিক দৌড়ে পালাতে যাচ্ছিলেন। তারপর দেখা যায় তিনি রাস্তায় পড়ে যান। পুলিশ অফিসার তার উপর চেপে বসেন। দুজনের মারামারি শুরু হয়।
পুলিশ প্রধান এরিক উইনস্টর্ম বলেছেন, খুবই বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বিভাগ স্বচ্ছ্তা বজায় রাখতেই পুরো ভিডিওটি প্রকাশ করেছে।
প্যাট্রিক আসলে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর মানুষ। এরিক জানিয়েছেন, প্যাট্রিক সপরিবারে দেশ ছেড়ে আমেরিকায় পালিয়ে এসেছিলেন। কারণ, সে দেশের সহিংস পরিস্থিতিতে থাকতে চাননি তিনি। তার সামনে গোটা জীবন পড়ে ছিল।
যে পুলিশ অফিসার গুলি চালিয়েছেন, তিনি সাত বছর ধরে পুলিশ বিভাগে কাজ করছেন। তাকে সবেতন ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
আইনজীবী বেন ক্রাম্প বলেছেন, ‘ভিডিও থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, প্যাট্রিককে গুলি করে মারার প্রয়োজন ছিল না। কারণ, প্যাট্রিকের কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। সে ভয় পেয়ে গেছিল। এখানে পুলিশের সহিংসতাই প্রকাশ পাচ্ছে। ক্রাম্পও দাবি করেছেন, ওই অফিসারকে বরখাস্ত করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে।’
গত কয়েক বছরে কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে পুলিশের সহিংসতা বেড়েছে। বিশেষ করে ২০২০ সালে জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনার পর থেকে এই ধরনের সহিংসতার বহু নিদর্শন সামনে এসেছে। প্রবল প্রতিবাদও হয়েছে। কিন্তু তাও এই সহিংসতা থামছে না।
আরএ/