ফিরে দেখা ২০২১
বৈদেশিক কর্মসংস্থানে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর

বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর ২০২১। করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্রমবাজারগুলো বিদায়ী বছরে স্বাভাবিক হয়েছে।
দীর্ঘ তিন বছর বন্ধ থাকার পর খুলেছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। দুদেশের মধ্যে ডিসেম্বরে চুক্তিও সই হয়েছে। জানুয়ারি থেকেই দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মী পাঠানো যাবে বলে আশা করছে সরকার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার কারণে প্রায় দেড়বছর বন্ধই ছিল শ্রমবাজার। তারপর আস্তে আস্তে বাজারগুলো খুলতে শুরু করে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব এখন রমরমা। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতেও কর্মী পাঠানো শুরু হয়েছে।
সূত্র: জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুারো
বাংলাদেশ জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরের মধ্যে মহামারির করোনার কারণে ২০১৯ ও ২০২০ সালে সবচেয়ে কম কর্মী পাঠানো গেছে। ২০২০ সালে দুই লাখ ১৭ হাজার ৬৬৯ জন কর্মী পাঠানো সম্ভব হলেও ২০২১ সালের প্রথম ১০ মাসেই এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৮৩ হাজার ৩২ জনে।
এছাড়া চলতি বছরেই নতুন কিছু শ্রমবাজার তৈরি হয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য। মধ্য এশিয়া, পূর্ব ইউরোপ ও আফ্রিকার দেশগুলোতে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে রোমানিয়ায় ১০ হাজার কর্মী প্রেরণের বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়েছে।
এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়াতেও বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মীর বাজার সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির বড় কোম্পানি স্যামসাং, দাইয়ু, হুন্দাইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশিরা কর্মীরা কাজ করছেন। হুন্দাই কর্মী নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে প্রস্তাবও পাঠিয়েছে।
সূত্র: জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুারো
১৭২টি দেশে এক কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বিশ্বব্যাপী কোভিড মহামারীর কারণে অভিবাসী ব্যবস্থাপনায় সমস্যা হয়েছে। যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। করোনার সময় আমাদের প্রবাসীরা যেসব সমস্যা পড়েছিলেন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। আমি নিজে অভিবাসী গ্রহণকারী দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি।
তবে এই শ্রমবাজার ধরে রাখতে দক্ষ শ্রমিক বাড়াতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সরকারের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত এক কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশী কর্মীর মধ্যে দক্ষ কর্মী মাত্র দেড় ভাগ। দক্ষ কর্মী যদি ২০ ভাগ করা যায় তাহলে প্রবাসী আর ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র আসছে জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থানের হার কোভিড পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরেছে। শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিকদের নানামুখী প্রশিক্ষণের উদ্যোগও চলমান রয়েছে।
আরেইউ/জেডএকে
