কমিটি করে যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণের বিধান রেখে বিল পাস

দেশব্যাপী উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত কমিটি করে স্থানীয়ভাবে যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণের বিধান রেখে ‘যাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা বিল-২০২২’ সংসদে পাস হয়েছে।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণ এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। তবে কতিপয় সংশোধনী গৃহীত হয়।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে সামরিক সরকারের আমলে জারিকৃত ‘যাকাত ফান্ড অর্ডিন্যান্স-১৯৮২’ বিলুপ্ত করে নতুন আইন প্রণীত হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, যাকাত সংগ্রহ, বিতরণ, ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরির ক্ষমতা বোর্ডের থাকবে। কমিটি গঠন সম্পর্কে বিলে বলা হয়েছে, স্থানীয়ভাবে যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণে কেন্দ্রীয়, সিটি কপোরেশন, বিভাগ, জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কমিটি গঠন করতে পারবে।
যাকাত তহবিল গঠন সম্পর্কে বিলে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে সংগৃহীত যাকাত, প্রবাসী বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক, কোনো বিদেশী মুসলিম ব্যক্তি বা কোনো সংস্থায় জমাকৃত যাকাতের অর্থ থেকে পাওয়া যাকাত এবং শরিয়াহ সম্মত অন্য কোনো উৎস্য থেকে পাওয়া যাকাত। শরিয়াহ সম্মত খাত ব্যতীত অন্য কোনো খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় বা বিতরণ করা যাবে না।
বিলে ধর্মমন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে যাকাত বোর্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে। এর সদস্য হবেন ধর্মসচিব (ভাইস চেয়ারম্যান), ধর্ম, অর্থ ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন করে যুগ্ম-সচিব পদ মর্যদার তিন কর্মকর্তা, সরকার মনোনীত ৫ জন আলেম, সরকার মনোনীত ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের দুইজন প্রতিনিধি এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (সদস্য সচিব)। বছরে এই বোর্ডের কমপক্ষে দুটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সরকার এ বোর্ডের পরিচালন ব্যয় বহন করবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাকাত দারিদ্র বিমোচন ও পুনর্বাসনের হাতিয়ার। যাকাত কোন স্বেচ্ছামূলক দান নয়, বরং যাকাত ধনীর সম্পদ থেকে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্থদের জন্য আল্লাহ নির্ধারিত বাধ্যতামূলকভাবে দেওয়া নির্দিষ্ট অংশ।
দেশে ব্যক্তিগগত পর্যায়ে যাকাত ব্যবস্থা চালু থাকলেও নানা কারণে তার কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া যাচ্ছিল না। যাকাতের মাধ্যমে এক সময় সারা মুসলিম জাহানে দারিদ্র দূরীকরণ সম্ভব হয়েছিল। এই আইন পাস হলে দেশ থেকে দারিদ্র দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
এনএইচবি/এমএমএ/
