বিএনপির কোনো লজ্জা নেই, মুহূর্তেই অতীত ভুলে যায়: বাহাউদ্দিন নাছিম
বিএনপির কোনো লজ্জা নেই, তারা অতীত মুহূর্তের মধ্যে ভুলে যায়। মিথ্যাচারই তাদের একমাত্র রাজনীতি, এটাই তাদের নীতি। তারা বিদ্যুৎ সাশ্রয় নীতিকে বিদ্যুৎ সংকট বলে প্রচার করে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, যতদিন ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ চলবে ততদিন আমাদেরকে কমবেশি সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এটা আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো সংকট নয়। এটা শেখ হাসিনা সরকারের কোনো সংকট নয়। এটা আজ বিশ্ব সংকট। এই সংকট সারা বিশ্বকে নানা সমস্যার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে পল্লবী থানা আওয়ামী লীগ এবং এর আওতাধীন ২, ৩, ৫, ৬, ৯১ নম্বর ওয়ার্ড সমূহের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশে কোনো সংকট নেই। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা ভাব চলছে। সারাবিশ্বের সংকটের কারণে সকলেই সাশ্রয়ী হচ্ছে। আমাদের সরকারও সাশ্রয় নীতি গ্রহণ করেছে। যাতেকরে ভবিষ্যতে কোনো সংকট সৃষ্টি না হয়। আজকে বিএনপি-জামাত দেশে অপপ্রচার করছে, তাদের কোরাস সংগীত গাইছে। তাদের লক্ষ্য হলো যদি বাংলাদেশে সংকট সৃষ্টি করা যায়, যদি দেশ সংকটে পড়ে তাহলে বিএনপি জামাতিরা অনেক বেশি খুশি হতো।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আজকে যাদের পায়ের তলায় মাটি নেই যারা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে, যাদের দলের প্রধান একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী, যাদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মুচলেকা দিয়ে দেশের বাহিরে চলে গিয়ে অন্য দেশের নাগরিক হয়েছে, যারা রাজনীতিতে না পেয়ে অপরাজনীতি করে মিথ্যাচার করছে তাদের মুখপাত্র হয়েই মির্জা সাহেব, গয়েশ্বর ও রিজভীরা প্রতিদিন দেশের সংকট হয়েছে বলে মিথ্যাচার করছে। তাদের একটাই লক্ষ্য দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করা। তারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দেশে একটা সংকট তৈরী করার চেষ্টা করছে। বিএনপি দেশের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার জন্য আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করছে।
তিনি বলেন, আজকে যারা বিদ্যুৎ নাই নাই বলে বক্তৃতা দেয়, হারিকেন ল্যাম্প নিয়ে ঘুরে তাদের আমলে ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়নি। ২০ হাজার কোটি টাকা টাকা তখন লুটপাট করেছে। তাদের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আনারুল তালুকদার প্রক্যাশে বলেছে সেটা ভূলে যাওয়ার কথা না। ৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল, কিন্তু এর পর বিএনপি জামাত ক্ষমতায় আসার পর সেটা সাড়ে ৩ হাজারে নেমে এসেছিল। তারা একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করে আসার এক ঘণ্টার মধ্যেই সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, এটি ছিল জাতীয় লজ্জার বিষয়। সেই দুর্নীতিবাজরা যারা বিদ্যুতের সাপ্লাই পূরণ করতে না পেরে খাম্বা দিয়েছিল, হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে তারা এখন হারিকেন নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাশ্রয়ী নীতির কারণে দৈনিক এক থেকে দুই ঘন্টা পরীক্ষামুলকভাবে লোডশেডিং হচ্ছে, যাতে করে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের দেশ কোন সংকটে না পড়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে সকল উন্নতদেশ এ ব্যবস্থা নিয়েছে। সকল কিছুর মূল ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ। যুদ্ধবাজদের কারণে বিশ্বের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এ সংকট মোকাবিলার জন্য আমরা আগে থেকেই সাশ্রয়ী পথে হাঁটছি। যাতে বাংলাদেশের মানুষ কোনো সংকটে না পড়ে এজন্যই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করেছেন। এটা দোষের কিছু নয়।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আপনারা কোনদিনও খুশি হতে পারবেন না। কারণ, বাংলাদেশে কোনো সংকট নেই। আইডিবি, এডিবি থেকে আরম্ভ করে বিশ্বের অর্থনীতির যারা তারা পরীক্ষা করে বারবার বলছে যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংকটে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। অথচ আপনারা মুখ দিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করে বলে বেড়াচ্ছেন দেশে নাকি বিদ্যুতের অভাব দেখা দিয়েছে বিদ্যুতের সংকট হয়েছে। আপনারা যতই মিথ্যাচার করেন দেশের মানুষ আর আপনাদের বিশ্বাস করে না। মিথ্যা কথা দিয়ে বেশিদিন টিকে থাকা যায় না, মিথ্যা বলার অভ্যাস পরিত্যাগ করুন। তা না হলে রাজনীতির মাঠ থেকে আপনাদের চির বিদায় নেওয়ার সময় হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসেন। তাই তিনি দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি এখন ধ্বংস হওয়ার পর তারা নানা নীতি গ্রহণ করছে। আর আমাদের কোনো সংকট না থাকার পরও আমরা সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করছি। শেখ হাসিনা মানুষের কথা চিন্তা করে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। দেশের একজন মানুষের কোনো ক্ষতি হোক এটি প্রধানমন্ত্রী চান না। আমাদের নেত্রী সাহসী, তিনি সব সময় সময় উপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত নেন।
ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ও পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার সভাপতিত্বে সম্মেলন উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর উওর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উওর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম কান্নান কচি। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উওর আওয়ামী লীগের সহস্রাধিক নেতারা।
এসএম/এমএমএ/