বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক জোরদারে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ: স্পিকার

বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক আরও জোরদার করণে সকলকে, বিশেষ করে দুই দেশের গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রাখবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘দুই দেশের গণমাধ্যমের মধ্যকার সম্পর্কের মধ্য দিয়ে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটি আরও কার্যকর হবে। আমরা বিশ্বাস করি দুই বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের মধ্যে যেকোনো সমস্যা আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান করা সম্ভব।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক ও গণমাধ্যমের ভূমিকা: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী একথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে সেমিনের সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্যা ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ভারতীয় সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি গীতার্থ পাঠক, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, এ দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে যে প্রতিষ্ঠান কখনো আপস করেনি, সেটি মুক্ত বুদ্ধি ও মুক্ত চিন্তার বাতিঘর অন্যতম জাতীয় প্রেসক্লাব।
বহুমত ও বহুমতের মানুষের এক বহু নৈতিক সমাবেশ ঘটে এই জাতীয় প্রেসক্লাবে। জাতীয় প্রেসক্লাব গণতন্ত্র ও সহিষ্নতার আধার। অস্প্রাদায়িক গতিশীল চেতনার ধারক। স্বাধীন বাংলাদেশের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ বটে।
প্রেসক্লাব স্বাধীন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গণতন্ত্র ও অসাস্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির আলোর কেন্দ্র। এই কারণে দেশের মানুষ, জনতা ও জনপ্রনিধিদের আশ্রয় ও ভরসার স্থল জাতীয় প্রেসক্লাব।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকটময় রাজনীতির নতুন যে সমীকরণ সেখানে বাংলাদেশ এবং ভারত শুধু ভৌগলিক সীমান্ত সম্পর্কে আবদ্ধ নয় বরং ৫০ বছর ধরে দুই দেশের অর্থনীতি, শিল্প, সাহিত্য যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানা ক্ষেত্রে পরস্পরের উপর নির্ভরশীল।
স্পিকার বলেন, ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো এবং অকৃত্রিম প্রতিবেশী বন্ধু। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেয় ভারত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ১ কোটি শরণার্থী আশ্রয় দেয়। বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।
স্পিকার বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতাকে হত্যার পর এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ছেদ পড়লেও ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে সরকার গঠন করা হয় তার মধ্য দিয়ে এই সম্পর্ক দিনে দিনে আরও প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সুসংহত হয়।
পরবর্তীকালে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর দুই দেশের পারস্পারিক সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বহুমাত্রিক। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সম্পর্ক প্রসারের দৃষ্টি ভঙ্গিতে চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে কাজে লাগাতে হবে। ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক কীভাবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুসংহত করতে পারি সেই বিষয়টির ক্ষেত্রে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।’
বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবে পারস্পরিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতায় বিশ্বাসী। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও জোরদার করণে সকলকে, বিশেষ করে দুই দেশের গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রাখবে বলে আশা প্রকাশ করনে তিনি।
দুই দেশের গণমাধ্যমের মধ্যকার সম্পর্কের মধ্য দিয়ে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটি আরও কার্যকর হবে। আমি বিশ্বাস করি দুই বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের মধ্যে যেকোনো সমস্যা আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান করা সম্ভব, যোগ করেন তিনি।
এসএম/এমএমএ/
