ফোর্বস এর তালিকায় ৭ বাংলাদেশি তরুণ উদ্যোক্তা

সুপরিচিত মার্কিন ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’-এর তৈরি করা ২০২৩ সালের এশিয়ার ৩০ বছরের কম বয়সী উদ্যোক্তা ও সমাজ পরিবর্তনকারীর (চেঞ্জমেকার) তালিকায় স্থান পেয়েছেন সাত বাংলাদেশি। গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশি তরুণেরা ধারাবাহিকভাবে এ তালিকায় স্থান করে নিচ্ছেন।
৩০ বছর বয়সের আগে ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশেষ অবদানের জন্য ‘থার্টি আন্ডার থার্টি’ বা ‘৩০ অনূর্ধ্ব ৩০’ তালিকাটি ২০১১ সাল থেকে প্রণয়ন করে আসছে ফোর্বস ম্যাগাজিন।
এ বছর কনজ্যুমার টেকনোলজি, গণমাধ্যম, বিপণন, বিজ্ঞাপন ও সামাজিক প্রভাব ক্যাটাগরিতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন ৭ বাংলাদেশি।
আজিজ আরমান, প্রতিষ্ঠাতা, যাত্রী
ঢাকা নগরের বিশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান 'যাত্রী' গড়ে তোলেন আজিজ আরমান। গত বছর ঢাকা নগরের বাসমালিকদের সংগঠন ৫ হাজার ৬৫০টি বাসের জন্য ই-টিকিটিং ব্যবস্থা চালু করতে সম্মত হলে 'যাত্রী' সে ব্যবস্থা করে দেয়। এতে শিগগিরই ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের অবসান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রাক্-সিড পর্যায়ে ২০২১ সালে ১২ লাখ ডলার বিনিয়োগ পায় যাত্রী। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে এই স্টার্টআপ বিনিয়োগ পেয়েছে ৫২ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আজিজ আরমান কনজ্যুমার টেকনোলজি শ্রেণিতে ২৫তম স্থান নিয়ে তালিকাভূক্ত হয়েছেন।
রুবাইয়াত ফারহান ও তাসফিয়া তাসবিন, প্রতিষ্ঠাতা, মার্কোপলো ডট এআই
মার্কোপলো ডট এআই দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিপণন করে থাকে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থের বিনিময়ে তাদের অ্যাপ ব্যবহার করতে পারে। এই অ্যাপ মেশিন লার্নিং মডেলের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।
ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে তারা বিশাল তথ্যভান্ডার তৈরি করেছে। গণমাধ্যম, বিপণন, বিজ্ঞাপন শ্রেণিতে ২৭তম স্থান নিয়ে তারা তালিকাভূক্ত হয়েছেন।
জাহ্নবী রহমান, সহপ্রতিষ্ঠাতা, রিলাক্সি
কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর জাহ্নবী মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে গড়ে তুলেছেন ‘রিলাক্সি’ নামে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। মানুষের মনের ভাব বুঝে বিনা মূল্যে মেডিটেশনের সুযোগ দেয় রিলাক্সি। তবে অর্থের বিনিময়ে চাহিদামতো ভার্চ্যুয়াল থেরাপিও নিতে পারেন গ্রাহকরা। এখান থেকেই রিলাক্সি এর মূল আয়।
সম্প্রতি হুয়াওয়ের আইসিটি ইনকিউবেটর ২০২২-এ এই অ্যাপ দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে। এটি ডাউনলোড হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি। সামাজিক প্রভাব শ্রেণিতে ২৪তম স্থান নিয়ে তালিকাভূক্ত হয়েছেন জাহ্নবী।
দীপ্ত সাহা, সহপ্রতিষ্ঠাতা, অ্যাগ্রোশিফট টেকনোলজিস
কৃষিভিত্তিক সরবরাহব্যবস্থা অ্যাগ্রোশিফট টেকনোলজিস। ডিজিটাল এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে পারেন। সম্প্রতি রেডিমেড গার্মেন্টস (আরএমজি) গ্লোবাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জের জন্য প্ল্যাটফর্মটি এইচঅ্যান্ডএমের স্টিচ জিতেছে এবং শরুক পার্টনার্স এবং অ্যাংকরলেস বাংলাদেশের নেতৃত্বে একটি প্রাক্-সিড পর্যায়ে ১৮ লাখ ডলারের বিনিয়োগ পেয়েছে। তিনি কনজ্যুমার টেকনোলজি শ্রেণিতে ২৭তম স্থান নিয়ে তালিকাভূক্ত হয়েছেন।
আনোয়ার সায়েফ ও সারাবন তহুরা, প্রতিষ্ঠাতা, টার্টল ভেঞ্চার স্টুডিও
সারাবন তহুরা তুরিন ও আনোয়ার সায়েফ অনিকের প্রতিষ্ঠিত টার্টল ভেঞ্চার স্টুডিও নতুন স্টার্টাপদের অর্থায়ন, পরামর্শসহ বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক সুবিধা দিয়ে থাকে, বাংলাদেশে যা এ ধরনের প্রথম কোনো উদ্যোগ। ২০১৮ সাল থেকে তারা ৯০ জনের বেশি উদ্যোক্তার সঙ্গে কাজ করেছেন এবং সেই উদ্যোক্তারা এখন পর্যন্ত ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ পেয়েছে।
প্রযুক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করতে ‘ইয়াং টার্টল’ নামে একটি কর্মসূচি পরিচালনা করছে টার্টল ভেঞ্চার। আনোয়ার ২৯তম আর সারাবন ২৬তম স্থান নিয়ে সামাজিক প্রভাব শ্রেণিতে তালিকাভুক্ত হয়েছেন তারা।
/এএস
