হাসি মুখে বাজারে যাওয়া জনগণ কান্না করে বাসায় ফেরে: মোহসীন
গণফোরাম (একাংশের) সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেছেন, হাসি মুখে বাজারে যাওয়া জনগণ কান্না করে বাসায় ফিরে আসে। এই দায়ভার কোনোভাবেই রাতের ভোটের সরকার এড়াতে পারবে না। বাজার ব্যবস্থায় জনগণকে জিম্মি করে অসহায় করে রেখেছে।
বুধবার (১১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে সয়াবিন তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের চরম ব্যর্থতা, গণতন্ত্রহীন ও সর্বগ্রাসী নৈরাজ্যের প্রতিবাদে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টি ঢাকা মহানগরের যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে হাইকোর্ট মোড় ঘুরে পল্টন মোড় হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশে করে মোস্তফা মোহসীন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদিও আপনি অন্ধকার রাতের প্রধানমন্ত্রী, জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় তবুও বলছি গণভবনেই থাকেন কখনোই বাজারে যান না? বাজারের খোঁজ খবর নেন। জনগণ দুর্ভোগ ও ভোগান্তি থেকে মুক্তি চায়। আপনার মন্ত্রীরা জনগণের কথা শুনে না, শুনে লুটেরা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কথা। মাটির পদধ্বনি শুনতে হবে, বুঝতে হবে। যারা মা ও মাটি বুঝে না তার পদধ্বনি শুনে না তাদের পতন অনিবার্য। আপনার হাতের টাকা সব শেষ, চোর বাটপারদের মাঝে টাকা আর ভাগ করে দিতে পারবেন না। এমনকি আগামীতে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারবেন কি না তা নিয়েও জনগণ সন্দিহান! বাংলাদেশ ব্যাংক সহ প্রায় সব ব্যাংক’ই লুটপাটের স্বীকার হয়েছে একটা চোরও তো ধরলেন না! তাহলে চোর সব আপনাদের ভিতরে আছে। চোরদের আপনারা অবসর দেন। চোরের আবার অবসর কিসের? চোরকে তো জেলে যেতে হয়। জনতার ঐক্য আমরা চাই, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আগামীতে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করব। সেই নির্বাচনে এই প্রধানমন্ত্রীর কোনো হস্তক্ষেপ করার সুযোগ থাকবে না।’
গণফোরাম (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান ক্ষমতাসীন ভোট ডাকাত সরকার জনগণের উপর যে অত্যাচার নিপীড়ন ও সর্বশেষ সয়াবিন তেল নিয়ে যে তেলসামাতি করেছে, এখনো করছে। আগামীদিনেও তারা নানা ভাবে জনগণের উপর শোষণের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। সারা বাংলায় আওয়াজ উঠেছে এই সরকার আর না, হাসিনা সরকার আর না। আপনারা চুপি চুপি জনগণের রক্ত ছারপোকার মত চুষে খাচ্ছেন। আমরা যে আন্দোলন শুরু করেছি সকল বিরোধী দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন বেগবান করে হাসিনা সরকারের পতন অনিবার্য করেই ঘরে ফিরব।’
বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান মো. বাবুল সরদার বলেন, ‘জনগণ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এই সরকার কোনোভাবেই জনবান্ধব সরকার নয়। তাদের অপকর্মে বঙ্গবন্ধু ছোট হচ্ছে। সয়াবিন তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে জনগণকে অতিষ্ঠ করেছেন। জনগণ এই সরকারের নাম আর মুখেও আনতে চায় না।’
এ সময় আরও রাখেন গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি এ.কে.এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, এডভোকেট মহসীন রশিদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক, তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধু, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক তাজুল ইসলাম, ছাত্র সম্পাদক মো. সানজিদ রহমান শুভ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বুলু, বাংলাদেশ পিপলস্পাটির মহাসচিব আব্দুল কাদের, কো-চেয়ারম্যান পারভীন নাসির খান ভাসানী, রফিকুল ইসলাম রন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আক্তার, রানী শেখ, গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সুজন, সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল হাবিব, দপ্তর সম্পাদক ইলিয়াস সরদার প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পিপলস্ পার্টি ঢাকা মহানগরের সভাপতি আতিকুর রহমান ও সঞ্চালনা করেন গণফোরাম ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রওশন ইয়াজদানী।
এমএইচ/এমএমএ/