ফুটবল বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশে আসবেন কাতারের আমির

কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল সানি ফুটবল বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের পর সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কাতারের রাষ্ট্রদূত সেরায়া আলী মাহদি সাইদ আল কাহতানি।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতকালে রাষ্ট্রদূত এ কথা জানান। এসময় তারা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রতিরক্ষা, জনশক্তি ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি গত মাসে দোহায় দ্বিতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) আয়োজন করার জন্য কাতারকে ধন্যবাদ জানান।
দ্বিতীয় এফওসি’র আলোচনার কথা উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, কাতারে ডাক্তার, নার্স, ইঞ্জিনিয়ার ও টেকনিশিয়ানসহ জনবল নিয়োগ, বাংলাদেশে এলএনজির সরবরাহের কোটা, খাদ্যশস্য ও কৃষিপণ্যের সরাসরি সরবরাহের মাধ্যমে কাতারের খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখতে বাংলাদেশের আগ্রহ, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানো এবং বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্কে কাতারের বিনিয়োগ এবং রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উঠে এসেছে।
বৈঠকে কাতারের রাষ্ট্রদূত জানান, দ্বিতীয় এফওসি’র পর উভয় পক্ষই দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, কাতারের আমীর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে খুবই আগ্রহী এবং তিনি ফিফা বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টের পর ঢাকা সফরের জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। তিনি এসময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির বরাবরে কাতারের আমির কর্তৃক আমন্ত্রণ গ্রহণের আনুষ্ঠানিক পত্রটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
কাতারের সঙ্গে তার পুরানো স্মৃতি স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত দুই দশকে কাতারে ঘটে যাওয়া আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং একটি আধুনিক ও উন্নত দেশে রূপান্তরের ক্ষেত্রে কাতারের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাতারে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক কর্মী নিয়োগের উদ্যোগের জন্য কাতারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের কর্মীরা দুই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেছে যেখানে কাতারের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে পারে এবং এলএনজি এবং বিদ্যুৎ খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে কাতারকে আহ্বান জানান।
আগামী নভেম্বরে দোহায় বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট আয়োজনে দেশটির অসাধারণ প্রস্তুতির জন্যও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাতারি নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। আসন্ন উচ্চপর্যায়ের সফর সফল করতে দুই দেশ প্রচেষ্টা চালাবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
কাতারের রাষ্ট্রদূত আগামীতে বাংলাদেশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহের কথাও জানান। তিনি এসময় ফিফা বিশ্বকাপের একটি রেপ্লিকা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
আরইউ/আরএ/
