‘ভারত-মিয়ানমারের কাছ থেকে বিশাল সমুদ্রসীমা আয়ত্তে এনেছি’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষায় কোনো সরকার কাজ করেনি, আওয়ামী লীগই প্রথম উদ্যোগ নেয় এবং ভারত ও মিয়ানমারের কাছ থেকে বিশাল সমুদ্রসীমা নিজেদের আয়ত্তে আনে।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর শের-ই বাংলা নগরে কোস্টগার্ডের সদর দপ্তরে বাহিনীটির ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সহযোগিতায় ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোস্টগার্ড যাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে— সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, শিগগিরই এই বাহিনীতে যুক্ত হবে আধুনিক জাহাজ, হোভারক্রাফ্টসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম।
কোস্টগার্ড সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা আমাদের সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এতে জনগণ উপকার পাচ্ছে। জনগণের বন্ধু হিসেবে কোস্টগার্ড আত্মপ্রকাশ করেছে। দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলিয়ান হয়ে তারা মাদকপাচার, অস্ত্র চোরাচালান, জলদস্যুতা রোধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ—ভূমিধস, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার সময় কোস্টগার্ড অবদান রেখে যাচ্ছে।'
বিশ্ব পরিস্থিতির বর্তমান অবস্থার বিষয়ে সরকারপ্রধান বলেন, 'করোনার অতিমারি সারা বিশ্বে যখন অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করেছিল, তখনো আমরা চেষ্টা করেছি অর্থনীতি ধরে রাখতে। এর পর যুদ্ধ বিশ্ব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই অবস্থায় খাদ্যমন্দা থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। আমাদের মিতব্যায়ী হতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে।'
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের সমুদ্র সীমা রক্ষায় কোনো সরকার কাজ করেনি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ প্রথম উদ্যোগ নেয় এবং ভারত ও মিয়ানমারের কাছ থেকে বিশাল সমুদ্র সীমা নিজেদের আয়ত্তে আনে।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের যে অধিকার আছে সেটা নির্দিষ্ট করার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে আইন প্রণয়ন করে। তখনও জাতিসংঘে এই আইন হয়নি। জাতিসংঘে এই আইন হয়েছে ১৯৮২ সালে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই এই আইন প্রথম পাস করে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের যেমন সমুদ্র আছে তেমন বিশাল উপকূলীয় অঞ্চল রয়েছে। এই অঞ্চলের সব ধরনের নিরাপত্তা বিধান করা, সব সম্পদ আমাদের অর্থনীতিতে কাজে লাগানো একান্ত অপরিহার্য। ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে এদেশে আমাদের যে অধিকার আছে তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করি। ১৯৭৫ সালের পরে যারা অবৈধভাবে সরকার গ্রহণ করেছিল তারা কিন্তু এই ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আমি জানি না, তাদের এই ব্যাপারে সম্মুক ধারণা ছিল কি না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের উদ্যোগের ফলে ১৯৯৬ সালে কিছু কাজ করে যাই, দ্বিতীয় দফা সরকারে আসার পর থেকে আমরা আবার উদ্যোগ নেই এবং সমুদ্রসীমায় আমাদের যে অধিকার তা নিশ্চিত করি। এক দিকে মিয়ানমার, অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক রেখেও আমরা আমাদের বিশাল সমুদ্র সীমা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে সামুদ্রিক ও নদীমাতৃক অর্থনীতির গুরুত্ব তুলে ধরেন। এ সময় তিনি আবারও বিশ্বব্যাপী অত্যাধিক মূল্যস্ফীতির প্রসঙ্গে সবাইকে সতর্ক ও মিতব্যায়ী হওয়ার আহ্বান জানান।
আরএ/
