গাজীপুরে বেতন বকেয়ার দাবিতে বেক্সিমকো শ্রমিকদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সারাবো এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা। শনিবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভে শ্রমিকরা চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করেন, যার ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং যাত্রী ও চালকদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনী শ্রমিকদের বেতন আদায়ের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে দেয়, এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জানা যায়, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে প্রায় ২২ হাজার শ্রমিক কাজ করেন এবং প্রতি মাসে তাদের বেতন বাবদ ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা প্রয়োজন হয়।
গত সেপ্টেম্বরে একই কারণে শ্রমিকরা বেশ কয়েকদিন আন্দোলন ও সড়ক অবরোধ করেছিলেন। চলতি মাসেও একই সমস্যা দেখা দিলে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
গত সপ্তাহে ২৭ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হলেও, এখনও অনেক শ্রমিক বেতন পাননি। সেই বেতন বকেয়ার দাবিতে শনিবার প্রায় এক থেকে দেড় হাজার শ্রমিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে এবং পরে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নেয়।
বিক্ষোভকারী শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, “মাসের ১৯-২০ দিন পেরিয়ে গেলেও বেতন পাইনি। বেতন না পাওয়ায় ঘর ভাড়া ও দোকানের বাকি পরিশোধ করতে পারছি না। প্রতিমাসে এই সমস্যার কারণে আমাদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।”
শ্রমিক শরিফুল ইসলাম বলেন, “পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে তারা বেতন আদায়ে সহযোগিতা করবেন। এরপর আমরা সড়ক অবরোধ ছেড়ে দিয়েছি।”
তবে সড়ক অবরোধের কারণে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, “অল্প কিছু কারণেই সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে, যা মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলছে। শ্রমিকদের সমস্যা তারা কারখানায় আন্দোলন করুক, রাস্তায় কেন আসছে?”
বাস চালক রহিম সরকার জানান, “শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে সড়কে গাড়ি চালাতে এখন ভয় হয়। ভাঙচুর না হলেও দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হয়, এতে যাত্রীদের কষ্ট হয় এবং তেলের অপচয় হয়।”
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম আরও জানান, বেতনের বাকি অংশ দ্রুত পরিশোধ করতে কারখানা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অল্প সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ ছিল, তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।