ইসি গঠনে আইন করা উচিত, মন্তব্য আইনমন্ত্রীর
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইন করা উচিত আমিও বলি। আইন হবে। কিন্তু যদি ওই করোনার সময়ে সংসদ বসে, তবে আমরা সব সংসদ সদস্যদের ডাকি না। আমাকে বলা হয়েছিল, এই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ব্যাপারে একটি অর্ডিন্যান্স করে দেন। আমি বলেছি, সেটা সম্ভব না।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ রকম একটা আইন সংসদকে পাশ কাটিয়ে করতে আমি রাজি না।’
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সভায় আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি মন্ত্রী আরও বলেন, আগামী নির্বাচন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি সংলাপ শুরু করেছেন। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। আইনের ব্যাপারে একটা কথা হচ্ছে, ১৫ ফেব্রুয়ারি এই নির্বাচন কমিশনের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। সংসদ যখন একটা আইন করতে পারবে না, তখন সার্চ কমিটি এই কাজ করছে। সার্চ কমিটিতে ছয়জনের মধ্যে চার সদস্য সাংবিধানিক পোস্টধারী, বাকি দুজন সিভিল সোসাইটির। এখানে রাজনৈতিক দলের কেউ নেই।
আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের অবস্থান কিন্তু ঘোলাটে না। সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। আইন করার কথা বলা আছে। রাষ্ট্রপতি গত দুবার সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্তে এসেছিলেন। সিদ্ধান্তটা হচ্ছে, একটা সার্চ কমিটি গঠন হবে। সেই কমিটিতে নাম দেওয়া যাবে। নামগুলোর মধ্যে ১০টি নাম সুপারিশ করে কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। রাষ্ট্রপতি পাঁচজনকে নির্বাচিত করবেন, একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বাকি চারজন নির্বাচন কমিশনার। এটা করার পর একটি গেজেট হয়েছে। এর পরে দুটি নির্বাচন হয়েছে। যদিও এটা আইন না, তবু এটার ‘ফোর্স অব ল’ আছে।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগে কোনো প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুটি জিনিসে রাষ্ট্রপতিকে কাউকে জিজ্ঞেস করতে হয় না, তিনি করতে পারেন। এটি তার সর্বময় ক্ষমতা। একটা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা, আরেকটা প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি হচ্ছি সরকারের একজন মন্ত্রী। যে ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির, সেটা কি আমি জানি? আমি জানি না। রাষ্ট্রপতি নিশ্চয়ই তার সুবিবেচনায় যোগ্য মনে করে সংবিধানের পরিধির মধ্যে তার যে ক্ষমতা, তা ব্যবহার করবেন।’
হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগে যারা বিচারপতি আছেন, তারা প্রত্যেকে প্রধান বিচারপতি হওয়ার যোগ্য, যোগ্যতা রাখেন।
দেশে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি স্বীকার করি যে এই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট তৈরির পর এর অপব্যবহার ও দুর্ব্যবহার হয়েছিল। এটি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া যদি বলেন, আপনারা আমাকে যে শর্তে ছেড়ে দিয়েছেন, এটা আমি মানি না, আমাকে জেলে নিয়ে যান, আমি আবার দরখাস্ত করব। তখন উনি আবার দরখাস্ত করতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগের দরখাস্তের বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারব না। ফৌজদারি কার্যবিধিতে কোথাও এমন বিধান নেই।’
‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় কাউকে বিদেশ যেতে দেওয়া যাবে না, এটা আমি কখনো বলিনি। একবার নিষ্পত্তিকৃত কোনো দরখাস্ত আবার পুনর্বিবেচনার কোনো সুযোগ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় নেই,’যোগ করেন তিনি।
এমএমএ/