ফখরুলকে বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দিতে বললেন ওবায়দুল কাদের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে আন্দোলন-নির্বাচনে ব্যর্থ রাজনৈতিক হিসাবে মনে করে বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দেয়ার দাবি করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এতো ব্যর্থতা নিয়ে আপনি এখনো আছেন? বঙ্গোপসাগরে গিয়ে ঝাঁপ দিচ্ছেন না কেন?
বুধবার (১১মে) সকালে বনানীর সেতু ভবনে সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বোর্ড মিটিং শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব দাবি করেছে শ্রীলংকার মতো বাংলাদেশের মন্ত্রী-এমপিদের অবস্থা হবে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেবের অবস্থাই সেটাই হবে। আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ, এরকম নেতা। সম্মেলন করে না সময়মতো নিয়মিত। এধরনের ব্যর্থ নেতারই পদত্যাগ করা উচিত এবং এদের বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দেয়া দরকার। ফখরুল সাহেবকে বলেন, এতো ব্যর্থতা নিয়ে দল করেন, আপনি এখনো আছেন? বঙ্গোপসাগরে গিয়ে ঝাঁপ দিচ্ছেন না কেন?
শ্রীলংকা পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের কিছু কিছু রাজনৈতিক দল আত্মতুষ্টিতে ভুগছে। বাংলাদেশ আর শ্রীলংকার বাস্তবতা এক নয় বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি অতীতেও নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে নানান ইস্যুতে আশ্রয় খুঁজছে। কখনো আরব বসন্তের স্বপ্ন দেখছে। আবার কখনো পরাশ্রয়ী আন্দোলনে ভর করে ক্ষমতায় যাওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখছে। তারা হেফাজতে ভর করেছে, কোটাবিরোধী আন্দোলনসহ নিরাপদ সড়ক আন্দালনেও স্বপ্ন দেখছিল। ভারতের সরকার পরিবর্তনের পর তো ফুল আর মিষ্টি নিয়ে বন্ধের দিনে দূতাবাসের দরজায় গিয়ে অপেক্ষায় ছিল। কখন ক্ষমতায় যাওয়ার বার্তা আসে।
এসব সক্ষমতাহীন মেরুদণ্ডহীন একটি ব্যর্থ রাজনৈতিক দলের সাময়িক আত্মতুষ্টিতে ভোগা ছাড়া আর কিছুই নেই বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। সয়াবিনের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাজার ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি সরকার মজুদদারে বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করছে দেশবাসী দেখতে পাচ্ছে সরকারের উদ্যোগ এবং সদিচ্ছা বলে অবহিত করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীলতা আশা করি। অবৈধ মজুদদারীতা বাজারে পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। গুটিকয়েক অতিমুনাফালোভী ব্যবসায়ীর কারণে বাজার অস্থিতিশীল হতে দিতে পারে না সরকার।
ফখরুল সাহেব বলেছেন, দলীয় সিদ্ধান্তের কথা আমি কিভাবে বলি, গত নির্বাচনের আগেও বিএনপি নিাবাচনে অংশ নেবে না বলে জোর দাবি করেছিল। শেষমেষ কি হল? ঠিকই তারা নিরাবাচনে অংশ নিয়েছে। পানি ঘোলা করে হলেও শেষ পর্যন্ত পানি তারা খেয়েছে। নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। সংসদে তারা যাবে না বলেছিল, পরে ঠিকই তারা সংসদেও গিয়েছে। শুধু ফখরুল সাহেবের এখানে দ্বিচারিতা। নির্বাচনে জিতেও তিনি তার দায়িত্ব পালনে দায়িত্বজ্ঞানহীন-কান্ডজ্ঞানহীন রাজনীতিকের পরিচয় দিয়েছেন, সংসদে অংশ না নিয়ে।
আজকে বিএনপির পক্ষ থেকে বিরোধী দলের দাবি আরও সোচ্চার করা যেত। যদি পার্লামেন্টে বিএনপির মহাসচিব উপস্থিত থাকতেন। আজকে তিনি নির্বাচনে জিতেও নিজের দলের অন্যান্য নির্বাচিতদের সংসদে পাঠিয়েছেন অথছ নিজে যাননি। কোন রহস্যজনক কারণে? সেটা জাতি আজও জানতে পারেনি।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনে ভোট গ্রহণ চায় কিন্তু নির্বাচন কমিশন বলছে তাদের সক্ষমতা নাই এসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের। কারণ নির্বাচন সম্পর্কিত সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার। এখানে আওয়ামী লীগ জোর করে কোনকিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না। তবে আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনকে গত নির্বাচনের আগে যে সংলাপ হয়েছিল, সেই সংলাপে আওয়ামী লীগ পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে, আমরা তিনশ আসনে ইভিএমে নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগ এটা দাবি করতে পারে, রাজনৈতিক দল হিসাবে। নির্বাচন কমিশন কি সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা নির্বাচন কমিশনের…।
ইভিএমে ভোট নির্বাচনটা যাতে জালিয়াতি এবং কারচুপির কোন রেশ না থাকে। নির্বাচনটা যাতে ফ্রী ফেয়ার এন্ড ক্রেডিবল ইলেকশন করা, সেটা আমরা চাই। পৃথিবীর অনেক দেশে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পরে ইভিএম চালু করেছে এবং ইভিএম পরীক্ষিত একটা আধুনিক ব্যবস্থা। এতে অসুবিধা নাই। এতে নির্বাচনে জালিয়াতি কারচুপি এইসবের কোন সুযোগ নেই বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের।
এসএম/