জমির খতিয়ান ও নকশার জন্য আবেদন করা যাবে ফোনে

এখন থেকে ১৬১২২ নম্বরে ফোন করেই খতিয়ান ও ম্যাপের আবেদন করতে পারবেন ভূমি মালিক। এ ছাড়া জমির মালিক খতিয়ান ও নামজারি ফি এবং ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে প্রদান করতে পারবেন। সেইসঙ্গে ডাকযোগে খতিয়ান (পর্চা), জমির নকশা নিজ ঠিকানায় নিতে পারবেন।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ভূমি ভবন মিলনায়তনে ডাকযোগে ভূমিসেবা, ভূমিসেবায় ডিজিটাল পেমেন্ট এবং কল সেন্টারের মাধ্যমে ভূমিসেবা-এর উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
এ সেবামূহের ফলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারী কর্তৃক ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ হ্রাস পাবে এবং ই-পর্চা, ই-রেজিস্ট্রেশন, এলডি ট্যাক্স সিস্টেম, ভার্চুয়াল শুনানি সিস্টেমের সাথে ইন্টিগ্রেশন হবে। এ ছাড়া, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে তাৎক্ষনিক ফি জমা প্রদান করার সুযোগ এবং ভূমি অফিসে না গিয়েই অনলাইনে ডিসিআর সংগ্রহ করার সুযোগ সৃষ্টি হলো নাগরিকের। এতে মানুষের অর্থ-খরচ ও ভোগান্তি অনেকাংশে লাঘব পাবে।
ভূমি ডিজিলাইজেশন ব্যবস্থার উদ্বোধন করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন হবার সঙ্গে সারাদেশে ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে’ সম্পন্ন হয়ে গেলে নতুন ভূমি কিংবা জেগে ওঠা চর ছাড়া পরবর্তীতে আর ভূমি জরিপের (জরিপ বলতে এখানে ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ) প্রয়োজন হবে না। ভূমি হাত বদলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে খতিয়ান ও নকশা প্রস্তুত হয়ে যাবে, ফলে যুগযুগ ধরে জরিপের হয়রানি থেকে দেশের মানুষ রক্ষা পাবে।
ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ও মানুষকে সেবা করার ব্রত নিয়ে তিনি কাজ করার চেষ্টা করছেন। ভূমি মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভূমিসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছতে পারাই তার উদ্দেশ্য।
মন্ত্রী জানান, ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশন ছাড়া আইন ও বিধি সংশোধন হচ্ছে। হাট ও বাজার আইনের আওতায় ভূমিগুলোতে স্থানীয় পৌরসভার সঙ্গে যৌথভাবে উন্নয়ন কাজ করা হবে।
অনুষ্ঠানে ভূমি সচিব জানান, ইতোমধ্যে ৩ কোটি ৪০ লক্ষ হোল্ডিং এন্ট্রি হয়ে গিয়েছে। প্রায় দেড় কোটি মানুষ অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছে ১২ কোটি টাকা ভূমি উন্নয়ন কর হিসেবে আদায় হয়েছে। ১ লাখ ৩৯ হাজার মৌজা ম্যাপ ডিজিটালাইজেশন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৫ কোটি ১২ লক্ষ ডাটা ডিজিটাল রেকর্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে এন্ট্রি করা হয়েছে। ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ ও মালিকানার তথ্য যুক্ত করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুইজন নাগরিক সরাসরি ভূমি সেবা গ্রহণ করেন। একজন ১৬১২২ নম্বরে কল করে খতিয়ান এবং ইউডিসি-এর মাধ্যমে অপরজন জমির মৌজা ম্যাপের আবেদন করেন। অনুষ্ঠানে ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনার উপর-এর একটি সচিত্র উপস্থাপনা করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন মনিটরিং সেলের প্রধান ড. মো. জাহিদ হোসেন পনির। বঙ্গবন্ধুর ভূমি সংস্কার বিষয়ক একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয় অনুষ্ঠানে।
ভূমি সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান। অতিথি ছিলেন ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের ভূমি ব্যবস্থাপনা ডোমেইন বিশেষজ্ঞ সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ।
এনএইচবি/এমএমএ/
