চার লেনে উন্নীত হচ্ছে স্থলবন্দরের সঙ্গে যুক্ত সড়কগুলো: কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন, দেশের স্থলবন্দরগুলোর সঙ্গে যুক্ত সড়ক বা মহাসড়কগুলোকে পর্যায়ক্রমে চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে।
দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্থলবন্দরগুলোর সঙ্গে যুক্ত ও মহাসড়কসমূহের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। সেই লক্ষ্যে স্থলবন্দর সংযুক্ত সড়কসমূহের উন্নয়নের অংশ হিসেবে সিলেট-তামাবিল (তামাবিল স্থলবন্দর), আখাউড়া-ধরখার (আখাউড়া স্থলবন্দর) সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প চলছে।
রবিবার (২৯ জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব তথ্য জানান। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মমতা হেনা লাভলীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে সড়ক মন্ত্রী আরও জানান, ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল (বেনাপোল স্থলবন্দর), সিলেট শেওলা-সুতারকান্দি (শেওলা স্থলবন্দর) সংলগ্ন সড়কসমূহকে চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প প্রণয়ন কাজ চলছে।
এ ছাড়া, টেকনিক্যাল এসিস্ট্যান্স ফর সাব রিজিওনাল রোড ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি-২ (এসআরটিপিপিএফ-২) প্রকল্পের আওতায় রংপুর-বুড়িমারী (বুড়িমারী স্থলবন্দর) এবং রংপুর-বাংলাবান্ধা (বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর) প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি এবং ডিটেইল ডিজাইন সম্পন্ন হয়েছে। নাভারণ-সাতক্ষীরা-ভোমরা সড়কের ফিজিবিলিটি স্টাডি কাজ চলছে। রংপুর-বুড়িমারী, রংপুর-বাংলাবান্ধা, রংপুর-সোনাহাট সংলগ্ন সড়কসমূহকে চারলেনে উন্নীত করতে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
একই প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের জানান, বর্তমানে টেকনিক্যাল এসিস্ট্যান্স ফর রোড ট্রান্সপোর্ট কানেক্টিভিটি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি (আরটিসিআইপিপিএফ) প্রকল্পের আওতায় দর্শনা, হিলি, বিরল, বিবির বাজার, বিলোনিয়া, সোনারহাট, বাল্লা, গোবড়াকোড়া স্থলবন্দর সংলগ্ন সড়কসমূহের ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি সম্পন্ন হবে। এছাড়া রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ (সোনামসজিদ স্থলবন্দর) সংলগ্ন সড়কটির উন্নয়নে ২০১৫ সালে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি ও ডিটেইল ডিজাইন সম্পন্ন হয়েছে। এখন বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় ডিজাইন রিভিউ ও হালনাগাদ করা হবে।
সরকারি দলের সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির লিখিত প্রশ্নের সড়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, সারা দেশের সড়ক পথে রেল ক্রসিংগুলোতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধের লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ প্রকল্পের আওতায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সারা দেশে সড়ক পথে রেল ক্রসিংগুলোতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন যানবাহন চলাচলের জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করা হয়ে থাকে। ইতোমধ্যে দেশব্যাপি সড়ক পথে রেল ক্রসিংগুলিতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ২২টি রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, চলমান বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের আওতায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে এবং অন্যান্য ভবিষ্যৎ প্রকল্পের আওতায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ সকল রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণের ফলে রেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা এবং যানজট অনেকাংশে কমে আসবে এবং সড়কে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচল নিশ্চিত করা যাবে।
সরকারি দলের সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর লিখিত প্রশ্নের জবাবে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংসদকে জানিয়েছেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ যানবাহন এবং ফিটনেসবিহীন বা বিধি বহির্ভূত যানবাহনের বিরুদ্ধে বিআরটিএ নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে বিআরটিএর মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ২ হাজার ৬৪৮টি মামলায় ৭১ লাখ ৫২ হাজার ৫৯০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ সময় ৯টি গাড়িকে ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হয়েছে।
সরকারি দলের বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের জানান, বর্তমানে দেশে বিআরটিসি বাসের সংখ্যা এক হাজার ৩৫০টি। মেয়াদ উত্তীর্ণ যানবাহন ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে বিআরটিএ নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত আছে। এছাড়া জেলা ও হাইওয়েতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং হাইওয়ে পুলিশ এ বিষয়ে যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে।
এনএইচবি/এমএমএ/
