লঞ্চ দুর্ঘটনা: ঝালকাঠিতে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঝালকাঠির লঞ্চ দুর্ঘটনায় লঞ্চ মালিক ও মাস্টারসহ মোট ২৮ জনের নামে মামলা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানি ও নিখোঁজের ঘটনায় এ মামলা দায়ের কারা হয়।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান।
খলিলুর রহমান জানান, ঢাকার পেমরা থানাধীন এক ব্যবসায়ী মনির হোসেন ঝালকাঠির সদর থানায় লঞ্চের মালিক ও মাস্টারসহ ৮ জনকে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেছেন। ৩০৪ ধারায় মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে।
মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামিরা হলেন, মেসার্স আল আরাফ এন্ড কোং ও এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হাম জালাল শেখ, লঞ্চের মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার, মো. খলিল, লঞ্চের চালক মো. মাছুম, কালাম, লঞ্চের সুপারভাইজার মো. আনোয়ার, লঞ্চের সুকানী আহসান ও কেরানী মো. কামরুল।
বাদী মামলায় উল্লেখ করেছেন, তার বোন তাসলিমা আক্তার (৩০) ও তার দুই মেয়ে সুমাইয়া আক্তার মীম (১৫), সুমনা আক্তার তানিসা (১০) এবং ছোট ভাই জনির ছেলে জোনায়েদ ইসলাম বায়জিদ (৭) গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে বরগুনায় তার স্বামী সুমন সরদারের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। বাদী তাদের ঢাকার সদরঘাটে ওই লঞ্চে উঠিয়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান। সেই রাত ৩ টা ১০ মিনিটের দিকে বোন তাসলিমা তাকে ফোন করে জানান, ৩ টা ৫ মিনিটের দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চটির ইঞ্জিনরুমে বিকট শব্দ হয়ে আগুন লেগে যায়। পরে ইঞ্জিন রুমের আগুন গোটা লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, তিনি ঘটনাস্থলে পৌছে তার বোন, দুই ভাগনী ও ভাতিজাকে খুঁজতে থাকেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। সে সময় উদ্ধার হওয়া ৩৬টি মরদেহের মধ্যেও তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করেন বাদী। তবে ১২ টি মরদেহ শনাক্তের যোগ্য ছিলো বলে মামলায় তিনি উল্লেখ করেন।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন এখন পর্যন্ত বাদীর বোন, দুই ভাগনী ও ভাতিজা নিঁখোজ রয়েছেন।
সর্বশেষ ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনার পঞ্চমদিনে আরও দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রথম মৃতদেহটি মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে উদ্ধার করা হয়। দ্বিতীয় মরদেহটি উদ্ধার করা হয় বিকালে। মৃতদেহ দুটি নদীতে ভাসতে দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে ডুবুরিদল মরদেহ দুটি উদ্ধার করে। এই নিয়ে উদ্ধারকৃত মরদেহের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৩।
এসও/এএ্রন