নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে নির্দেশ সিইসির

নির্বাচনকালে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেন, ‘আপনারা আচরণবিধি মেনে আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব গণকর্মচারী হিসেবে বা সরকারি কর্মচারী হিসেবে পালন করবেন, দলীয় কর্মচারী হিসেবে নয়।’
শনিবার (৮ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সকাল ১০টায় জেলা পরিষদ নির্বাচন ও অন্যান্য নির্বাচন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংকালের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।
নির্বাচনের সময় পুলিশ প্রশাসন কোনো একটি দলের হয়ে কাজ করে থাকে এ বিষয়ে আপনারা তাদের কিছু বলেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবের সিইসি বলেন, ‘আমরা বলেছি এটা করবেন না। সবসময় এটা করে, এটাও আমরা বিশ্বাস করি না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে বাস্তব।’
তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপাররা জনগণের খুব কাছাকাছি থাকেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকার এবং দল এমনভাবে মিশে থাকে যে একটা থেকে আর একটা আলাদা করা বেশ কষ্টসাধ্য। যার ফলে অনেক সময় হয়তোবা প্রভাব চলে আসতে পারে। তারপরেও আমরা দেখেছি আমাদের জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেন। কোনো ক্ষেত্রে যদি ব্যত্যয় ঘটে থাকে আমরা বলেছি আপনাদের কর্মে কোনো শৈথিল্য থাকবে না। নির্বাচন কমিশন এবার শক্ত অবস্থানে থাকবে। আপনারা আচরণবিধি মেনে আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব গণকর্মচারী হিসেবে বা সরকারি কর্মচারী হিসেবে পালন করবেন, দলীয় কর্মচারী হিসেবে নয়।’
নির্বাচনের সময় প্রশাসন সরকারের অধীনে থাকবে নাকি নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবের সিএসই বলেন, ‘আইনে পর্যাপ্ত ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তার ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। ভোটের সময় শুধু ভোট চলেনা দেশের সবকিছুই চলতে পারে। স্কুল কলেজ চলতে থাকে লেখাপড়া চলতে থাকে, আমদানি রপ্তানি সবকিছুই চলতে থাকে। বিভিন্ন কাজ বিভিন্ন দপ্তর দায়িত্ব পালন করে থেকে আমাদের যেটুকু দায়িত্ব আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জনপ্রশাসন আর প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে বাহিনীগুলো আছে, সেনাবাহিনীকেও প্রয়োজন হতে পারে। তারা অবশ্যই নির্বাচনের সময় আমাদের অধীনে থাকবে। আমাদের যেকোনো নির্দেশনা মানতে এবং প্রতিপালন করতে বাধ্য থাকবে। যদি অবাধ্য হয় তাহলে আমাদের তরফ থেকে যা করণীয় সেটা আমরা করব।’
মাঠ প্রশাসন এর কাছে রাজনৈতিক চাপ রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওইভাবে চাপ ওনাদের নেই। ওনারাও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন যে উনারা নিরপেক্ষ আচরণ করবেন।
সিইসি আরও বলেন, নির্বাচনের সময় যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে কাউকে হয়রানি করা না হয় সেটা আমরা বলেছি। নির্বাচনের এখনো এক বছর দুই মাস বাকি আছে। আমরা আগেই শুরু করেছি ওনাদের সব বিষয়ে অবগত করার জন্য। ওনাদের আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। আগামী নির্বাচন যেন সবার আস্থা অর্জন করতে পারে, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়।’
প্রশাসনের কাছ থেকে প্রস্তাব এসেছে ভোট সিস্টেমে কিছু সংস্কারের এ বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘ওনারা কিছু উন্নয়নের কথা বলেছেন। ভোট কেন্দ্র পুনঃবিন্যস্ত করার কথা বলেছেন। কেন্দ্র কমিয়ে বুথ বাড়ানোর কথা বলেছেন আমরা বিষয়টা বিবেচনা করব।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবীব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর প্রমুখ।
এসএম/এমএমএ/
