বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ক্রমেই বাড়ছে। চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের মধ্যেই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৭-এ। জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে এ সংখ্যাটি প্রায় ৭৫ শতাংশ, যা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ফিলিস্তিন প্রশ্নকে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করেছে।
গাজায় ইসরাইলি হামলার তীব্র প্রতিবাদে বিশ্বের নানা দেশের সরকার ও জনগণ ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। শুধু চলতি বছরেই ১০টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে। ফ্রান্সও শিগগির একই পথে হাঁটার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর নিজ ভূখণ্ডে সার্বভৌমত্ব হারায় ফিলিস্তিনিরা। ১৯৮৮ সালের ১৫ নভেম্বর প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশনের (পিএলও) চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাত জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সে সময় ৮০টি দেশ—বিশেষ করে আরব, এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার অনেক দেশ তাৎক্ষণিক স্বীকৃতি দেয়।
এরপর ৯০-এর দশক থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৩২টি দেশ—যাদের মধ্যে ছিল চীন, রাশিয়া ও তুরস্কের মতো প্রভাবশালী রাষ্ট্র—ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়। ২০১১ সালে আফ্রিকার অধিকাংশ দেশও ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ায়। ২০১২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বিপুল ভোটে ফিলিস্তিন পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়, যেখানে ১৩৮টি দেশ সমর্থন জানায়।
সর্বশেষ, চলতি বছর মার্চে মেক্সিকো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্পেনসহ একাধিক ইউরোপীয় দেশও এখন ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের অধিকাংশ দেশের স্বীকৃতি মধ্যপ্রাচ্যে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের দাবিকে আরও জোরালো করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতির মঞ্চে ফিলিস্তিন প্রশ্ন এখন শুধুমাত্র মানবিকতার নয়, বরং সার্বভৌমত্ব, ন্যায়বিচার এবং আন্তর্জাতিক আইন প্রতিষ্ঠার এক চূড়ান্ত পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে।