শিক্ষা থেকে সংস্কৃতি দূরে চলে গেছে: আরেফিন সিদ্দিক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, ‘একুশ আমাদের দেশে যে কত বড় শক্তি সেটি আমরা বুঝতে পারি, সেই একুশের পথ ধরেই ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে নানা পদক্ষেপ নিয়েই আজকের বাংলাদেশ। তেমনি ভাবে 'পদক্ষেপ বাংলাদেশ' সংগঠনের একুশ বছর পূর্তি উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা। এটা হয়তো ছোট্ট পদক্ষেপ। আমরা কিছু জ্ঞানী গুণি মানুষকে পুরস্কৃত করতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের আরও বহু মানুষ আছেন যাদের কে আমরা এখন পর্যন্ত হয়তো পুরস্কৃত করতে পারিনি।’
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এইসব কথা বলেন। পদক্ষেপ বাংলাদেশ নামক একটি সংগঠন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এসময় পদক্ষেপ বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১ এর পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদান করে।
পদক্ষেপ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যাদেরকে পুরস্কৃত ও সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে তাদেরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘আমাদের সমাজে এই ধরণের কাজ গুলো এখন বিরল হয়ে গেছে। মৃত্যুর ছয় মাস আগে ৮ মার্চ টাঙ্গাইলে একটি কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভাষণে বলছেন; আমি অত্যন্ত ক্লান্ত মাওলানা ভাসানীর অনুরোধে আমি এখানে এসেছি, এখান থেকে নাটোর যাব। আমার বাবা অসুস্থ অবস্থায় খুলনায় আছেন তাকে দেখতে যেতে হবে। তবে খুব গুরুত্ব দিয়ে ছাত্রদের উদ্দেশ্য বলেছিলেন; ভাইরে তোমরা শুধু ডিগ্রি অর্জন করলে শিক্ষিত হবে না, শিক্ষার জন্য তোমাদের আরও অনেক কিছু জানার প্রয়োজন আছে। একজন রিক্সা শ্রমিক সেও সম্মানিত ব্যক্তি, একজন কৃষক সম্মানিত ব্যক্তি। কারণ তারা সৎভাবে জীবন যাপন করেন। আর আমরা যারা তথাকথিত শিক্ষিত আমরা দুর্নীতি করি, অন্যায়ভাবে সম্পদ অর্জন করি। এই কথাও বলেছিলেন তিনি- আমি কী কালকে বাঁচব কিনা সেটা জানি না। এক ঘন্টা পরে বেঁচে আছি কিনা সেটাও জানি না, এই মুহুর্তের পরও বেঁচে থাকব কি না জানি না। তারপরও এই সম্পদ আহরণে ব্যাধিগ্রস্ত।’
তিনি বলেন, ‘আজকে শিক্ষা থেকে সংস্কৃতি দূরে চলে গেছে। শিক্ষা এবং সংস্কৃতিকে যদি আমরা বিয়োজন করি তাহলে যে অবস্থায় দাঁড়ায় আজকে আমরা সেই অবস্থায় আছি। অথচ বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম যেদিন মন্ত্রীসভা গঠন করেন তখন শিক্ষা সংস্কৃতি ও ক্রীড়া কে একটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এনেছিলেন। বাস্তবতায় প্রজাতন্ত্রের পরিধি ও সংখ্যা বেড়ে গেছে; সবই ঠিক আছে, কিন্তু শিক্ষা সংস্কৃতি ও ক্রীড়াকে যদি সমন্বয় না করা যায়- শিক্ষা দিয়ে হয়তো ডিগ্রি দেওয়া যায়। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় বিদ্যা অর্জন করা সহজ কিন্তু শিক্ষা অর্জন কঠিন। শিক্ষা আচরণ বিদ্যা আবরণ। অর্থাৎ আমরা যদি শিক্ষা সঠিক ভাবে নিতে পারতাম তাহলে আজকে দেশের সার্বিক অবস্থা অনেক উন্নত সম্বৃদ্ধ করা যেত।’
উৎসব উদ্বোধন ও পদক্ষেপ আজীবন সম্মাননা ২০২১ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান। বর্ষপূর্তি সম্মাননা ২০১৯ পেয়েছেন ডা. তৃপ্তীশ চন্দ্র ঘোষ, বর্ষপূর্তি সম্মাননা ২০২০ পেয়েছেন ডা. মল্লিকা বিশ্বাস, বর্ষপূর্তি সম্মাননা ২০২১ পেয়েছেন ম. জয়নুল আবেদীন রেজা।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বাদল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুন নিসা।
এমএইচ/এএস