ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা ভিপি নুরের
গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, আমরা জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলব। জনগণের আকাংঙ্খা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হলে গণ অধিকার পরিষদ ৩০০ আসনে নির্বাচনে অংশ নেবে। অল্প সময়ের মধ্যে গণ অধিকার পরিষদ দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে সাড়া ফেলেছে। ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু হলে গণ অধিকার পরিষদের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হবে।
শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে সদস্য ফরম উন্মোচন ও শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বিনা ভোটে নির্বাচন করে বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের বুকে একটি কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। আজ সমস্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও দেশের মানুষ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। তাই বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে গণ-আন্দোলন গড়ে তুললে সরকার ১৯৯১-এর মতো তত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা মেনে নেবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি করবে। গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সরবের কারণে সরকার এবার বিনা ভোটের নির্বাচন করতে পারবে না। আমরা মনে করি সরকারের এটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীনের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সেই স্বপ্ন আজও পূরণ হয়নি। টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকেও এ সরকার মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। দেশের জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য গণ অধিকার পরিষদ সব বিরোধী দলকে নিয়ে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন করবে।
নুর আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি মিলে পর্যায়ক্রমে ৩১ বছর ক্ষমতায় ছিল। যে স্বপ্ন ও আকাঙ্খা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেই স্বপ্ন তারা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে উন্নয়নের কথা বলে দেশকে খাদের কিনারায় নিয়ে গেছে। খাদ্যদ্রব্য সহ জিনিসপত্রের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সামনে রোজায় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ তৈরি হবে।
তিনি তিস্তা নদীর পানি চুক্তি প্রসঙ্গে বলেন, রংপুর একটি পিছিয়ে পড়া অঞ্চল। এখানে তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। দুঃখজনক যে, বর্তমান সরকারের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক থাকলেও ১৪ বছরে তিস্তা চুক্তি সম্পাদন করতে পারেনি। ভারতীয়রা আমাকে বলে তোমাদের সরকার বর্ডার কিলিং ও তিস্তা চুক্তি নিয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে জোরালো তৎপরতা চালায় না। এ নিয়ে সরকার ব্যর্থ রাজনৈতিকরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক হানিফ খান সজিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, যুগ্ম আহ্বায়ক কর্নেল মিয়া মসিউর রহমান, ইসহাক সিদ্দিকী, বিপ্লব কুমার পোদ্দার, মাহফুজার রহমান, সহকারী সদস্য সচিব মাসুদ মোন্নাফ, ইব্রাহিম খোকন।
পরে সদস্য ফরম উন্মোচন এবং শীতবস্ত্র বিতরণ করেন ভিপি নুর।
/এএস