‘বিরোধী দল মাঠে নামায় হাওয়া ভবনের আশায় কিছু ব্যবসায়ী’

দলের নাম উল্লেখ না করে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন একটু যখন অপজিশন মাঠে নেমে গেছে হঠাৎ, ব্যবসায়ী মহলে আবার একটু শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে অথবা কারো আসার প্রদীপ জ্বলে উঠছে; যদি আবার হাওয়া ভবন খুলতে পারে তাহলে কী সুবিধা পাবে।’
বুধবার (২৬ অক্টোবর) গণভবনে ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৪ বছর আমরা সরকারে, আমি জানি না ব্যবসায়ীরা এটা উপলব্ধি করে কি? করে না? এত নিশ্চিন্তে ব্যবসা করার সুযোগ তো আর পাননি।
বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এই সংকটে বাংলাদেশ একা না, পৃথিবীর সব দেশই কিন্তু ভুগছে। এটা মাথায় রাখতে হবে। আজকে যেসব জায়গা থেকে আমরা সার, গম, খাবার পণ্য আনি সব জায়গায় সমস্যা।
মেগা প্রজেক্ট ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে সরকারের সমালোচনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, মেগা প্রজেক্ট, তারপর বিদ্যুৎ নিয়ে সমালোচনা, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট কেন আনলাম সেটা নিয়ে সমালোচনা। সেখানে নাকি টাকা মেরেই খেয়ে দিলাম। যারা ওরকম টাকা খেয়ে অভ্যস্ত টাকা খাওয়ার বিষয়টা বুঝে ভালো। কিন্তু আমরা যদি তখন এটা না আনি বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে পারতাম না। আমরা বলেছিলাম বিদ্যুৎ ঘরে ঘরে দেব, আমরা দিয়েছি। কিন্তু এখন যে সমস্যা সেটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবাই ভুগছে।
ব্রাজিল থেকে সয়াবিন ও চিনি আমদানি করার চেষ্টার কথা জানান সরকার প্রধান। দুর্ভিক্ষ আসতে পারে এমন বক্তব্যের সমালোচকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি কিন্তু আগাম কিছু কিছু কথা বলি- অনেকে মনে করেন আমি কেন বলি? কই থেকে বলি? এটা হচ্ছে আমার একটা ধারণা অর্থাৎ দীর্ঘদিনের একটা অভিজ্ঞতা।
শেখ হাসিনা বলেন, যখন ইউক্রেন আর রাশিয়ার যুদ্ধটা হলো সারা বিশ্বে এটার অর্থনৈতিক ধাক্কা এল কিন্তু। শুধু আমাদের ওপর নয়, উন্নত দেশের উপরেও এর প্রভাব আরও ব্যাপকভাবে পড়ল। তখন আমি বললাম যে আগামীতে একটা দুর্ভিক্ষ অবস্থা হতে পারে। এখন তো সবাই সে কথাই বলছে, কালকে বৃটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী গতকালকে তার বক্তব্যে বলেছে যে বিরাট সংকট সামনে। এটা যে শুধু আমরা বলছি তা নয়।
টানা তিনবারের সরকার প্রধান বলেন, আমি যেটা আশঙ্কা করি আমি জনগণের কাছে সরাসরি বলি। আমার এখানে লুকানোর কিছু নেই। জনগণ ভোট দিছে ক্ষমতায় আছি, না দিলে থাকব না। কিন্তু জনগণের জন্যই তো কাজ করতে এসেছি।
গণভবনে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংকরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ.এইচ.এম সফিকুজ্জামান।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমানসহ টিকে গ্রুপ, সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড, এস. আলম গ্রুপ, দেশ বন্ধু গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এসিআই লিমিটেড, আকিজ গ্রুপের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/এসএন
