লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: ঢাকার বার্ন ইউনিটে ভর্তি বেড়ে ২০
বরগুনায় লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে কয়েক দফায় ২০ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত ভর্তির এ হিসাব জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে আসাদের মধ্যে হাবিব খান (৪৫) শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টায় মারা গেছেন। নিহত হাবিব খান বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
নিহতের স্বজন মোশারফ হোসেন জানান, ঢাকায় ছেলে শাহিন খানের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন হাবিব। বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়ি ফিরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। এ সময় সঙ্গে তার স্ত্রী. শাহারা বেগমও (৩৫) ছিলেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শনিবার সকাল পর্যন্ত ২০ জনকে এখানে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজন চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এখন ১৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর আগে বরগুনার ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে চলন্ত লঞ্চে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ শিশুসহ ৮ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ এন্ড প্লাষ্টিক সার্জারী বিভাগে ভর্তি করা হয়। দগ্ধরা হলেন–জেসমিন আক্তার (২৯), তার ছেলে তানিম হাসান (০৮), বাচ্চু মিয়া (৫০) ও তার মেয়ে সাদিয়া (২০)। পরে সড়ক পথে দুজন এবং র্যাবের হেলিকপ্টারে আরও দুজনকে আনা হয়।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে তিনটা ও সন্ধ্যায় পৃথকভাবে দগ্ধ অবস্থায় আটজনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।
দগ্ধ জেসমিন আক্তারের খালু আবুল হোসেন জানান, জেসমিনের স্বামী খলিলুর রহমান বরগুনায় কাপড়ের ব্যবসা করেন। বৃহস্পতিবার রাতে ওই লঞ্চে জেসমিন ছেলে তানিম ও মেয়ে মাহিনুরকে নিয়ে স্বামীর কাছে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঘটনাটি ঘটে।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলেই মাহিনুর আগুনে পুড়ে মারা যায়। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে জেসমিন কেরানীগঞ্জের শুবাড্ডা এলাকায় বসবাস করেন বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল জানান, লঞ্চে আগুনের ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে জেসমিন আক্তারের শরীরের ১২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে ও তার ছেলে তানিম হাসানের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক ও মায়ের অবস্থা শঙ্কামুক্ত নন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাদের দুজনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দুজনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি।
এ ছাড়া বাচ্চু মিয়ার শরীরের ৪ শতাংশ, তার মেয়ে ইসরাত জাহানের শরীরের ২০ শতাংশ এবং শাহিনুর বেগমের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের মধ্যে শাহিনুর বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। নিখোঁজ হন অন্তত ৭০ জন।
এনএইচ/এসএ/