মিয়ানমারের দুঃখ প্রকাশ

আকাশসীমা লঙ্ঘন ও মিয়ানমারের গোলা বাংলাদেশ এসে পড়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাহিনীটি।
রবিবার (৩০ অক্টোবর) প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টার পতাকা বৈঠক শেষে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের প্রধান বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ ইফতেখার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বৈঠকের শুরুতে বিজিবি সীমান্তের গোলাগুলি বিষয়ে আলোচনা করে। সেখানে একাধিকবার বাংলাদেশের ভেতরে মিয়ানারের গোলা পড়া ও হেলিকপ্টারে আকাশসীমা লঙ্ঘনের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। এসময় দুঃখ প্রকাশ করে বিজিপি প্রতিশ্রুতি দেয় ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।
খালিদ মোহাম্মদ বলেন, এ ছাড়া সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি-বিজিপি একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। বৈঠকে অনুপ্রবেশ রোধ ও মাদক চোরাচালান বন্ধ করতে কাজ করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
লে. কর্নেল খালিদ মোহাম্মদ জানান, বৈঠকে বিজিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে সীমান্তে নানা অপরাধ করছে। বিজিবির পক্ষ থেকে এ কথা অস্বীকার করা হয়। বিজিবির পক্ষে জানানো হয়, কখনো কোনো সময় বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোনো প্রকার সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশ কোনো সহায়তা করে না। ভবিষ্যতেও সন্ত্রাসীদের রোধে বাংলাদেশ কঠোর অবস্থানে থাকবে।
তিনি জানান, এ ধরনের সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী যৌথভাবে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
বৈঠক শেষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবির রামু সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ বলেন, পতাকা বৈঠকটি নিয়মমাফিক বৈঠকের একটি অংশ। তিন মাস ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলা গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে বৈঠক করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। উত্তেজনাকর সীমান্ত পরিস্থিতিতে সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হন। এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় বিজিবির পক্ষ থেকে বিজিপির কাছে একাধিকবার চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজিপি বৈঠকে বসতে রাজি হয়। বৈঠকটি আন্তরিক পরিবেশে শেষ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রবিবার সকাল ৯টার দিকে বিজিপির ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি একটি স্পিড বোটে করে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে পৌঁছে। বৈঠকে বিজিবির ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এতে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার। অন্যদিকে বিজিপির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিয়ানমারের পিউন ফিউর ১১ বর্ডার গার্ড পুলিশের অধিনায়ক কর্নেল ইয়ে ওয়াই শো। বৈঠকটি নিয়মমাফিক অব্যাহত রাখার জন্য দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীই রাজি হয়েছে।
এসজি
