মির্জা ফখরুলের কাছে জোনায়েদ সাকির ৭ প্রস্তাব
সংলাপ আলোচনায় বিএনপির প্রতিনিধি দলের কাছে সংবিধান সংস্কারসহ ৭টি প্রস্তাব তুলে ধরেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। মঙ্গলবার ৩১ রাজধানীর হাতিরপুলে দলীয় কার্যালয়ে দলটির সঙ্গে সংলাপ করতে আসলে বিএনপির প্রতিনিধি দলের কাছে তিনি এসব প্রস্তাব দেন।
বৈঠক শেষে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘যারাই ক্ষমতায় থাকে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে এবং দেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। এই বিষয়ে সমাধান করতে গেলে বাংলাদেশের বিরাজমান যে সাংবিধানিক ক্ষমতা আছে যেটার ওপরে ভর করে বর্তমান সরকার ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। এই সাংবিধানিক ক্ষমতা কাঠামোর বদল দরকার। সেজন্য আমরা সাংবিধান সংস্কারের সুনির্দিষ্ট কতগুলো প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছি। যেমন আমরা মনে করি, নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে হবে, নিম্ন আদালতকে উচ্চ আদালতের অধিনস্থ করতে হবে সমস্ত দিক থেকে তার নিয়োগ-বদলি, পদোন্নতিসহ …। উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি করতে হবে এবং জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘন করার কোনোরকম তৎপরতা কিংবা কোনোভাবেই জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করা যাবে না।”
তিনি বলেন, ‘আমরা এরকমভাবে ৭টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। আমরা ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা, সকল সাংবিধানিক পদে সাংবিধানিক কমিশনের মধ্য দিয়ে নিয়োগ, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, নিম্ন কক্ষ ও উচ্চ কক্ষ গঠন সংসদে,প্রদেশ ব্যবস্থা সামনে নিয়ে আসা এবং সকল অগণতান্ত্রিক আইন বাতিল করা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট কিংবা আরপিও এই সমস্ত আইনগুলো যেগুলো জনগনের ওপর নিপীড়নকারী সেগুলোর বাতিল করার কথা বলেছি।
আমরা দেশে ধর্ম-বর্ণ-জাতি-ভাষা-লিঙ্গীয় পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিককের জন্য সুযোগের সমতা, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায় বিচার এবং তাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সাংবিধানিকভাবে সেই আইন সুরক্ষার প্রস্তাব করেছি। আমরা মনে করি এই সরকারের পতনের পরে ভবিষ্যত রাষ্ট্রটি কিভাবে চলবে এই বিষয়ে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গুনগত রুপান্তর বা গণতান্ত্রিক রুপান্ত, নতুন একটা গণতান্ত্রিক বন্দোবস্ত তৈরির মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে নতুন স্বপ্ন তৈরি হতে পারে।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কতগুলো মৌলিক বিষয় এদেশের রাজনীতিতে আসা প্রয়োজন যে কথাগুলো জোনায়েদ সাকি সাহেব বলেছেন। গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে হলে সংবিধানের পরিবর্তন এবং কতগুলো মৌলিক বিষয় আছে তার পরিবর্তন- আমরাও মনে করি যে, অত্যন্ত জরুরী এবং সেটা আলোচনার মাধ্যমে একটা জায়গা এসে পৌঁছাতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
এমএইচ/এএজেড