নিউ ইয়র্কে 'জেনোসাইড ৭১' ফাউন্ডেশনের গণহত্যা দিবস পালন
গণহত্যা দিবস পালন করেছে যুক্তরাষ্ট্রস্থ 'জেনোসাইড ৭১' ফাউন্ডেশন। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে পালন করা হয় দিবসটি। অনুষ্ঠানে শহিদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হ
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনসাল জেনালের ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, আজ সেই ভয়াল কালরাত। সেই কালরাতে সামরিক অভিযান 'অপারেশন সাচলাইট' নামে গণহত্যার নীলনকশায় নির্বিচারে বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল পাকিস্তানী হানাদার সেনাবাহিনী। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে একরাতেই হানাদাররা নির্বিচারে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল হাজার হাজার মানুষ। পঁচিশে মার্চের সেই ভয়াল কালরাতে শুরু হওয়া জেনোসাইডে যারা প্রাণ উৎসর্গ করেছিল বাঙ্গালী জাতি তাদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে।
তিনি আরও বলেন, ৫০ বছর পার হলেও এত বড় জেনোসাইড এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেনি। সরকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউ ইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের ফাস্ট সেক্রেটারী সোয়েব বলেন, ২৫ মার্চ জাতীয় জেনোসাইড দিবস। এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরু করেছিল। মানবসভ্যতার ইতিহাসে এ এক কলঙ্কিত দিন। ২০১৭ সালে বাংলদেশ জাতীয় সংসদে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসাবে দিনটি স্বীকৃতি পেয়েছে। দেশে ও বিদেশে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসাবে দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর তার বক্তব্য বলেন, আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, বাঙ্গালীর ইতিহাসে কালরাত। জাতীয় গণহত্যা দিবস। বাঙ্গালীর স্বাধীনতার ইতিহাসের নৃশংস, ভয়ঙ্কর ও বিভীষিকাময় সব ঘটনা শুরু হয়েছিল এই রাতে। দিবসটি বাঙ্গালীর মুক্তির ইতিহাসে কালরাত হিসাবে চিরজীবন রক্তের অক্ষরে লেখা থাকবে।
সভাপতি তার বক্তব্যে আরো বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনীহা ও ব্যর্থতার কারণ হতে পারে বাংলাদেশে সংঘটিত এত বড় গণহত্যা এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলেনি। ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি সেনাদের বিচার বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মহলের শক্তিশালী নজরদারি ছিল যুদ্ধাপরাধ বিচারের বিষয়ে। কিন্তু মুখ্য অপরাধীদের বিচার বন্ধ হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলের আগ্রহ কমে যায়। তাই আন্তর্জাতিক আদালতে পাকিস্থান হানাদার বাহিনীর ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ গ্রহন করলেই একাওুরে বাংলাদেশে সংঘটিত বাঙ্গালী গণহত্যা আলোর মুখ ফিরে পাবে।
অনুষ্ঠানে 'জেনোসাইড ৭১' ফাউন্ডেশন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর চৌধূরীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের প্রতিনিধি ফাস্ট সেক্রেটারী সোয়েব। বিশেষ বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রধান সম্পাদক ফজলুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবদুল মূকিত চৌধূরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আকবর রীচি, বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইমাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হাসান, আওয়ামী লীগ নেতা ফরাশত আলী, অধ্যাপক হোসনে আরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল ইসলাম, ইউএস জাসদের সাধারন সম্পাদক নূরে আলম জিকু, উওর আমেরিকা সাংস্কৃতিক জোট সভাপতি মিথুন আহমেদ।
এছাড়াও অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিউইয়ক যুব লীগ সভাপতি খন্দকার জাহিদুল ইসলাম ও সাবেক ছাএনেতা শহিদুল ইসলাম প্রমূখ। আলোচনায় সকল বক্তারাই বাংলাদেশে একাত্তরে সংঘটিত গণহত্যা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে আরও জরালো তৎপরতা চালানোর উপর জোর দেন।
কেএফ/