সরকারবিরোধী তথ্য আদান-প্রদানের জেরে অবসরে ৩ পুলিশ কর্মকর্তা!

চাকরির নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। এসব বিষয় নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আদান–প্রদান করতেন। কোনো কাজ করতেন না। তাদের অবসরের নথিতে এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছে।
অবসরে পাঠানো পুলিশ সুপাররা হলেন-সিআইডির মীর্জা আবদুল্লাহেল বাকী ও মুহাম্মদ শহীদুল্ল্যাহ এবং পুলিশ অধিদপ্তরের দেলোয়ার হোসেন মিঞা। এদের মধ্যে মুহাম্মদ শহীদুল্ল্যাহ চৌধুরী ও দেলোয়ার হোসেন মিঞা বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ১২তম ব্যাচের। আর মীর্জা আবদুল্লাহেল বাকী বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা।
তাদেরকে অবসরে পাঠানোর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়েছে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এদিকে অনেকেই মনে করছেন, সরকারবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছিল বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে উল্লেখ করেন।
যদিও সিআইডির এসপি আবদুল্লাহেল বাকী তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না। এখন তারা (সরকার) অনেক কিছু বলতেই পারেন। কিন্তু আমি কাজ না করলে তো আমাকে কয়েক দিন আগেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিতে দুবাই পাঠাতেন না। দীর্ঘদিন আমাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। কেন দেওয়া হয়নি, আমি জানি না।’
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘তারা কোনো কাজ করেন না। হাজিরা দিয়ে চলে যান। তাদের পেছনে ৮–১০ জন কনস্টেবল থাকেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা ফেসবুকে ভুয়া সংবাদ আদান–প্রদান করেন। পুলিশ সদর দপ্তর আমাদের কাছে তাদের অবসরে পাঠানোর প্রস্তাব পাঠালে আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, আরও প্রায় পাঁচ থেকে ছয় জন সচিবসহ সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেককেই জনস্বার্থে অবসরে পাঠানো হতে পারে।
এর আগে তথ্য সচিব মকবুল হোসেনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছিল। পরে তিনি দাবি করেন, সরকারবিরোধীদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। কোন অপরাধে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো সেটা জানেন না তিনি। নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে কখনোই আপস করেননি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
কেএম/এসআইএইচ
