২ সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে: প্রতিমন্ত্রী
চলমান লোডশেডিংয়ের কারণে সারা দেশে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যেই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
সোমবার (৫ জুন) প্রতিমন্ত্রী ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, চলমান তাপদাহ ও লোডশেডিংয়ের কারণে দেশের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, যা কাঙ্ক্ষিত নয়, তবে খুব শিগগির জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছি। আশা করছি, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবে।
তিনি বলেন, লোডশেডিংয়ের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যা সবার জানা উচিত। কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, তা আপনারা সবাই জানেন।
নসরুল হামিদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাস, কয়লা, ফার্নেস অয়েলসহ সব ধরনের জ্বালানির দাম আকাশচুম্বী হয়েছে, এমনকি বাজারে এর প্রাপ্যতাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে ডলারের বিনিময় হার লাগামহীনভাবে বেড়েছে। এটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাস, কয়লা এবং ফার্নেস অয়েলের মতো জ্বালানি আমদানিতে প্রভাব ফেলেছে, যার ফলে চলমান লোডশেডিং হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে সরকার তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে।
দেশের বিদ্যুতের আগের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, ২০০৮ সালে মাত্র ৪৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ পেত, যা এখন শতভাগ। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, তখন দেশবাসী দিনে কমপক্ষে ১৬-১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং ভোগ করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আমরা গত এক যুগে বিদ্যুতের উৎপাদন ৫ গুণেরও বেশি বাড়িয়েছি। বর্তমানে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভসহ)। ফলে উৎপাদন ক্ষমতার দিক থেকে বিদ্যুৎ বিভাগে কোনো অভাব নেই। তবে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারের ব্যাপক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে আমরা অপ্রত্যাশিত লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হচ্ছি।
জনগণের এমন ভোগান্তিতে দুঃখ প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, এ পরিস্থিতি সাময়িক। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি ভালো অবস্থানে ফিরে আসতে পারব।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে, বাংলাদেশ বিভিন্ন স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আমি আশা করি, আপনাদের (দেশবাসী) আস্থা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে। এই দুর্ভোগ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একসাথে আমরা লাঘব করতে সক্ষম হব।