রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘নিয়মবহির্ভূত’ মার্কিন উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ

ঢাকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসসহ বিভিন্ন দাতাসংস্থার প্রতিনিধিদের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ‘নিয়মবহির্ভূত’ উপস্থিতি পেয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে। সূত্র জানায়, গোপনে স্থানীয় হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মার্কিন দূতাবাস দুই বছরের জন্য গাড়ি পার্কিং চুক্তিও করেছে।
গোয়েন্দা বিভাগের এক চিঠিতে বলা হয়, ‘কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারী বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নের জন্য কক্সবাজারভিত্তিক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত জাতিসংঘসহ বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকাণ্ডের আড়ালে বিদেশি কূটনৈতিক ব্যক্তিদের ঘন ঘন পরিদর্শন এবং উন্নয়ন সহযোগিতার অজুহাতে অতি উৎসাহী কর্মতৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘২০২১ সাল থেকে অদ্যাবধি বিভিন্ন বিদেশি মিশনে নিয়োজিত কূটনৈতিক ব্যক্তিদের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদেশি সংস্থার কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে, তারা কক্সবাজার জেলার কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও টেকনাফ থানা এলাকার বিভিন্ন হোটেল ও বেসরকারি বাড়ি ভাড়া নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গোপন অনুসন্ধানে জানা যায় যে, কক্সবাজার জেলার হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্টের পার্কিং এরিয়াতে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের কিছু গাড়ি প্রায়ই পার্কিং অবস্থায় দেখা যায়।’
কক্সবাজার জেলার হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মার্কিন দূতাবাসের দুই বছরের জন্য গাড়ি পার্কিংয়ের চুক্তিও সম্পাদিত হয়েছে জানিয়ে চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘মার্কিন দূতাবাস সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিচ রিসোর্টে অবস্থান করে তাদের নিজেদের ও সহযোগী দাতা সংস্থার কর্মকাণ্ড তদারকি করেন। এ বিষয়ে হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায় যে, গত ১ মে তারিখে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের জেনারেল সার্ভিস অফিসার ফিলিপ জে ম্যাটিয়াস এবং কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুই বছরের জন্য হোটেলের গাড়ি পার্কিং এরিয়া ভাড়া নেওয়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘সাধারণত কূটনৈতিক মিশনের কার্যক্রম স্থায়ীভাবে ঢাকার বাইরে পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার তথা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন থাকতে হয়। ঢাকার বাইরে কূটনৈতিক মিশনের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে জেলা পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/দপ্তর থেকে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি এবং হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ কক্সবাজার জেলা পুলিশকে অবহিত করেননি।’
আরএ/
