নিউ ইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপন
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে উদযাপন করা হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস। গত বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম কনস্যুলেটের সদস্যগণসহ সম্মিলিতভাবে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
কনসাল জেনারেল তার স্বাগত বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদান ও ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে দৃশ্যমান যেসব উন্নতি ও পরিবর্তন সাধিত হয়েছে সে বিষয়ে তিনি আলোকপাত করেন।
এর পরপরই বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করে।
জাতির পিতার বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মের উপরে নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের শাহাদাতবরণকারী অন্যান্য সদস্যসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত সমৃদ্ধি ও প্রগতির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়।
একই দিন বিকালে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ও কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরির যৌথ উদ্যোগে কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় যেখানে 'ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার' পদকপ্রাপ্ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সমর্থনকারী বাংলাদেশের বন্ধু লিয়ার লেভিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
লেভিন তার বক্তব্যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখতে পেরে সম্মানিত বোধ করেন বলে লেভিন মন্তব্য করেন। তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ পরিচালিত ‘মুক্তির গান’ চলচ্চিত্রে লেভিন এর ধারনকৃত চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করায়ও তিনি নিজেকে ধন্য মনে করেন। তিনি বাংলাদেশের জনগণের ভালবাসা ও আতিথেয়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ও কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরীর ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক বোরন। অনুষ্ঠানে ভারত, ভুটান, নেপাল ও তুরস্কের কনসাল জেনারেলসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করা হয়। এরপর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষনান্তে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। কেক কাটার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন সমাপ্ত হয়।
কেএফ/