সময় নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে হাজির হননি বেনজীর
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
অতিরিক্ত ১৭ দিন সময় দেওয়া হলেও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হননি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে দ্বিতীয়বারের মতো রবিবার (২৩ জুন) সকাল ১০টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ডাকা হয়েছিল।
আজ বেলা ১২ টায়ও তিনি সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে যাননি। দুদকের তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হওয়ার ব্যাপারে তার অনুরোধে তাকে অতিরিক্ত ১৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল।
দুদক সূত্র জানায়, বেনজীর আহমেদের অনুরোধে তাকে অতিরিক্ত ১৫ দিন সময় দিয়েছিল দুদক। আজ তার দুদকে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তিনি হাজির হননি।
গত ২৮ মে বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়। সেই নোটিশে বেনজীরকে ৬ জুন এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের ৯ জুন দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ৫ জুন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে বেনজীরের পক্ষে তার আইনজীবী আরও ১৫ দিনের সময় চান। দুদকের উপপরিচালক বরাবর সময় চেয়ে আবেদনটি করা হয়। এরপর নতুন তারিখ দেওয়া হয়। পরে দুদক সচিব বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে দুদক তলব করলেও শুনানিতে অনুপস্থিত থাকায় ২৩ জুন নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে দুদক।
গত ২৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন নিয়ে গত ৩১ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে আরও কিছু গণমাধ্যমে তার (বেনজীর) বিষয়ে একই অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদনে উঠে আসা অভিযোগগুলোর বিষয়ে দুদক আইন অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করে।
‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদন তার অর্থ-সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়। বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র। এ ছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকারও বেশি।
প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার কাছের এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারকা হোটেল লা মেরিডিয়ানে রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। এ ছাড়া পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি। ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদ বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।