অর্থ পাচার নিয়ে বিএনপির মুখে কোন কথা মানায় না: তথ্যমন্ত্রী
যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও তার ভাই অর্থ পাচারের দায়ে আদালতে দন্ডিত, যাদের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কালো টাকা সাদা করেছেন, যাদের আমলে দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়, তাদের মুখে অর্থ পাচার নিয়ে কথা মানায় না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (১৬ মে) শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটি আয়োজিত ”ঐতিহাসিক ১৭ই মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনঃ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুন:প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রে উত্তোলন এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “পিকে হালদার ধরা পড়ার পর বিএনপি নেতারা অর্থ পাচার নিয়ে নানা কথা বলছেন। অথচ যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অর্থ পাচারের বিষয়ে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দেয়, তার ভাইয়ের অর্থ পাচার সিঙ্গাপুরে উদঘাটিত হয় এবং সেই অর্থ ফেরত আনা হয়। দুর্নীতির কারণে তারা তো বিশ্বচোর ছাড়া কিছু নয় এবং বয়সে আমার জ্যেষ্ঠ ফখরুল সাহেবের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই আমি অপ্রিয় হলেও সত্য একটি কথা বলতে চাই, তিনি সেই বিশ্বচোরের মুখপাত্র।”
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা এই ধরণের অর্থ পাচার করেছে, আমরা সেগুলো উদঘাটন করছি। তাদেরকে আইনের আওতায় আনছি এবং সেই কারণেই পিকে হালদার ধরা পড়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং তার ভাই ছাড়াও আরো কারা অর্থ পাচার করেছে আমাদের জানা আছে। আস্তে আস্তে সেগুলোও আপনারা জানতে পারবেন। আমরা সেগুলো উদঘাটন করছি। শেখ হাসিনা সেগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন এবং এটি অব্যাহত থাকবে।’
শ্রীলংকার উদাহরণ দেওয়াকে বিএনপির অনর্থক অপপ্রচার বর্ণনা করে সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘শ্রীলংকার উদাহরণ বাংলাদেশকে দিয়ে লাভ নেই। যে দেশ নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করে, যে দেশ শ্রীলংকাকে দুইশ’ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেয় এবং ফেরত দিতে পারছে না বিধায় ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আমরা বাড়িয়ে দিয়েছি, সেই দেশ, সেই সরকারকে এই উদাহরণ দেয়া অনর্থক এবং অপপ্রচার।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের কথা বলে বিএনপি সারাদেশে সমাবেশের নামে নিজেরাই মারামারি করে। আমরা এখনো মাঠে নামি নাই, যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হয়, আমরা মাঠে নামবো। যারা উঁচু গলায় বক্তৃতা করেন, কি হলে, কি করলে তারা গর্তে লুকাবেন সেটা আমরা ভালো করেই জানি।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিলো না, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্যকন্যা, যার ধমনিতে বঙ্গবন্ধু রক্তস্রোত প্রবহমান, যার কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ প্রতিধ্বনি হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্রের অগ্নিবীণা, অন্যায় অনাচারের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠকণ্ঠের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন হয়েছিলো।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গত ৪১ বছরে পথ চলায় সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে উপড়ে ফেলে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের পাশে থেকেছেন এবং আছেন। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র বাক্সবন্দি থেকে মুক্ত হয়েছে। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এসেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি আজকে শেখ হাসিনার হাত ধরে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে এবং বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. আব্দুস সামাদ, সামাজিক বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, বিশিষ্ট কলাম লেখক সুভাষ সিংহ রায় প্রমূখ।
এনএইচবি/এএজেড