ড্যাপ চূড়ান্ত, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর গেজেট: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী এবং ড্যাপ রিভিউ সংক্রান্ত গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির আহ্বায়ক মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) চূড়ান্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের পর গেজেট প্রকাশ করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ড্যাপ চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে রিভিউ সংক্রান্ত গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনো পক্ষকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে ড্যাপ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। কেউ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা কারো প্রতি যদি অবিচার করা হয়, তাহলে তা অবশ্যই বিবেচনায় নেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, ড্যাপ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে রিভিউ সংক্রান্ত গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পরই গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই ড্যাপ চূড়ান্ত করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। আমরা আমাদের কথা রাখতে পেরেছি। এটি চূড়ান্ত হওয়ার পরে প্রতি তিন মাস পর পর রিভিউ কমিটির মিটিং হবে। সেই মিটিংয়ে সব আপত্তি ও মতামত পর্যালোচনা করা হবে। কোথাও যদি সংশোধনের প্রয়োজন পড়ে সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা করা হবে।
এলাকাভিত্তিক জনঘনত্ব ও বেজ ফার নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, কোনো এলাকাভিত্তিক ভবনের নির্দিষ্ট উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়নি। রাস্তা প্রশস্তকরণ ও সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ার সঙ্গে এলাকাভিত্তিক জনঘনত্ব ও বেজ ফারের মান পুনঃনির্ধারণ করা হবে। ছয় তলার বেশি করা যাবে এ কথা সঠিক নয়। ভবনের উচ্চতা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কোনো সুযোগ নেই।
সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে ড্যাপ চূড়ান্ত করা হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সব পক্ষের সঙ্গে একাধিকবার বসে আলোচনা করে তাদের পরামর্শ ও আপত্তি সবগুলোই আমলে নিয়ে খসড়া ড্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের আরো যদি কোনো চাহিদা থাকে এবং যেখানে দ্বিমত আছে বা হবে সেগুলো সমাধান করা হবে। সব ধরনের নাগরিক সুবিধা রেখে ড্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। এরপরও যদি সংশোধনের প্রয়োজন হয় তাহলে তা করা হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ঢাকা নগরীকে আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন ও বাসযোগ্য করতে এবং সব ধরনের নাগরিক সেবা নিশ্চিত করে ড্যাপ চূড়ান্ত করতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম করছি। এ যাত্রায় আমরা নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থাপত্যবিদ, পরিবেশবিদ, সুশীল সমাজসহ সব পক্ষের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করেছি।
এ ছাড়া, সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন স্তরে মতবিনিময় সভা এবং জনসাধারণের মতামত আপত্তি ও পরামর্শের জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর গণশুনানির মাধ্যমে ড্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। ড্যাপ চূড়ান্ত করার জন্য জাতীয় সেমিনারের আয়োজনও করা হয়।
যেকোনো অবকাঠামো পরিকল্পিতভাবে করতে হবে। নাগরিককে তাদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে ঢাকায় অপরিকল্পিতভাবে আর অবকাঠামো নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। বসবাসের জন্য হুমকি হয় এমন কোনো কিছু করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন আহমেদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, ভূমি সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য দেন। এসময় রাজউক চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম সভায় খসড়া ড্যাপের ওপর একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
এনএইচবি/এসএন