লুটেরাদের বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে হবে: ইনু
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, একাত্তরের পরাজিত চিরশত্রু জামায়াত-বিএনপি বর্জন ও পরাজিত করার রাজনৈতিক সংগ্রামের সঙ্গে সমানতালেই জনগণের দৈনন্দিন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর করা, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক অযৌক্তিক ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে বাজার সিন্ডিকেট দমন, দুর্নীতিবাজ, চাটার দল, লুটেরা, দলবাজী, ক্ষমতাবাজী বন্ধ, বৈষম্যের অবসান করতে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে হবে। সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে ফেনী শহরের গ্র্যান্ড সুলতান কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ইনু বলেন, বাঙালি, বাংলা, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যতদিন রাজনীতির মাঠে থাকবে ততদিন দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, সংঘর্ষ, সংঘাত, অশান্তির অবসান হবে না। বাংলা, বাঙালি, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি, দেশের চিরশত্রুদের রাজনৈতিকভাবে পরাজিত, দমন, ধ্বংস করেই রাজনীতি ও সমাজে স্থায়ী শান্তি অর্জন করতে হবে। এটা শেখ হাসিনার একার ক্ষমতায় থাকার বিষয় না, সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়েই দেশের চিরশত্রু পাকিস্তানপন্থার রাজনীতির ধারক-বাহক বিএনপি-জামায়াতসহ ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক, জঙ্গীবাদী, উগ্রবাদী শক্তিকে বর্জন ও ধ্বংস করার দায়িত্ব নিতে হবে। সমগ্র জাতিকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাংলাদেশ আফিগানিস্তান-পাকিস্তানের মতো তালেবানি পথে যাবে, ধর্মের নামে সংঘাত, সংঘর্ষ, অশান্তি, খুনাখুনি, রক্তারক্তির পথে যাবে নাকি শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের পথে যাবে।
তিনি বলেন, দেশের রাজনীতিতে বর্তমান অস্থিরতা, সংঘাত, সংঘর্ষ নতুন নয়। এটা ৫২, ৭১, ৭৫ এর পুরাতন বিরোধেরই বহিঃপ্রকাশ। স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রান্ত হলেও এই বিরোধের সমাধান ও মীমাংসা হয়নি। ৫২ ও ৭১ এর মীমাংসিত বিষয়গুলো অমীমাংসিত করা, ঐতিহাসিক সত্যকে অস্বীকার করার রাজনীতিই এই বিরোধের মূল কারণ।
তিনি আরও বলেন, ৫২ ও ৭১ বিরোধী, বাংলা, বাঙালি, বাংলাদেশ, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পাকিস্তানপন্থার রাজনীতি রাষ্ট্র, রাজনীতি, সমাজে চাপিয়ে দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করে বিরোধের রাজনীতিকে স্থায়ী রূপ দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতসহ ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক, জঙ্গীবাদী, উগ্রবাদী শক্তিগুলো এই বিরোধের রাজনীতির ধারক ও বাহক। এরা বাঙালির আত্মপরিচয়, ভাষা, সংস্কৃতি, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংবিধান মানে না। এরা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা ও রাজাকার, আলবদর, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পক্ষে সাফাই গায়। এরা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক ধারাকে নিশ্চিহ্ন করতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, দেশের চিরশত্রু, জাতির চিরশত্রু, নারীর চিরশত্রু ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক, উগ্রবাদী, জঙ্গীবাদী মোকাবিলার ঐক্য ও জোটের রাজনীতির পাশাপাশি জাসদের নিজস্ব রাজনীতি আছে।
তিনি আরও বলেন, জাসদের রাজনীতি হচ্ছে বৈষম্যের অবসান করা, দেশের সম্পদ বিলিবণ্টনে, বাজেটের বিলিবণ্টনে দেশের অর্থ সম্পদ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বঞ্চিত, অসহায়, নিরুপায়, কর্মহীন, আয়হীন নারী পুরুষদের হাতে পৌঁছে দেওয়া। আমাদের জাতীয় অর্থনীতির যে সক্ষমতা আছে, জাতীয় বাজেটের যে আকার তাতে দেশের অর্থসম্পদ সঠিক ও দুর্নীতিমুক্তভাবে বিলিবণ্টন হলে এই বঞ্চিত অবহেলিত মানুষদের মানবিক জীবনে টেনে তোলা সম্ভব। সেটা করার জন্য সমাজতন্ত্রকে সংবিধানের ছাপার অক্ষরও দুই মলাটের মধ্যে বন্দী সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক পরিকল্পনা নীতি ও বাজেট প্রণয়নের নীতির ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। তাই জাসদ রাজপথে ও সংসদে সমাজতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার আছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নুরুল আকতার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী, মির্জা মো. আনোয়ারুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুন্নবী ও জসিম উদ্দিন বাবুল প্রমুখ।
এসজি