শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | ৩০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

যুক্তরাষ্ট্র হয়তো আমার প্রধানমন্ত্রিত্ব চায় না: বিবিসিকে শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসির ইয়ালদা হাকিমের সঙ্গে একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো তাকে ক্ষমতায় চায় না বলেই বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে গত ১৪ বছর ধরে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকায় দেশে অসাধারণ উন্নয়ন হয়েছে।

প্রায় ৩০মিনিটের ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ, বিচার বর্হিভূত হ্ত্যা, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, গণতন্ত্র এবং রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৬ মে) যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজে তাদের স্থানীয় সময় রাত ১২টায় এ সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে বাংলাদেশে একনায়কতন্ত্রের যে অভিযোগ করা হয়, সেটি নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 'শুধুমাত্র গত ১৪ বছর ধরেই দেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে, তাই আমরা উন্নতি করতে পারছি।'

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

বিবিসির ইয়ালদা হাকিমের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাপচারিতায় দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে।

বিবিসি তার কাছে জানতে চেয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র কেন বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন?

এই প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, 'যে বাহিনীর ওপর তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের পরামর্শেই ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। তাদের সকল প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছিল। যেভাবে তারা বাহিনীটাকে তৈরি করেছে, তারা তো সেভাবেই কাজ করছে বলে আমার বিশ্বাস। তাহলে কেন তারা এই নিষেধাজ্ঞা দিল? এটা আমার কাছেও বিরাট এক প্রশ্ন।'

শেখ হাসিনার কাছে ইয়ালদা হাকিম জানতে চান, তাহলে কেন তারা এটা করেছে বলে তিনি মনে করেন?

তিনি বলছেন, 'আমি জানি না, হয়তো তারা আমার কাজ অব্যাহত থাকুক তা চায় না, আমি বাংলাদেশের জন্য যেসব উন্নতি করেছি, সেটা তারা হয়তো গ্রহণ করতে পারছে না। এটা আমার অনুভূতি। একটা পর্যায়ে সন্ত্রাস সব দেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছিল। আমাদের দেশে আমরা সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করেছি। এরপর মাত্র একটা ঘটনা ঘটেছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ রাখতে কঠোর পরিশ্রম করেছে।'

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারির আগে বাংলাদেশে বন্দুকযুদ্ধের একটি পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে বিবিসির ইয়ালদা হাকিম বলেন, 'নিষেধাজ্ঞা জারির আগে ২০১৮ সালে ৪৬৬ মানুষ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। ২০১৯ সালে ৩৮৮ মানুষ একই ভাবে নিহত হয়েছে আর ২০২০ সালে নিহত হয়েছে ১৮৮ জন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পর এই সংখ্যা মাত্র ১৫ জনে নেমে এসেছে।'

এর জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, 'যেসব নাম্বার তারা উল্লেখ করেছে, সেগুলো তারা প্রমাণ করতে পারেনি। কারণ আমরা প্রমাণ চেয়েছিলাম, সেগুলো তারা পাঠিয়ে দিক, আমরা তদন্ত করে দেখবো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করেনি।'

ইয়ালদা হাকিম বলেন, জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচেভেলের একটি তথ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে, র‍্যাবের দুইজন ব্যক্তি গোপন তথ্য ফাঁস করে বলেছেন যে, এসব হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এসেছে।

উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি জানি না তারা কীভাবে এটা করেছে, কিন্তু আমেরিকায় কি ঘটছে, আপনি দেখতে পাচ্ছেন। সেখানে প্রায় প্রতিদিন একাধিক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। স্কুল, শপিং মল, রেস্তোরাঁয় হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এমনকি স্কুল শিক্ষার্থীরা, সাধারণ মানুষ হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা সশস্ত্র ব্যক্তির হাতে নিহত হচ্ছে। আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাদের নিজেদের ব্যাপারে আরও মনোযোগী হওয়া। তাদের দেশের কী অবস্থা? তাদের উচিত শিশুদের জীবন রক্ষা করা। তারা নিজেদের লোকজনের ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা যেসব অভিযোগ করেছে, আমরা তাদের কাছে প্রমাণ চেয়েছিলাম। তারা দেয়নি।'

'কেন তারা আমাদের দেশের প্রতি নিষেধাজ্ঞা দিল?' পাল্টা প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমি মনে করি, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা একটা খেলার মতো। এটা আমার কাছে এখনো পরিষ্কার নয়।'

সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'এই খুনিরা দায়মুক্তি পেয়েছিল। আমি এমনকি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারিনি, আমার বিচার পাওয়ার কোন অধিকার ছিল না। সেই সময় তারা কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। বরং একজন হত্যাকারী আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদের বারবার অনুরোধ করেছি, তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য। তারা করেনি। কেন তারা শুনছে না, আমি জানি না।‘’

গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা এক বক্তব্যে বলেছেন, আমেরিকা বাংলাদেশের ক্ষমতায় পরিবর্তন আনতে চায়। এই বক্তব্যের পক্ষে কী প্রমাণ আছে? বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় শেখ হাসিনার কাছে।

উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমার কাছে একটা বড় প্রশ্ন হলো, কেন তারা নিষেধাজ্ঞা জারি করলো? যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সন্ত্রাস মোকাবেলার জন্য কাজ করছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তখন তারা লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যারা ভুক্তভোগী, তাদের পক্ষে নয়।'

ইয়ালদা হাকিম বলেন, বাংলাদেশের বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘ, সবাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি জানি ১২টি প্রতিষ্ঠান মিলে এসব বক্তব্য দিয়েছে, কিন্তু তারা প্রমাণ করতে পারেনি। আমি জানি না আন্তর্জাতিক কী খেলা চলছে।'

কেন তারা আপনাকে সরাতে চাইবে? ইয়ালদা হাকিমের এই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, 'তারা আমার পিতাকে হত্যা করেছে। যারা আমার পরিবারকে হত্যা করেছে, এমনকি ১০ বছরের ভাইকে হত্যা করেছে, সেই ষড়যন্ত্রকারীরা চায় না এই পরিবারের কেউ ক্ষমতায় আসুক।'

বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সংবাদ মাধ্যমের ওপর চাপ

বাংলাদেশের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং সংবাদ মাধ্যমের ওপর চাপ তৈরি করা সম্পর্কে বিভিন্ন সময় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই বিষয়ে শেখ হাসিনার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলছেন, 'আমি জানি না, তারা যেসব অভিযোগ করছে, সেগুলো খুব বেশি প্রমাণ করতে পারেনি। কিছু গ্রুপ বড় বড় সংখ্যায় অভিযোগ করেছে, কিন্তু আমরা যখন তদন্ত করেছি, তখন আমরা পাঁচ ছয়জনের (হত্যা বা গুম) ব্যাপার দেখতে পেয়েছি।'

আসলে কিছু মানুষ বিভিন্ন কারণে নিজেরাই লুকিয়ে ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আমরাও সমর্থন করি না। আমাদের দেশে আইন আছে, আমাদের আইন প্রয়োগকারীরা কোন অন্যায় করলে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হয়। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।'

'যেভাবে ডয়েচেভেলের তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে, আসলেই কি সাংবাদিক, বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, অ্যাকটিভিস্টদের ওপর হামলার জন্য র‍্যাব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল?' শেখ হাসিনার কাছে জানতে চান ইয়ালদা হাকিম।

এখানে তিনি প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করেন, 'সরকারের তথ্যেই জানা গেছে, বিরোধী দল বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২০ হাজারের মতো মামলা হয়েছে, সাত হাজারের বেশি বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, হাজার হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে।'

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'হ্যাঁ, কিন্তু তারা কী করেছিল? তারা মানুষ হত্যা করেছে, ককটেল ছুড়েছে, পাবলিক বাসে আগুন দিয়েছে। ৩ হাজার ৮০০ পাবলিক বাসের ভেতরে যাত্রীদের রেখেই আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, ট্রেন, লঞ্চ, প্রাইভেট কারে আগুন দিয়েছে।

পাল্টা প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, আপনি হলে কি করতেন? আপনারা কি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতেন না?

তিনি আরও বলেন, 'এটা সাধারণ দলীয় সমর্থকদের ক্ষেত্রে করা হয়নি। যারা হত্যা করেছে, মানুষকে নির্যাতন করেছে, দুর্নীতি করেছে- এই জন্য তারা শাস্তি পেয়েছে। আমি বুঝতে পারি না, তারা যেসব অপরাধ করেছে, কেন এইসব (মানবাধিকার) সংগঠন সেটা দেখতে পাচ্ছে না।'

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'মানবাধিকার সংস্থাগুলো কখনো আমার মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেনি। যখন আমার পুরো পরিবারকে হারিয়েছে, তখনো তারা আমার পক্ষে কথা বলেনি। কেন?'

বিবিসির সংবাদদাতা ইয়ালদা হাকিম জানতে চান, 'আমেরিকার কেউ কেউ মনে করেন, আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার আসল কারণ হলো, বাংলাদেশের মানবাধিকার অবস্থাকে আবার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা। এর জবাবে তিনি কি বলবেন?'

উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, 'বাংলাদেশ সবসময়ই মানবাধিকার রক্ষা করে আসছে। মানবাধিকার মানেই শুধু শরীরের নিরাপত্তা নয়। আমার কাছে মানবাধিকার মানে হলো তাদের নিরাপত্তা, খাদ্য, শিক্ষা, ভোট, সুস্থ থাকার অধিকার। সবকিছু আমরা রক্ষা করছি।'

নির্বাচন

বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, 'বাংলাদেশের বিরোধী নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, শেখ হাসিনা নির্বাচন কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখছে?'

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, 'অবশ্যই না। নির্বাচন এবং ভোটাধিকারের জন্য সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে আমি সারাজীবন ধরে সংগ্রাম করেছি। নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার জন্য আমরাই আইন করেছি। আমরা সবসময়েই চেয়েছি যেন মুক্ত ও স্বচ্ছ নির্বাচন হয়। এখন আমাদের ছবিসহ ভোটার লিস্ট তৈরি করেছি, আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বক্সের ব্যবস্থা করেছি।'

ইয়ালদা হাকিম উল্লেখ করেন, 'গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৯৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ভোটের হার মিশরের মতো অনেক সামরিক শাসকের চেয়েও বেশি। এটা অনেকটা ভ্লাদিমির পুতিনের ভোটের মতো।'

শেখ হাসিনা তার জবাবে বলেন, 'কেন নয়। আমাদের কাজের জন্যই মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে। আমরা তাদের জন্য কাজ করেছি। আমাদের ১৭০ মিলিয়ন মানুষ রয়েছে। আমাদের জনগণ রাজনৈতিক অধিকারের ব্যাপারে সচেতন। আমরা ক্ষমতায় আসার পর দারিদ্র কমেছে, খাদ্য নিরাপত্তা বেড়েছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গৃহায়ন- সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। তাহলে মানুষ কেন (আমাদের) ভোট দেবে না?'

২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের জরিপের তথ্য উল্লেখ করে ইয়ালদা হাকিম বলেন, '৫০টা আসনের মধ্যে ৪৭টিতেই অনিয়ম দেখতে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে জাল ভোট, ভোটার ও বিরোধী এজেন্টদের বের করে দেয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। এই কারণেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।'

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, 'তারা কী সেটা প্রমাণ করতে পেরেছে? কোথায় সেই প্রমাণ? আমি নথিপত্র দেখতে চাই। কারণ আমি বলছি, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো কেউ অভিযোগ করেনি। ২১-দলীয় জোট, বিএনপি-জামায়াত ইসলামী সবমিলিয়ে কতগুলো আসন পেয়েছিল? ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ২১টি। মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। তারা আমাদের জোটকে ভোট দিয়েছে।'

'তাহলে কেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছে যে, এটা অবাধ আর স্বচ্ছ হয়নি?' জানতে চান ইয়ালদা হাকিম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'সেটা আমি জানি না, তারা কীভাবে এটা দেখেছে। কিন্তু নির্বাচন অবশ্যই স্বচ্ছ এবং অবাধ হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা (বিএনপি জোট) শুরুতে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি কী হলো? আমাদের ৩০০ আসন আছে। আপনাকে ৩০০ প্রার্থী দিতে হবে। তারা মনোনয়ন দিয়েছে প্রায় ৭০০ জনকে। তারা নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে শুরু করে। একপর্যায়ে তারা নির্বাচন থেকে সরে যায়। তাহলে তারা কীভাবে দাবি করতে পারে যে, নির্বাচন স্বচ্ছ, অবাধ হয়নি।'

ইয়ালদা হাকিম বলেন, 'এটা বিরোধীদের কথা নয়, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এই তথ্য দিয়েছে।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি জানি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এটা বলেছে, তাদের স্বচ্ছতা নিয়েই আমার সন্দেহ রয়েছে। আমি খোলাখুলি ভাবেই বলছি।'

রোহিঙ্গা ইস্যু

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানবাধিকারের কথা বিবেচনা করেই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

ইয়ালদা হাকিম তার কাছে জানতে চান, 'আপনি যখন তাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন, বিশ্বের কাছে অনেক প্রশংসা পেয়েছেন। তাদের বিপদের সময় ১০ লাখ মানুষকে আশ্রয় দিয়েছেন। বাংলাদেশকে, আপনাকে তারা প্রশংসা করেছে। কিন্তু পাঁচ বছর পরে কী হচ্ছে? সেখানে সংখ্যাতিরিক্ত মানুষ বসবাস করছে, ক্যাম্পে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটছে, সহিংসতা হচ্ছে। তাদের আরেকটি দ্বীপে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে?'

শেখ হাসিনা বলেন, 'সেখানে যারা গিয়েছে, তারা অনেক ভালো অবস্থায় বসবাস করছে। কারণ সেখানে এক লাখ পরিবারের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। কে বলেছে সেটা বন্যা প্রবণ? বন্যা ঠেকাতে সেখানে সবকিছুই করা হয়েছে। সেখানে ভালো স্কুল, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রয়েছে। ক্যাম্পের চেয়ে সেখানে বসবাসের ব্যবস্থা অনেক ভালো।'

তিনি আরও বলেন, 'এখন যেখানে রোহিঙ্গা ক্যাম্প, ওই এলাকার পরিবেশ পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে। ওখানে গভীর জঙ্গল ছিল, সেটা এখন নেই। তারা এখন একে অপরের সঙ্গে মারামারি করছে। তারা মানব পাচার, মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।'

'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এ ধরনের অভিযোগ করার আগে রোহিঙ্গারা যাতে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা উচিত। তাদের (রোহিঙ্গাদের) উচিত নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়া।' বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

কিন্তু মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া কি রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ? বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'জাতিসংঘ এবং অন্য সংগঠনগুলোর সেজন্য ব্যবস্থা করা উচিত। তাদের (রোহিঙ্গাদের) নিজেদের দেশেই তাদের নিরাপদ থাকার কথা। এটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব জাতিসংঘের, আমাদের না।'

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'যখন তারা বিপদে ছিল, আমরা তাদের আমাদের দেশে ঢুকতে দিয়েছি, তাদের জন্য সব ব্যবস্থা করেছি। ৪০ হাজার নারী গর্ভবতী ছিল, তাদের খাবার, স্বাস্থ্য চিকিৎসা দিয়েছি। প্রথমে কেউ এগিয়ে আসেনি, আমাদের দেশের লোকজন তাদের সহায়তা করেছে।'

বিবিসির প্রশ্ন ছিল, মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কী হবে? কারণ জাতিসংঘ বলেছে, কাউকে জোর করে পাঠানো উচিত নয়। ২০ জনের রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল মিয়ানমার ঘুরে এসে বলেছে, বাংলাদেশি কর্মকর্তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে বৈঠক করতে নিয়ে গেছে।'

জবাবে শেখ হাসিনা বলছেন, 'না, আমি জানি না কেন তারা এটা বলছে। তারা স্বেচ্ছায় পরিস্থিতি দেখতে সেখানে গিয়েছিল। কেউ তাদের মিথ্যা বলে নিয়ে যায়নি। কেন মিথ্যা বলা হবে? তারা স্বেচ্ছায় সেখানকার পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিল। আমরা তাদের জোর করিনি।'

শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'আপনিই বলুন, কোন দেশ কীভাবে ১০ লাখের বেশি মানুষের এই বোঝা কতদিন বয়ে যাবে? দিন দিন এটা আরও বড় হচ্ছে, আমরা এই বোঝা কতদিন টানবো? তাদের উচিত নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়া। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে, মানবাধিকার সংস্থা, জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি, তারা যাতে এসব মানুষকে নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। এটা তাদের দায়িত্ব। তারা এই বোঝা চিরদিনের জন্য আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে পারে না। এমনিতেই আমাদের দেশে জনসংখ্যা অনেক বেশি। আমাদের স্থানীয় মানুষজন অনেক দুঃখকষ্ট ভোগ করছে।'

কিন্তু এই বিষয়ে কি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বাংলাদেশ যথেষ্ট সমর্থন পাচ্ছে? জানতে চান বিবিসির ইয়ালদা হাকিম।

শেখ হাসিনা বলেন, 'তারা সমর্থন করছে, কিন্তু তারা ইতিবাচক কিছু করছে না। আলোচনা করলেই তারা বলে বলে, হ্যাঁ, তাদের ফিরে যাওয়া উচিত। কিন্তু তারা ইতিবাচক কিছু করছে না। কেন? এটা আমার প্রশ্ন। মানবাধিকারের কথা চিন্তা করে আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি।'

'এখন আপনি বলুন, যখন আমরা এতো বেশি মানুষকে আমাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছি, তখন কীভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অভিযোগ করে যে আমরা আমরা নিজেদের দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছি?' প্রশ্ন করেন শেখ হাসিনা।

সাক্ষাৎকারের সমাপ্তি আবারও প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'সুতরাং এসব অভিযোগ পুরোপুরি বানোয়াট। আমরা জানি না, কেন তারা এসব করছে? আমার নিজেরও প্রশ্ন, কেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে?'

/এএস

Header Ad

চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেলসহ যুবককে পুড়িয়ে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন

চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেলসহ যুবককে পুড়িয়ে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন। ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছী ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের মেহেগনি গাছের বাগানে ব্যবসায়ী তুষার আহম্মেদ সবুজকে (২২) মোটরসাইকেলসহ পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্‌ঘাটন হয়েছে হত্যার রহস্য।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। এর আগে বৃহস্পতিবার তাদের পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সাগর আলী (২২) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সাগর আলী-জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার গোবিন্দপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড পাড়ার সাহাদ আলীর ছেলে। অন্যরা হলেন- একই উপজেলার বকশিপুর গ্রামের লাল্টু মিয়ার ছেলে নাজমুল হক পাপ্পু (২৮) ও সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের মৃত ইউসুফ আলী বিশ্বাসের ছেলে আলমডাঙ্গা খাদ্য গুদামের নৈশ প্রহরী জহুরুল ইসলাম (৪৬)। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল ও ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। নিহত তুষার আহম্মেদ সবুজ বাদেমাজু গ্রামের পাহাড়পাড়ার জয়নুল আবেদীনের ছেলে। সে পুরাতন মোটরসাইকেল ব্যবসায়ী।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান জানান, নিহত সবুজ পুরাতন মোটরসাইকেলের ব্যবসা করতেন। ব্যবসায়ী হওয়ায় তার কাছে সবসময় নগদ টাকা থাকতো। টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যই হত্যাকারীরা তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি অন্যখাতে প্রবাহিত করার জন্য মরদেহ ও মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয় তারা।

আলমডাঙ্গা থানায় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় নিহত সবুজের বাবা জয়নুল আবেদীন বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) আলমডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। মামলার পর তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) আলমডাঙ্গা উপজেলার বাদেমাজু পাহাড়পাড়ার তুষার আহম্মেদ সবুজ সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরদিন বুধবার উপজেলার বেলগাছী ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের একটি মেহেগনি গাছের বাগানে তুষার আহম্মেদ সবুজের পোড়া মরদেহ ও তার পোড়া মোটরসাইকেল দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

Header Ad

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বড় রদবদল, ৩ জনকে ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আটটি পদে রদবদল করা হয়েছে। এর মধ্যে রোগ নিয়ন্ত্রণ, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও ন্যাশনাল এইডস অ্যান্ড এসটিডি কন্ট্রোলে নতুন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে তিনজনকে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পার-২ শাখার উপসচিব শোভন রাংসা সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক হিসেবে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. ফরহাদ হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হলো। এই বিভাগের বর্তমান পরিচালক ও সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের লাইন ডিরেক্টর ডা. শেখ দাউদ আরমানকে ওএসডি করা হলো।

এছাড়া জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (শৃঙ্খলা) ডা. মিছবাহ উদ্দীন আহমেদ। একই সঙ্গে বর্তমান পরিচালক শাহ গোলাম নবীকে ওএসডি করা হয়েছে। আর ন্যাশনাল এইডস অ্যান্ড এসটিডি কন্ট্রোলের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) হয়েছেন উপপরিচালক (পার-২) ডা. মো. খায়রুজ্জামান।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, অধিদপ্তরের পার-২ শাখার উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন যথাক্রমে সহকারী পরিচালক (প্রশাসন-২) ডা. কামরুল হাসান ও লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. খালেদ হোসেন। এছাড়া ওএসডি হওয়া আরও এক কর্মকর্তা হলেন বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. মো. হালিমুর রশিদ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বদলি ও পদায়নকৃত কর্মকর্তারা আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। অন্যথায় পরদিন বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত মর্মে গণ্য হবেন।

Header Ad

জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না: ডা. শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, তবে ভারতের সহযোগিতায় স্বাধীনতার সুফল না পাওয়ার শঙ্কা ছিল বলে দাবি করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের কাছে দলটি বেশি সুবিধা পাচ্ছে- এমন আলোচনাকেও ‘মিথ্যা প্রচার’ দাবি করেছেন।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে জামায়াতের আমির এ কথা জানান।

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল না। আমরা আশঙ্কা করেছিলাম, ভারতের সহযোগিতায় যদি দেশ স্বাধীন হয় তাহলে স্বাধীনতার সুফল পাওয়া যাবে না। এরপরও এটা সঠিক যে জামায়াত চেয়েছিল এক পাকিস্তান। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী র নিপীড়ন, নির্যাতন, খুন এবং নানা ধরনের অপকর্মের কারণে সারা জাতি ফুঁসে উঠেছিল, মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। তখন মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে।

‘এরপর স্বাধীন বাংলাদেশকে আমরা আমাদের কলিজা দিয়ে ভালোবেসে কবুল করে নিয়েছি’, বলেন জামায়াতের আমির।

তিনি বলেন, তখনকার সময়ে আমাদের চিন্তা বিজয়ী হয়নি, সেই সময় আমাদের চিন্তা পরাজিত হয়েছে, আমাদের সিদ্ধান্ত পরাজিত হয়েছে। এখন জনগণ মূল্যায়ন করবে আমাদের সেই ভূমিকা কতটা যথার্থ ছিল।

সর্বশেষ শেখ হাসিনা দেশত্যাগের কয়েকদিন আগে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল দলটিকে। এ নিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় যায় তখন নিষিদ্ধের ঘোর তাদের পেয়ে বসে। নিষিদ্ধের রাজনীতি আমাদের সমর্থনের বিষয় না। এটি জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিষয়।

সম্প্রতি বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের বক্তব্যে দল দুটির মধ্যে দূরত্বের বিষয়টি সামনে এলেও তা মানতে নারাজ জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, যৌক্তিক সময়ের মধ্যে মৌলিক সংস্কার করা সব সংস্কার নয়। কিছু সংস্কার করবে অন্তর্বর্তী সরকার আর কিছু সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার। আমরা মনে করি নৈতিক দায়বদ্ধতা আছে বর্তমান সরকারের। তারা তাড়াহুড়া নেই বলে এই বিষয়টি টেনে লম্বা যেনো না করে এই কথা আমরা বারবার বলেছি।

অন্তর্বর্তী সরকার থেকে জামায়াত বেশি সুবিধা পাচ্ছে এমন অভিযোগও উড়িয়ে দেন ডাক্তার শফিকুর রহমান। তবে সংস্কারের জন্য দিতে চান যৌক্তিক সময়।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেলসহ যুবককে পুড়িয়ে হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বড় রদবদল, ৩ জনকে ওএসডি
জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না: ডা. শফিকুর রহমান
নানা-নানির কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত আব্দুল্লাহ, পেলেন গার্ড অব অনার
‘হারপিক’ নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড়, জানা গেল কারণ
টিকটকার রাইসাকে বিয়ে করেননি তৌহিদ আফ্রিদি, তবে পাত্রী কে?
ফ্যাসিবাদের শেকড় অনেক দূর ছড়িয়ে আছে: আসিফ নজরুল
দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম কাজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা: ডোনাল্ড ট্রাম্প
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঢাকা সিটি কলেজ, কী হবে ১০ হাজার শিক্ষার্থীর?
জুমার নামাজ শেষে কাকরাইল ছাড়লেন সাদপন্থিরা
তিন মাস পর ‘গাজীপুর সাফারি পার্ক’ নামে চালু হলো সাফারি পার্ক
দেশে বিনিয়োগ করলে আমরা পাশে থাকব : লন্ডনে জামায়াত আমীর
দিল্লিতে ভয়াবহ বায়ুদূষণ: বন্ধ প্রাইমারি স্কুল, অনলাইনে পাঠদান
ঢাবি ছাত্রদলের নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানাল ছাত্রশিবির
গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় আরো ৪৫ জন নিহত
জুলাই বিপ্লবের ১০০তম দিন আজ, দিনব্যাপী নানা আয়োজন
মুজিববাদের বিরুদ্ধে লড়াইটা শতগুণ কঠিন : আসিফ মাহমুদ
কৃতকর্মে নেই অনুশোচনা, ক্ষমতা হারানোকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ
হালাল অর্থনীতির বিকাশে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ইন্দোনেশিয়ার
আজীবন ফ্রি চিকিৎসাসেবা পাবেন গণঅভ্যুত্থানে আহতরা