বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন নিস্ফল: হাছান মাহমুদ
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক দেশের মতো সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় থাকাকালে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। বিএনপি আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।
শুক্রবার (১৩ মে) দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে কীটতত্ত্ব সমিতির ১১তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদানের পূর্বে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রেক্ষিতে হাছান মাহমুদ বলেন, সব গণতান্ত্রিক দেশে ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কন্টিনেন্টাল ইউরোপ এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র -সেখানে কোথাও চলতি সরকার পদত্যাগ করে আরেকটি সরকার আসে না। সেভাবেই বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় থাকতেই নির্বাচন হবে।
অতীতের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, 'বিএনপি ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল, পারেনি। গণতন্ত্রের অভিযাত্রা অব্যাহত ছিল। ২০১৮ সালেও এ ধরনের কথা বলেছিল, পরে নির্বাচনী ট্রেনের পাদানিতে চড়ে নির্বাচনে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল এবং সব দলের জোট করে নির্বাচন করেছে, ফলাফল মাত্র পাঁচটি আসন- খালি কলশি বাজে বেশি। সুতরাং তাদের বলব, অনর্থক বাগাড়ম্বর না করে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন।'
'বিএনপি সরকার পতনের আন্দোলন করবে'-এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, 'সরকার পতনের আন্দোলনের কথা আমরা গত ১৩ বছর ধরেই শুনে আসছি। মির্জা আব্বাসসহ যে দলের নেতারা পুরুষ হয়েও নারীর বেশে বোরকা পরে আদালতে জামিনের জন্য হাজির হয়, যাদের ওপর তাদের নেতা-কর্মীদের আস্থা নেই, তারা কতটুকু কি করতে পারবে, তাদের শক্তি, সামর্থ্য, হিম্মত আমরাও জানি, জনগণও জানে। কিন্তু আন্দোলনের নামে তারা যদি বিশৃঙ্খলা, জ্বালাও-পোড়াও বা আগে যেভাবে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব করেছে সেটি করার অপচেষ্টা করে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।'
বিএনপির সভা-সমাবেশের অনুমতি মিলছে না-এমন অভিযোগ খণ্ডন করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, 'তারা অনেক সময়ই সভা-সমাবেশের অনুমতি নেয় না। আর সভা-সমাবেশে তারা নিজেদের মধ্যেই মারামারি-ভাংচুর করে। এতে জনগণ আতঙ্কিত হয়, আর জনগণ আতঙ্কিত হলে সরকার তো বসে থাকতে পারে না।'
পরে সম্মেলনে দেয়া বক্তৃতায় ড. হাছান মাহমুদ কৃষি জমি রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, যত্রতত্র ইমারত নির্মাণের ফলে যেন কৃষি জমি নষ্ট না হয়। কৃষিক্ষেত্রে গবেষণা আমাদের শস্য উৎপাদনকে বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে। উন্নয়নের পথে এই ধারা অব্যাহত থাকা আবশ্যক।
কীটতত্ত্ব সমিতির সভাপতি ড. সৈয়দ নূরুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমানের পরিচালনায় কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নির্মল কুমার দত্ত ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আব্দুল লতিফ কারিগরি প্রবন্ধ এবং কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
এপি/টিটি