দুই টার্গেট নিয়ে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ
আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সাল নির্বাচনের বছর। আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হতে এখন থেকেই দলকে সুসংগঠিত করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। জোট, মহাজোটের হিসাব পরে, আগে সংগঠনকে শক্তিশালী করার দিকে নজর আওয়ামী লীগের। তাই দুটি প্রধান টার্গেট সামনে রেখে মাঠে নামতে চায় আওয়ামী লীগ।
ডিসেম্বরের মধ্যেই আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল ও জাতীয় নির্বাচন-এ দুটো লক্ষ্য নির্ধারণ করে দলীয় নেতা-কর্মীদের তৎপর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। অতীতের নির্বাচনের চাইতে আগামী নির্বাচন বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে এবং কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে, সেই বার্তাও দিয়েছেন দলীয় প্রধান। তাই আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা বেশি, বিপদে যারা মানুষের সঙ্গে ছিলেন এমন লোককে খুঁজে বের করতে দলীয় নেতাদের কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন।
আর স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে যেসব নেতা দলের নির্দেশনা অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেছেন তাদের বিষয়ে কঠোর নির্দেশনার কথা দলীয় ফোরামে আবারও উঠে এসেছে। দলের সিদ্ধান্ত অমান্যকারীরা দলের জন্য বিপদজনক বলেও মনে করেন কোনো কোনো নেতা। তাই দলীয় সভাপতির কঠোর বার্তা, বিদ্রোহীদের কোনো ছাড় নয় বরং তাদের শোকজ নোটিশ দিতে বলা হয়েছে।
বিদ্রোহীদের এলাকায় নতুন করে কাউন্সিল করে নেতা নির্বাচন করতে বলা হয়েছে। দলের জাতীয় কাউন্সিলের আগেই সব বিবাদ মিটিয়ে দলকে নির্বাচনী দৌড়ের জন্য প্রস্তুত করার কথা বলা হয়েছে। এসব কাজ করতে আগামী ১২ মে থেকে পুরোদমে মাঠে নামবে আওয়ামী লীগ। বেশ কয়েকটি উপজেলা ও জেলার কাউন্সিলের তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছে।
এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র আপডেট করার কাজও শুরু করতে বলা হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দেওয়া ইশতেহারের আলোকে নতুন করে ইশতেহার প্রণয়ন করতে কাজ শুরু করবে আওয়ামী লীগ। তা ছাড়া আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষগুলোকে নির্বাচনমুখী করতে সব ধরনের ছাড় দিতে চায় আওয়ামী লীগ।
তারই একটি ইঙ্গিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনীতিতে একটা বিকল্প থাকা উচিত। ভালোভাবে যদি তারা সংগঠিত হতে পারে আমাদের আপত্তি নাই।’
এরপর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, ‘বিরোধী দলের মিছিল-মিটিংয়ে বাধা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তারা স্বাধীনভাবে করুক। আমরা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। বিরোধী দলও যারা যারা নির্বাচন করবে তাদের স্বাগতম। তিনি নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশ্বাসও দিয়েছেন।
কার্যনির্বাহী সংসদের আলোচনার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, বৈঠকে মূলত দুটি বিষয় বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগামী নির্বাচনেও মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে, সেই বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মানুষের কাছে তুলে ধরা এবং জনপ্রিয় প্রার্থী খুঁজে বের করে আনার নির্দেশনা দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর মতো প্রার্থী চায় আওয়ামী লীগ। যাদের বিজয়ী হওয়ার সম্ভবনা তাদেরই মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন নেত্রী।
এসএম/টিটি