‘নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সব কেন্দ্রে জামানত হারাবে আওয়ামী লীগ’
রাজধানীতে কফিন মিছিল ও সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ। শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকালে গণঅধিকার পরিষদের পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ থেকে কফিন মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি পল্টন মোড় ও নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে এক সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ১৪ সালে কোনো ভোট হয়নি, ১৮ তেও হয়নি। ১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ জন এমপি হয়েছে। ১৮ সালে ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে। ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ায় গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। তারা আবার ২৪ সালে একইভাবে ভোটাধিকার হরণ করতে চায়। ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছেন, খেলা হবে। কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে কিসের খেলা? আর খেলার জন্য তো নিজেরা নামছেন না। পুলিশকে জনগণের বিরুদ্ধে নামিয়ে দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের ভাইয়েরা আপনারা আবরার, আবু বক্করদের খুন করে আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রেখেছেন, নমিনেশন কিন্তু আপনারা পাচ্ছেন না। জাতীয় সংসদের ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ী। দেশকে পুলিশি রাষ্ট্র বানাবেন না। অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে বিদায় নিন। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সব কেন্দ্রে জামানত হারাবে আওয়ামী লীগ।
তিনি আরও বলেন, আজকে ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছে। কয়েকদিন আগেই এক এমপিপুত্র রাজধানীতে পুলিশকে পেটাল। এরপর পুলিশ বলল ভুল বোঝাবুঝি। তাকে ছেড়ে দিল।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, আজকে ভোট ডাকাতির ৪ বছর। বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত দিন। আজকে ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠেছে, মানুষের এই জাগরণ খুব শীঘ্রই গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিবে। মানুষের এই জাগরণে অবৈধ সরকার ভয় পেয়ে যদি দমানোর চেষ্টা করে তাহলে সরকার নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারবে। আমাদের এই আন্দোলন চলবে।
যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে আজকের এই দিনে রাতের আঁধারে জনগণের ভোট চুরি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের ভোট চুরির মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় গণঅধিকার পরিষদ অপরাপর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মতো রাজপথে থাকবে। যেকোনো মূল্যে নিরপেক্ষ সরকার এবং জনগণের ভোটাধিকার আদায়ই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
যুগ্ম সদস্য সচিব আতাউল্লাহ বলেন, ৯০ দশকে আমরা যারা জন্মগ্রহণ করেছি, বর্তমানে তরুণ, আমরা কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দেখি নাই। ৭২ এর সংবিধানে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এ সংবিধান সংস্কার করে স্থায়ী নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার করে সংসদ সদস্যদের স্বাধীন মতপ্রকাশ করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান খানের সঞ্চালনায় সমাবশে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোহরাব হোসেন, আবু হানিফ, শাকিলউজ্জামান, সাদ্দাম হোসেন, ড. মালেক ফরাজী, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুজ জাহের, সদস্য তোফাজ্জল হোসেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।
এমএইচ/এসজি