সুন্দরবনবিনাশী কর্মকাণ্ড রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন সুরক্ষায় মানুষের মুনাফালোভী, বনবিনাশী সকল কর্মকান্ড রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা। একইসঙ্গে তারা ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
সুন্দরবন দিবস-২০২৩ পালন উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় যাদুঘরের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে বক্তারা এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন, নাগরিক উদ্যোগ, উন্নয়ন ধারা ট্রাষ্ট, উবিনীগ, বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশন, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, সিডাস, ক্যাপস, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, বাউল ও লোকশিল্পী সংস্থা, নগরবাসী পরিবেশ আন্দোলন, হকার্স ইউনিয়ন এবং গ্রিন ভয়েসসহ অন্যান্য পরিবেশবাদী সংগঠনের যৌথভাবে ওই কর্মসূচির আয়োজন করে।
বাপার সহ-সভাপতি অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে ও বাপার যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাপা যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, স্থপতি ইকবাল হাবিব ও আলমগীর কবির, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, সুন্দবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, পুরান ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি নাজিম উদ্দীন, নগরবাসী পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি হাজী শেখ আনছার আলী, গ্রিন ভয়েস ঢাকা বিভাগের সভাপতি আব্দুস সামাদ প্রধান, গ্রিন ভয়েস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আব্দুল কাদের জিলানী প্রমুখ।
সভাপতির বক্ত্যবে অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, সুন্দরবন দক্ষিণ এশিয়ার ফুসফুস। সুন্দরবন এদেশের রক্ষা কবজ। যতবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ এসেছে ততবারই দক্ষিণ অঞ্চলকে সুন্দরবন মায়ের মতো আগলিয়ে রেখেছে। তথাকথিত উন্নয়নের ফলে শুধু সুন্দরবনই নয় বরং দেশ থেকে সব ধরনের বন আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
তিনি বলেন, আমরা কিন্তু উন্নয়ন বিমুখ না। তবে যে সকল উন্নয়ন দেশের পরিবেশ, বন ও প্রকৃতি উজাড় করে করা হয়, সেই উন্নয়ন আমরা চাই না। সুন্দরবন রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, দেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। অসংখ্য জীববৈচিত্র্যের আঁধার খ্যাত এই সুন্দরবনের উপর উন্নয়নের নামে নানা ধরনের বন বিনাসী কর্মকাণ্ডচলছে। সুন্দরবন ধ্বংস হলে দেশের মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। তাই নতুন প্রজম্মের মধ্যে এ বনের গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি দেশের মানুষের মধ্যে সুন্দরবন বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দখল এবং দূষণের ভারে আক্রান্ত সুন্দরবন। গত ১০০ বছরে সুন্দরবনের আয়তন কমেছে ৪৫১ বর্গ কিলোমিটার। সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে ১৭ প্রজাতির মাছের দেহে মাইক্রো প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। এসব মাছ খেলে মানুষের লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বনবিভাগের অসৎ কর্মকর্তার যোগসাজসে প্রতিনিয়ত সুন্দরবনের অভয়াশ্রমে বিষ দিয়ে এবং অবৈধ ভাবে মাছ মারা হচ্ছে। সুন্দরবন বিনাসী সকল কর্মকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানান তারা।
এনএইচবি/এমএমএ/
