যেকোনো দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দেন: প্রতিমন্ত্রী

যেকোনো দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা উল্লেখ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবরকম দুর্যোগে সবসময় সজাগ থাকেন। যেকোনো দুর্যোগ দূর্ঘটনা ঘটলে যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা প্রশমিত না হয় তিনি ঘুমান না, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সারাক্ষণ টেলিফোনে নির্দেশ দিয়ে থাকেন, পরামর্শ দিয়ে থাকেন, সাহস দেন।’
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা নদীবন্দর (সদরঘাট) নৌ টার্মিনালে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার
‘ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডে সচেতনতা বৃদ্ধির মহড়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান (এমপি) এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘গত সিলেটের বন্যায় প্রধানমন্ত্রী দ্রুত পদক্ষেপ না নিতেন, লক্ষ লক্ষ মানুষ পানির নিচে ডুবে মারা যেত। আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্ট গার্ড, পুলিশ, বর্ডার গার্ড পুলিশ, ফায়রা সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আনসার ভলেন্টিয়ার সবার যা বোট আছে তাই নিয়ে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজ চালিয়ে যেতে। সেনাবাহিনীর ৬টি হেলিকপ্টার সিলেট-সুনামগঞ্জে অনুসন্ধান চালিয়েছে এবং সেনবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, ফাইয়ার সার্ভিস, বর্ডার গার্ডের বোট একযোগে কাজ করছে। যার জন্য একদিনে ৯ লক্ষ ৫০ হাজার লোককে উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী সজাগ না থাকলে, হয়তো এই মানুষগুলো পানিতে ডুবে মারা যেতো। যেদেশের প্রধানমন্ত্রী জেগে থাকেন, দুর্যোগে ঘুমান না, সেদেশের মানুষের হতাশ হওয়ার নেই, আপনাদের পাশে প্রধানমন্ত্রী সবসময় জেগে মঙ্গলের জন্য কাজ করেন।’
এসময় তিনি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যদের সাহসিকতার প্রশাংসা করে বলেন, 'দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেল। এর সব কৃতিত্ব আমাদের ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সদস্যদের। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ১৩ জন সদস্য, গুলশানে একজন সদস্য জীবন হারিয়েছেন। তাদের জীবন হারিয়েছেন। তাদের সাহস, সক্ষমতা, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার জন্য আজ বাংলাদেশ রোলমডেল হতে পেরেছে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই হাজার ২৭২ কোটি টাকার উদ্ধার সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিভাগীয় এবং জেলা পর্যায়ের শহর সমূহের জন্য ৬৫ ও ৫৫ মিটার উচ্চতায় উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর লক্ষ্যে উন্নত মানের লেডার (মই) ক্রয় করা হয়েছে। যেকোনো দুর্যোগে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে উন্নত দেশের মত সক্ষমতা অর্জনে সরকার কাজ করছে বলে অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালায়ের সচিব মো. কামরুল হাসান বলেন, দুর্ঘটনা কখনো বলে আসে না, তাই প্রস্তুত ও সতর্ক হতে হবে। চুরিহাট্টা, নিমতলির ঘটনা, এমনকি সদরঘাটে লঞ্চেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা থেকে আমাদের বুঝতে হবে, প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। যেকোনো নির্মাণের সময় অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেইন্স পরিচালক লে. কর্ণেল জিল্লুর রহমান পিএসসি বলেন, পুরান ঢাকা ঐতিহ্যবাহী এলাকা, এখানে অনেক পুরাতন, নতুন ভবন আছে। এই ভবনগুলো অতন্ত্য ঝুঁকিপূর্ণ। প্রকৃতিক দুর্যোগ ভূমিকম্প ও মানবসৃষ্ট দূর্যোগ অগ্নিকাণ্ড, যার ঝুঁকি পুরান ঢাকার মধ্যে বিদ্যমান। তাই এই এলাকার মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে, বাসস্থান ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবস্থা রাখতে হবে। তাহলে যেকোনো পরিস্থিতিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো যাবে।
ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাটের ৪ নং টার্মিনালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এ মহড়ার আয়োজন করে। মহড়া শেষে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালায়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আব্দুল ওয়াদুদ, ডিএসসিসি'র আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হায়দার আলী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালায়ের উপ সচিব সেলিম আহমেদ প্রমুখ।
এমএমএ/
