দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ১২তম বাংলাদেশ

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের এক ধাপ অবনমন হয়েছে। গত বছর বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩তম। এবার বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম।
বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন ও বাংলাদেশের দুর্নীতির বিষয়টি উপস্থাপন করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, সিপিআই অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান হতাশাজনক। ১০০ স্কোরের মধ্যে এবার বাংলাদেশ পেয়েছে ২৫। দক্ষিণ এশিয়ার ৮ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান কেবল আফগানিস্তানের উপরে।
এর আগে সিপিআই ২০২১ অনুযায়ী, ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩তম। আর সিপিআই ২০২০ অনুযায়ী, ১৮০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ছিল ১২ নম্বরে।
এ বছর ১২ স্কোর নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ সোমালিয়া। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে সুদান ও সিরিয়া। ১৪ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে অবস্থান ভেনেজুয়েলার। আর এ বছর দুর্নীতিতে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে ডেনমার্ক। তাদের স্কোর ৯০। ৮৭ স্কোর নিয়ে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে আছে ফিনল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড ও ৮৪ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে নরওয়ে।
সিপিআই উপস্থাপনায় বাংলাদেশের নিম্ন অবস্থানের ব্যাখ্যা তুলে ধরে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছিল সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ঘোষিত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা’র সবচেয়ে আলোচিত মেয়াদ। কিন্তু এই মেয়াদে এই ঘোষণাকে চর্চায় রূপ দেওয়ার যথাযথ কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়নি। বরং এই মেয়াদে দুর্নীতির ব্যাপকতা আরো ঘনীভূত ও বিস্তৃত হয়েছে। কোভিড সংকট মোকাবিলায় সরকারি ক্রয় ও বিতরণ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমেও দুর্নীতির অসংখ্য তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই সময়ে বিদেশে অর্থ পাচারের আশঙ্কাজনক চিত্র উঠে আসলেও এর প্রতিরোধ ও প্রতিকারে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ঋণখেলাপি, জালিয়াতি ও অর্থপাচারে জর্জরিত ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বরং এজন্য যারা দায়ী তাদের জন্য বিচারহীনতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও আর্থিকসহ বিভিন্নভাবে অর্জিত ক্ষমতার অবস্থানকে অপব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদ বিকাশের লাইসেন্স হিসেবে ব্যবহারের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিকতায় রূপান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাব ব্যাপকতর হয়েছে।
এসজি
