শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ | ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

জাসদের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সোমবার, প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা

আগামীকাল ৩১ অক্টোবর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দলটির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হবে।

জাসদের সুবর্ণজয়ন্তীতে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তারও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর প্রতি।

রবিবার (৩০ অক্টোবর) জাসদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে জাসদের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক বাণীতে দেশবাসী ও জাসদের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী. সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তারা একইসঙ্গে জাসদের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যারা জাসদের সংগ্রাম এগিয়ে নিতে জীবন দিয়েছেন, আত্মত্যাগ করেছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন, জেল-জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

তারা বলেন, জাসদের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রমাণ হয়েছে, জাসদ নেতাদের দল নয়, কর্মীদের দল। দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বা দলের নেতৃবৃন্দ দলের পাহারাদার মাত্র। দলের যেসব সদস্য নিষ্ক্রিয় রয়েছেন বা দল ত্যাগ করেছেন, নেতারা তাদেরকে দলে সক্রিয় হতে ও ফেরত আসতে আহ্বান জানিয়েছেন এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার জনগণের মধ্যে গণভিত্তি মজবুত করতে নতুন-সদস্য সংগ্রহের জন্য দলের সকল সদস্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা

জাসদের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী: সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। বাণীতে তিনি বলেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই দলের সকল নেতা-কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

বাণীতে তিনি বলেন, জাতির পিতা যখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই স্বাধীনতা বিরোধী, পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করে। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে শুরু হয় হত্যা, ক্যু, সংবিধান, লঙ্ঘন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ধ্যান-ধারণার পুনর্বাসন এবং তাদের রাষ্ট্র-রাজনীতি-সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা। দেশবাসীর ওপর সামরিক শাসনের জগদ্দল পাথর চাপিয়ে দিয়ে কুচক্রী মহল তাদের উদ্দেশে অনেকটা চরিতার্থ করতে সক্ষম হয়। দেশ ধাবিত হয় এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে।

দেশের এমনি এক ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আমি ১৯৮১ সালের ১৭ মে ৬ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরে আসি ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ের সঙ্কল্প নিয়ে। ততদিনে কুচক্রীমহল সমাজের দুর্নীতি, অপরাজনীতি এবং সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ফেলেছে। শুরু হয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের লড়াই।

শেখ হাসিনা বলেন, তৎকালীন পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক বিভাজনের রাজনীতি এবং শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তিলাভের উদ্দেশেই এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে বাংলাদেশ হবে গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক এবং শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত। আর সে জন্যই যে সংবিধান তিনি উপহার দিয়েছিলেন সেটি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধম্যনিরপেক্ষতা এবং সমাজতন্ত্র- এই চারটি মূল স্তম্ভেবর উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

কিন্তু জাতির পিতাকে হত্যার পর ক্ষমতাদখলকারী শাসকচক্র পাকিস্তানী কায়দায় দেশে আবারও বিভাজনের রাজনীতি প্রবর্তন করে সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেয়। দেশে ফিরে এসে আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত হই।

বাণীতে তিনি বলেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বরাবরই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আমাদের সহযোগী হিসেবে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে।

আমি আশা করি অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও জাসদ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতা দখলের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে এবং দেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারা, উন্নয়ন ও শান্তির রাজনীতি অব্যাহত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমি এই দলের সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কর্মসূচি

জাসদের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী: সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আগামীকাল ৩১ অক্টোবর ২০২২ সোমবার ভোর ৬টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৬টায় শহীদ প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন ও বিকাল সাড়ে তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (মা-লে) সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ (মো) এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, জাতীয় পার্টি-জেপির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডা. অসিত বরণ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান প্রমুখ।

কেন্দ্রীয় কমিটির পাশাপাশি দলের সকল জেলা-উপজেলা কমিটি ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী: সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনে অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

জাসদের ইতহাস

১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর এম এ জলিল এবং ছাত্রলীগের এককালীন সাধারণ সম্পাদক, সরাসরি ভোটে নির্বাচিত ডাকসুর প্রথম ভিপি, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের শীর্ষ নেতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিএলএফ-মুজিব বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের উপ-অধিনায়ক আ স ম আব্দুর রবকে যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী বিধান কৃষ্ণ সেন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা শাহজাহান সিরাজ, সাবেক ছাত্র নেতা ও যুব নেতা নূর আলম জিকু, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী ক্যাপ্টেন সুলতান উদ্দিন আহমেদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা এডভোকেট রহমত আলীকে সদস্য করে ৭ (সাত) সদস্যের কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ যাত্রা শুরু করে। একই বছর ২২ ডিসেম্বর প্রথম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত মেজর এম এ জলিলকে সভাপতি এবং আ স ম আব্দুর রবকে সাধারণ সম্পাদক করে জাসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। সদ্য স্বাধীন দেশে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পরিহার করে গঠিত জাসদের সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে পরিচালিত গণআন্দোলন ব্যাপক গণসমর্থন লাভ করে। দেশের ছাত্র-তরুণ-যুব-শ্রমিক সমাজ জাসদের প্রতি আকৃষ্ট হন।

জাসদ সমাজতান্ত্রিক গণআন্দোলনের লক্ষ্যে গঠিত একটি সমাজতান্ত্রিক গণসংগঠন। সমাজতান্ত্রিক গণআন্দোলনের ধারাতেই ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জাসদ। সেই নির্বোচনে তিনটি আসন নিয়ে জাতীয় সংসদে জাসদ সোচ্চার বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের পাশাপাশি দেশব্যাপী গণআন্দোলন গড়ে তোলে। ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জাসদের স্মারকলিপি প্রদানের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে রক্ষীবাহিনী পরিকল্পিতভাবে সরাসরি নির্বিচার গুলিবর্ষণ-হত্যাযজ্ঞ চালায়। গুলিবর্ষণে রফিকুল ইসলাম জাফর, জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রবীর কুমার পাল, মোজাম্মেল হক ও মাহফুজউল্লাহসহ বেশ কয়েকজন জাসদ নেতা ঘটনাস্থলে নির্মমভাবে নিহত হন।

১৯৭৪ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হলে জাসদের উপর রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন আরো বেড়ে যায়। হাজার হাজার নেতা-কর্মী খুন-জেল-জুলুম-হুলিয়ার শিকার হন। এ রকম পরিস্থিতিতে প্রথমে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও পরে বিপ্লবী গণবাহিনী গঠন করেন। ১৯৭৫ এর ২৫ জানুয়ারি বাকশাল গঠন করা হলে জাসদ জাসদসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ হয়ে যায়।

খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্রকারীরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করে। বাকশাল সরকারের অনেকে খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রী সভায় যোগ দেন। তখন জাসদ কোনো ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে না থেকে তাৎক্ষণিকভাবে খন্দকার মোশতাকের ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে খন্দকার মোশতাকের বাসভবন কায়েকটুলি এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করে ও রুখে দাঁড়ায়।

সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং অনিশ্চয়তা থেকে দেশকে রক্ষা করতে জাসদ কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। বন্দীদশা থেকে মুক্ত জিয়া সিপাহীদের ১২ দফা দাবির সাথে বেঈমানি করেন। কর্নেল তাহের ও জাসদ নেতারাকে গ্রেপ্তার করেন। সামরিক আদালতে প্রহসনমূলক সাজানো মামলার বিচারের রায়ে ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা এবং জলিল-রব-ইনুসহ জাসদ নেতৃবৃন্দকে যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদী কারাদণ্ড দণ্ডিত করেন।

১৯৭৯ সালে জলিল-রব-ইনুসহ জাসদের শীর্ষ নেতৃত্ব কারাবন্দি রেখেই জিয়া তার সামরিক শাসনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেন। সেই নির্বাচনে জাসদের ৯ জন প্রার্থী বিজয়ী হন। প্রাথমিকভাবে জাসদের আরও বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হলেও পরবর্তী সময়ে ফলাফল পরিবর্তন করে তাদের বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

জিয়ার সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে জাসদ সংসদ ও রাজপথে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলে। এ সময় জাসদ জিয়ার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বৃহত্তর ঐক্যের নীতি-কৌশলের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ ও সিপিবিসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অপরাপর শক্তির সাথে ১০ দলীয় ঐক্য জোট গড়ে তোলে। এই রাজনৈতিক ঐক্যের বিরোধিতা করে জাসদের কতিপয় নেতা-কর্মী জাসদ ত্যাগ করে বাসদ গঠন করেন।

১৯৮২ সালে এরশাদের অবৈধ ক্ষমতা দখল ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে জাসদ আন্দোলন গড়ে তোলে। আন্দোলন-কৌশল নিয়ে জাসদের অভ্যন্তরে বিতর্কের এক পর্যায়ে জাসদের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম সিরাজুল আলম খান, জাসদের সাধারণ সম্পাদক আ স ম আবদুর রব প্রথমে রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা দেন। কিন্তু পরে ভিন্ন দল গঠন করেন। সভাপতি মেজর এমএ জলিলও জাসদ ত্যাগ করে ভিন্ন দল গঠন করেন।

১৯৯১-৯৬ সালে বেগম জিয়ার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জাসদ বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গঠন করে গণআন্দোলন সংগঠিত করে। জাসদ নেতা কাজী আরেফ আহমেদের উদ্যোগে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ঐতিহাসিক গণআদালত গঠিত হয় এবং গণআন্দোলন গড়ে ওঠে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদি-জঙ্গীবাদি শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দান ও দুর্নীতি-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জাসদের উদ্যোগে আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি বিপর্যস্ত আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়ায়। জাসদের উদ্যোগী ভূমিকায় ২০০৪ সালে ১৪ দলীয় জোট গড়ে উঠে।

এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

বিশ্বে প্রথমবার স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলার

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি তিন হাজার ডলারে পৌঁছেছে। আজ শুক্রবার (১৪ মার্চ) স্বর্ণের দাম ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে এই রেকর্ড পরিমাণে পৌঁছায়। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১৩ বার বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

মূলত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি ও ইউরোপের ওপর নতুন শুল্ক হুমকির কারণে বিশ্ববাজারে এই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ওয়াইন, শ্যাম্পেনসহ অন্যান্য অ্যালকোহলযুক্ত পণ্যের ওপর দুইশ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন।

বৈশ্বিক বাণিজ্যে এই অনিশ্চয়তার আশঙ্কায় স্বর্ণের দাম বাড়তে থাকে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মূলত যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত হুইস্কির ওপর ইউরোপের শুল্কের প্রতিশোধ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, যদি ইউরোপের শুল্ক অবিলম্বে প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা সব ধরনের ওয়াইন, শ্যাম্পেনসহ অ্যালকোহলযুক্ত পণ্যের ওপর দুইশ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।

এর আগে ট্রাম্প সব ধরনের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এর জবাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নও যুক্তরাষ্ট্রের ২৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে বলে বুধবার (১২ মার্চ) জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশন।

Header Ad
Header Ad

আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের সমুদ্র আছে : প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ তাদের একটি সমুদ্র আছে যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারে বিআইএএম অডিটোরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের একটি সমুদ্র আছে। ব্যবসার জন্য সমুদ্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বাংলাদেশের দীর্ঘ সমুদ্রতীরের কথা উল্লেখ করে বলেন, চট্টগ্রামের সমুদ্রতীরের যেকোনো স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং এটি কেবল একটি পর্যটন শহরই নয়, বরং অর্থনীতির কেন্দ্রও। তিনি আরও বলেন, নেপাল ও ভারতের সেভেন সিস্টার্সের কোনো সমুদ্র নেই, তাই তাদের জন্য বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ‘আমরা ব্যবসা করতে পারলে সবার ভাগ্য বদলে যাবে।’

ড. ইউনূস লবণ উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে জানতে চান বিদেশি আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে লবণ আমদানিতে আগ্রহী কিনা, কারণ কক্সবাজারের কৃষকদের উৎপাদিত লবণ এখন রফতানির সক্ষমতা অর্জন করেছে।

এছাড়া, তিনি পাইলট ভিত্তিতে কক্সবাজারে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা নিয়েও খোঁজ নেন।

প্রধান উপদেষ্টা স্থানীয় জনগণকে ভবিষ্যতের সুযোগগুলো কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘কক্সবাজার অর্থনীতির একটি বৃহৎ শক্তি এবং এটি তথ্যপ্রযুক্তিরও একটি শহর হতে পারে।’

মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান উপদেষ্টার সামনে তাদের প্রস্তাব ও দাবি পেশ করেন।

Header Ad
Header Ad

রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়: জাতিসংঘ মহাসচিব

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে চায়। এজন্য মিয়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকালে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে আমি দুটি স্পষ্ট বার্তা পেয়েছি। প্রথমত, আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই মিয়ানমারে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে হবে এবং রোহিঙ্গাদের অধিকার নিশ্চিত করে বৈষম্যের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে আরও ভালো পরিবেশ চায়। দুর্ভাগ্যবশত, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ সম্প্রতি নাটকীয়ভাবে মানবিক সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে খাবারের রেশন কমাতে বাধ্য হয়েছি। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যতটা সম্ভব দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলব, যাতে করে ফান্ড পাওয়া যায় এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ না হয়।’

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলে যাবে না এমন আশা প্রকাশ করে গুতেরেস বলেন, ‘সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার জন্য এই সম্প্রদায়ের মানবিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরি।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিশ্বে প্রথমবার স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলার
আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের সমুদ্র আছে : প্রধান উপদেষ্টা
রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়: জাতিসংঘ মহাসচিব
আওয়ামী লীগ নেত্রী রূপালি গ্রেফতার
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট পেতে আধা ঘণ্টায় ২০ লাখ হিট
দুই বছরের কন্যাকে হারালেন আফগান ক্রিকেটার হজরতউল্লাহ জাজাই
রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললেন জাতিসংঘ মহাসচিব
কুমিল্লায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় আতশবাজি জব্দ
সুন্দরবনের গহীন থেকে বৃদ্ধা নারী উদ্ধার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত
গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরো সাত লাশ উদ্ধার
জাতিসংঘ মহাসচিবকে নিয়ে কক্সবাজারে পৌঁছেছেন ড. ইউনূস
গালি দেয়া সেই উপস্থাপিকার চাকরি ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান হাসনাতের
প্রশাসনের ঢিলেঢালা আচরণে দুষ্কৃতকারীরা আশকারা পাচ্ছে: রিজভী
৬০তম জন্মদিনে নতুন প্রেমিকাকে প্রকাশ্যে আনলেন আমির খান
গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বাংলাদেশের পাশে থাকবে জাতিসংঘ: গুতেরেস
আমেরিকান এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ভয়াবহ আগুন, ডানা দিয়ে নামলেন যাত্রীরা
চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর সীমান্তে ৯ লাখ টাকার মাদক ও চোরাচালানি মালামাল জব্দ
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের সাক্ষাৎ
৩ ম্যাচ পর মাঠে ফিরেই মেসির দুর্দান্ত গোল, কোয়ার্টারে ইন্টার মিয়ামি (ভিডিও)