‘বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড সম্পর্ক সভ্যতা ও আধ্যাত্মিক বন্ধনে নিহিত’

বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড সম্পর্ক সুদৃঢ় সভ্যতা, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও আধ্যাত্মিক বন্ধনে নিহিত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় থাই দূতাবাসের এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি ১৯৭২ সালে থাইল্যান্ডের স্বাধীন বাংলাদেশের সদয় স্বীকৃতি, এটি করা প্রথম আসিয়ান দেশ হিসেবে। আমি প্রয়াত রাজা ভূমিবলকেও স্মরণ করি যিনি এই প্রাথমিক স্বীকৃতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
উভয় দেশ বছরব্যাপী কর্মসূচির মাধ্যমে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি পালন করছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের জনগণের মধ্যে ব্যাপক যোগাযোগ রয়েছে কারণ আমাদের লোকেরা প্রায়শই পর্যটন, চিকিৎসা, ব্যবসা এবং শিক্ষার উদ্দেশে ভ্রমণ করে। ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং বিমসটেক অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে তার সম্পর্কের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়।
দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং মূল্যবোধের অভিন্নতা এবং ভাগ করা স্বার্থের মাধ্যমে বিকশিত হয়েছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পর্যটন এবং সংযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৈচিত্র্যময় হয়েছে। উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি আমাদের যৌথ অঙ্গীকার দুই দেশকে পারস্পরিক স্বার্থের অনেক ক্ষেত্রে কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। আমাদের উভয় দেশেরই দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তর সংযোগের সুবিধা প্রদানকারী হিসাবে বিকশিত হওয়ার উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের অঞ্চলে একটি টেকসই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে অভিন্ন এজেন্ডা ভাগ করে নেয়, যেখানে শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বিরাজ করবে। বাংলাদেশ আসিয়ানের সঙ্গে রাজনৈতিক, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগ জোরদার করতে চায়। আমরা আসিয়ান সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার জন্য বাংলাদেশের বিডের জন্য থাইল্যান্ডের সমর্থন চাই, বিশেষত এই বছরের মধ্যে।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে থাইল্যান্ডের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশ গত পাঁচ বছর ধরে ১২ লাখ মিয়ানমারের নাগরিককে আশ্রয় দিয়ে আসছে যারা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়েছিল। এত বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার ভারী বোঝা বাংলাদেশের জন্য চরমভাবে অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। আমরা থাইল্যান্ডসহ আসিয়ান সদস্য দেশগুলোর আরও সক্রিয় ভূমিকা চাই, যাতে এই মায়ানমার নাগরিকদের তাদের স্বদেশে দ্রুত প্রত্যাবাসন করা যায়।
আরইউ/আরএ/
