‘রোহিঙ্গা সংকটের শুরু মিয়ানমারে, সমাধানও মিয়ানমারে’

রোহিঙ্গা সংকটের শুরু মিয়ানমারে, সমাধানও মিয়ানমারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) রোহিঙ্গা সংকটের ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘রোহিঙ্গা সঙ্কট: প্রত্যাবাসনের উপায়’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ।
রোহিঙ্গা সংকটকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে অভিহিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু আমাদের কোনো দ্বিপক্ষীয় বিষয় নয়, এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে মিয়ানমার এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি।
রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপত্তা ঝুঁকি শুধু বাংলাদেশ নয়, এই অঞ্চলেও পড়বে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের উপর আস্থা রাখতে পারছে না। রোহিঙ্গাদের আস্থা তৈরি করতে আসিয়ানকে ভূমিকা নিতে হবে।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, আশা করি ছোট গ্রুপ হলেও প্রত্যাবাসন শুরু হবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত নোয়েলিন হেইজার বলেন, আমি শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা ফিরতে চান। তবে তাদের এই প্রত্যাবাসন হতে হবে স্বেচ্ছায়, মর্যাদার ভিত্তিতে। আর সেই পরিস্থিতি মিয়ানমারকেই তৈরি করতে হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নানা পথ ও উপায় রয়েছে। বহুপক্ষীয় উদ্যোগ, ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, নিষেধাজ্ঞা দেওয়া, পৃথকীকরণ নীতি, ডিকাপলিং পলিসি, অর্থনৈতিক প্রণোদনা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে ঢাকায় দেশটির দূতাবাসের শরণার্থী বিষয়ক আঞ্চলিক সমন্বয়ক ম্যাকেঞ্জি রো বলেন, রোহিঙ্গাদের উপর যে নিপীড়ন ও নৃশংসতা হয়েছে, তার স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে হবে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জাপান সমর্থন করে জানিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, জাপান রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। রোহিঙ্গাদের দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসন চাই।
৫ বছরে কোনো রোহিঙ্গাকে পাঠানো সম্ভব হয়নি জানিয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, তাদের ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সমর্থন চাই।
বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আশ্রয় নিয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় এসব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী।
আরইউ/এসজি
