ফিরে দেখা-২০২১
নেতৃত্বগুণে আলোচনায় ছিলেন শেখ হাসিনা
করোনা মহামারির মধ্যে আরও একটি বছর বিদায় নিল। বিদায় নেওয়া বছর রেখে গেছে কিছু স্মরণীয় স্মৃতি। রাজনৈতিক অঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রধানরা যেখানে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন। সেখানে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি হলেও প্রতিনিয়ত নির্দেশনা দিয়ে প্রশাসন ও দলকে চাঙ্গা রেখেছিলেন।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের প্রতিষেধক টিকা প্রাপ্তিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশ যখন টালমাটাল তখন উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকল ষড়যন্ত্র ও ধোঁয়াশা দূর করে আলোর পথ দেখান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। একই বছর ১৬ মার্চ থেকে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর সাহসী এই পদক্ষেপ দেশের তরুণ সমাজকে সুরক্ষিত করে। চারদিকে যখন স্কুল খুলে দেওয়ার জোর দাবি ওঠে তখনও অনড় থাকেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করেই স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তও সব মহলে প্রশংসিত হয়। দীর্ঘ ৫৪৪ দিন বন্ধ থাকার পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর খোলা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর কিছু দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য ছিল আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে। তিনি বলেছিলেন, এক ইঞ্চি জায়গাও অনাবাদি রাখা যাবে না। করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে রক্ষার্থে সকলে মাস্ক পরিধান করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। তার এই নির্দেশনা সকল সরকারি বেসরকারি অফিস আদালতে বাধ্যতামূলক করা হয়। করোনাভাইরাসের প্রভাবে যখন সারাবিশ্বের শিল্পকারখানাগুলো অচল হয়ে পড়ছিল তখন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে দেশের শিল্প মালিকদের উজ্জীবিত করেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়ায় শিল্পখাত।
আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন
বিদায়ী বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্জনও ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সাহসী সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপগুলোর কারণে বিদায়ী বছরে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) দারিদ্র দূরীকরণ, পৃথিবীর সুরক্ষা ও সবার জন্য শান্তি সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণের সর্বজনীন আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’ দেওয়া হয়।
এ বছর উইটসা এমিনেন্ট পারসনস অ্যাওয়ার্ড ২০২১–এ ভূষিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কর্মসূচি প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে নেতৃত্বদান এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রীকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের ৮০টি দেশের সদস্যভুক্ত সংগঠন ‘ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্স’ তথ্যপ্রযুক্তির অলিম্পিক খ্যাত ‘উইটসা ২০২১’ পুরস্কার দিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে বিশ্বের অনেক নেতা সাড়া দেন। অনেকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ ঢাকায় আসেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। এ ছাড়া ঢাকায় আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই অনুষ্ঠানে চীন, জাপান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিশ্বের অনেক নেতা শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যন্য।
বিদায়ী বছরের শেষভাগে অর্থাৎ বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগদান করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এক বছরে এত সংখ্যক বিশ্ব নেতার আগমন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল করে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব গুণে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে শেখ হাসিনার নামও উচ্চারিত হয়।
এসএম/টিটি/